প্রতীকী ছবি।
আপনার ইনস্টাগ্রামে অ্যাকাউন্ট আছে? তা হলে এখনই সতর্ক হন। কারণ সাইবার অপরাধীদের নতুন কৌশলের শিকার হতে পারেন আপনি। যার ধরন দেখে সাইবার বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা, নতুন রূপে ফিরে এসেছে ‘জামতাড়া গ্যাং’।
নানা ধরনের সাইবার অপরাধের জন্য কুখ্যাত জামতাড়া গ্যাং। কিন্তু এ বার তাদেরও অপরাধের ‘মিউটেশন’ হচ্ছে। ইনস্টা গ্রাহকদের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেল করা হচ্ছে। লক্ষ লক্ষ টাকা দাবি করছে। এমন পরিস্থিতির শিকার হয়ে অনেকেই নিজের সম্মান বাঁচাতে সেই টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অভিযোগ বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশের কাছে জমা হয়েছে। এবং ঘটনাচক্রে, প্রত্যেকটি ঘটনার সঙ্গে কোনও না কোনও মিল পাওয়া যাচ্ছে বলে দাবি পুলিশের। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ এবং রাজস্থানের ভরতপুর, মথুরা এবং মেওয়াট থেকে এই ধরনের অপরাধমূলক কাজ পরিচালনা করা হচ্ছে।
কী ভাবে ফাঁদে ফেলছে এই নয়া জামতাড়া গ্যাং?
সম্প্রতি দিল্লি পুলিশের কাছে এক অভিযোগকারী জানিয়েছেন, প্রথমে ইনস্টাগ্রামে তাঁর কাছে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট আসে। সেটি এক মহিলার অ্যাকাউন্ট থেকেই পাঠানো হয়। তার পর পরই ওই মহিলা তাঁকে ডিরেক্ট মেসেজ (ডিএম)-এ হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চান। অভিযোগকারী পুলিশকে বলেন, ‘‘এক জন অপরিচিত সরাসরি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চাওয়ায় বিষয়টা একটু সন্দেহজনক ঠেকে। মেসেজের উত্তর না দেওয়ায়, কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই মহিলা ইনস্টাগ্রামে ভিডিয়ো কল করেন। অনবরত সাত-আট বার কল করেছে। কিন্তু বিষয়টা আমল দিইনি প্রথমে। বার বার বিরক্ত করায় শেষ বার কলটা রিসিভ করি। সেটি রিসিভ করতেই ফোনের ও পারে আবছায়ায় দেখতে পাই কোনও মহিলা নগ্ন অবস্থায় কিছু করছেন! বিষয়টি ঠিক কী, তা বুঝে উঠতেই ১৫ সেকেন্ড সময় লেগে গিয়েছিল। তার পরই ফোনটা কেটে দিই।”
এ পর্যন্ত সব ঠিক ছিল। কিন্তু ফোনটা কাটার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আমার পরিচিতরা একটি ভিডিয়ো পাঠিয়ে আমাকে ফোন মেসেজ করতে থাকেন। সবাই একই ধরনের ভিডিয়ো পাঠিয়েছিলেন। ভিডিয়ো খুলতেই চোখ কপালে ওঠার অবস্থা হয়। জানিয়েছেন অভিযোগকারী। তিনি বলেন, “ভিডিয়ো কলের ওই সময়ের মধ্যে অপরাধীরা আমার ছবি নিয়ে সেটা সুপারইম্পোজ করে অন্য কারও দেহের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে ইন্টারনেটে ছেড়ে দিয়েছে! ভিডিয়োটা এমন ভাবে বানানো হয়েছে যে দেখে মনে হচ্ছিল আমি কারও সঙ্গে যৌনালাপ করছি।’’
গত জুলাইয়ে আগরা পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখার আধিকারিকরা মেওয়াট থেকে তিন জনকে গ্রেফতার করে। যাঁরা এমনই ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে বহু মানুষকে ব্ল্যাকমেল করেছেন বলে অভিযোগ। সম্প্রতি যে অভিযোগগুলি সামনে এসেছে, তার সঙ্গে এই দলের যোগ আছে কি না খতিয়ে দেখছে দিল্লি পুলিশ।