মণিপুর হিংসার একটি ছবি। —ফাইল চিত্র।
আপাত শান্ত মণিপুরে নতুন করে হিংসা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে সে রাজ্যের বিজেপি সরকার। তাই মঙ্গলবার রাতে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের নেতৃত্বে নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি বৈঠক হওয়ার পরেই রাজ্যের বেশ কিছু অঞ্চলে কার্ফু শিথিল করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এল সরকার। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ওই অঞ্চলগুলিতে কার্ফু শিথিল করা হয়েছিল। কিন্তু নিরাপত্তার বিষয়টি পর্যালোচনা করার পরেই কার্ফু শিথিল করার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়। অন্য দিকে, বুধবার, বাদল অধিবেশন শুরুর ঠিক আগের দিন সংসদে মণিপুর নিয়ে আলোচনায় রাজি হল কেন্দ্রীয় সরকার।
এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রের সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী জানান, মণিপুরে গত দু’মাস ধরে চলা হিংসার সব কিছু নিয়ে আলোচনায় রাজি সরকার। সরকার এবং সরকারের প্রধান হিসাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কেন মণিপুর হিংসা নিয়ে নীরব রয়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বিরোধী দলগুলি। অন্য দিকে, বুধবারই মণিপুরের একটি সংগঠন মিছিলের ডাক দিয়েছে। ইম্ফল বাজারের মহিলা ব্যবসায়ীদের নিয়ে তৈরি ওই সংগঠন রাজ্যে এনআরসির দাবি তুলেছে। মিছিল থেকে নতুন করে অশান্তি ছড়িয়ে পড়তে পারে, এমনটা আশঙ্কা করেই মূলত কুকি এবং মেইতেই অধ্যুষিত জেলাগুলিতে কার্ফু আবারও আঁটসাঁট করা হচ্ছে।
মঙ্গলবারও ইম্ফল পশ্চিম জেলায় এক আইপিএস আধিকারিকের গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এই ঘটনায় মোট ৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখনও উত্তপ্ত রয়েছে রাজ্যের কাংপোকপি, বিষ্ণুপুর, চূড়াচাঁদপুর জেলার বিস্তীর্ণ অংশ। এই অবস্থায় নতুন করে কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না সে রাজ্যের সরকার। প্রসঙ্গত, মণিপুরের দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা জাতিহিংসায় নিহতের সংখ্যা দেড়শো ছুঁতে চলছে। ঘরছাড়া প্রায় ৫০ হাজার মানুষ! কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদল বৈঠক করলেও তার পরেও হিংসার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। গত ৩ মে মণিপুরের জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর বিক্ষোভ-মিছিল ঘিরে উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে।