ছবি সংগৃহীত
গত মার্চে, লকডাউন শুরুর ঠিক আগে নদিয়ার কালীগঞ্জের বাড়ি থেকে কাশ্মীরে কর্মস্থলে ফিরেছিলেন তিনি। কনস্টেবল থেকে তাঁর হাবিলদার হওয়ার কথাবার্তা চলছে বলে ফোনে জানিয়েছিলেন স্ত্রীকে।
অথচ সোমবার বাড়িতে খবর এল, শ্রীনগরের কাছেই পান্থচকে আত্মঘাতী হয়েছেন সিআরপিএফ-এর ২৯ নম্বর ব্যাটেলিয়নের সেই কনস্টেবল বিশ্বজিৎ দত্ত (৩৭)। সিআরপিএফ সূত্রে জানানো হয়েছে, সোমবার সকালে শৌচাগারে ঢুকে নিজের সার্ভিস রাইফেল থেকে মাথায় গুলি করেন তিনি। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। পান্থচক পুলিশ পোস্টও কার্যত একই কথা জানিয়েছে। একটি মামলা রুজু করে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। বিশ্বজিতের পরিবারের লোকজন কিন্তু তাঁর আত্মহত্যার কথা মানতে রাজি নয়। তাঁর স্ত্রী পম্পা দত্ত বলেন, “বারবার জানতে চাওয়া হচ্ছে, বাড়িতে কোনও সমস্যা ছিল কি না। আমাদের মধ্যে কোনও সমস্যা ছিল না। রবিবার রাতেও কথা হয়েছে।’’ বিশ্বজিতের মেজদা সুবল দত্ত দাবি করেন, “ভাই এই রকম কাজ করতে পারে না। এর পিছনে চক্রান্ত রয়েছে।’’
কালীগঞ্জ ব্লকের পালিতবেঘিয়া পঞ্চায়েত এলাকার খোর্দ বেঘিয়া গ্রামে বাড়ি বিশ্বজিৎদের। ২০০৪ সালে তিনি সিআরপিএফে চাকরি পান। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছোট, তাঁর বড়দাও সেনায় কাজ করতেন। বাকি তিন দাদা চাষবাস করেন। বছর দশেক আগে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের মেয়ে পম্পার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের সাত বছরের একটি ছেলে এবং দু’বছরের মেয়ে রয়েছে। সোমবার দুপুরে বাড়ির উঠোনেই ছোট্ট মেয়েকে কোলে নিয়ে বসে ছিলেন পম্পা। অঝোরে কেঁদে চলেছেন বিশ্বজিতের বাবা অনিল দত্ত। ঘরে বিছানাতেই ছেলের ছবি জড়িয়ে ধরে বসে আছেন শয্যাশায়ী মা গঙ্গা। পম্পা দাবি করেন, “সিআরপিএফ একটা ছবি পাঠিয়েছে, ও বাথরুমে মুখ উপুড় করে পড়ে আছে। গত রাতে কথা বলার সময় গলাটা ভার-ভার লাগছিল। কী হয়েছে জিজ্ঞাসা করতে বলল, ‘কিছু না’। সকালে ফোন এল, গুলি লেগেছে!”
আরও পড়ুন: দেশীয় টিকা বাজারে আসতে ২০২০-পার