CRPF

শেষকৃত্যের অনুমতি দিলেন না জওয়ানের স্ত্রী

শ্রীনগরে সিআরপিএফের মুখপাত্র পঙ্কজ সিংহ জানান, আজ সকালে হঠাৎ রামবাগের গ্রুপ সেন্টারে গুলির আওয়াজ শোনা যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীনগর ও বাদুড়িয়া শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২০ ০২:০৫
Share:

পিন্টু মণ্ডল

বাহিনীর প্রতিষ্ঠা দিবসেই কাশ্মীরের শ্রীনগরে গুলিতে মৃত্যু হল এক বাঙালি সিআরপিএফ জওয়ানের। অস্বস্তি বাড়িয়ে স্বামীর শেষকৃত্যের অনুমতিতে স্বাক্ষর করতে রাজি হলেন না পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার বাসিন্দা জওয়ান পিন্টু মণ্ডলের স্ত্রী। তাঁর দাবি, স্বামীর মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তদন্ত প্রয়োজন।

Advertisement

শ্রীনগরে সিআরপিএফের মুখপাত্র পঙ্কজ সিংহ জানান, আজ সকালে হঠাৎ রামবাগের গ্রুপ সেন্টারে গুলির আওয়াজ শোনা যায়। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে জানা যায়, সিআরপিএফ জওয়ান পিন্টু মণ্ডল নিজের সার্ভিস রাইফেল থেকে গুলি ছুড়ে আত্মহত্যা করেছেন। কেন ওই জওয়ান আত্মঘাতী হয়েছেন তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে সিআরপিএফ। এ নিয়ে গত আট দিনে ওই বাহিনীর দু’জন কর্মী আত্মহত্যা করলেন। ১৯ জুলাই শ্রীনগরের পাঠান চকে মোতায়েন সিআরপিএফের সাব ইনস্পেক্টর বিশ্বজিৎ দত্তও আত্মহত্যা করেন। বারবার এমন ঘটনা ঘটায় প্রশ্ন উঠছে।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সিআরপিএফ কর্তারা জানান, করোনা অতিমারিতে চাপ বেড়েছে জওয়ান-অফিসারদের উপরে। ইউনিটের মধ্যেও কঠোর ভাবে পারস্পরিক দূরত্ব বিধি মানা হচ্ছে। আবার মার্চ মাস থেকে ছুটি নিয়ে বাড়িও যেতে পারছেন না তাঁরা। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে এমন ঘটনা ঘটাচ্ছেন। বিশ্বজিৎ দত্তের আত্মহত্যার তিন দিন আগে শ্রীনগরেরই ডালগেট এলাকায় আত্মঘাতী হন আর এক সিআরপিএফ জওয়ান। ৬ জুলাই কুলগামে বচসার জেরে একে অপরকে গুলি করেন সশস্ত্র সীমা বলের দুই জওয়ান। দু’জনেই নিহত হন। মার্চ ও মে মাসে আত্মঘাতী হন আরও চার জন সিআরপিএফ জওয়ান। আত্মঘাতী এক জওয়ানের সুইসাইড নোটে লেখা ছিল, ‘‘আমি করোনা পজ়িটিভ হতে পারি। মৃত্যুই শ্রেয়।’’

Advertisement

এক অফিসারের কথায়, ‘‘প্রত্যেক মৃত্যুর পরেই তদন্ত হয়। তবে অতিমারির ফলে বাড়ি যেতে না পারাটা চাপ বাড়ার বড় কারণ। বাড়িতে পরিবার-পরিজনও জওয়ানদের জন্য উদ্বিগ্ন থাকেন। তাতেও চাপ বাড়ে।’’ তিনি জানিয়েছেন, রোজ সকাল-বিকেলে জওয়ানদের কাউন্সেলিং করা হয়। কিন্তু অতিমারির মধ্যে তাতেও কাজ হচ্ছে না।

আজ সন্ধ্যায় বাদুড়িয়া থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে পিন্টুবাবুর বাড়ি যান সিআরপিএফ অফিসারেরা। কিন্তু পিন্টুবাবুর স্ত্রী রেবাদাসি মণ্ডল বলেন, ‘‘এক বার বলা হচ্ছে করোনায় আমার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। এক বার বলা হচ্ছে উনি আত্মঘাতী হয়েছেন। বিষয়টি অস্পষ্ট। তাই আমরা এই মৃত্যুর আসল কারণ জানতে তদন্ত চেয়েছি। শেষকৃত্যের অনুমতিপত্রে সই করিনি।’’ অফিসারেরা ফিরে যান। পিন্টুবাবুর ভাইয়ের দাবি, তাঁর দাদার শরীরে পাঁচটি গুলি লেগেছে বলে জানিয়েছে বাহিনী। তার মধ্যে একটি লেগেছে পায়ের পিছনে। তাঁর প্রশ্ন, নিজের রাইফেল থেকে গুলি চালালে পায়ের পিছনে গুলি লাগল কী ভাবে? এ নিয়ে পুলিশ বা সিআরপিএফ কোনও মন্তব্য করেনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement