ছবি: রয়টার্স।
ডিসেম্বরে ছাড়পত্র পেয়ে গেলেও ভারতে তৈরি করে বিলি-বণ্টন করতে করতে আগামী বছরের মাঝামাঝি পেরিয়ে যেতে পারে অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড-১৯ প্রতিষেধক। ভারতে যে সংস্থা ওই টিকা তৈরি করবে, সেই সিরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান আদর পুনাওয়ালা বুধবার একটি সংবাদ-চ্যানেলকে এই খবর জানিয়েছেন। পুনাওয়ালার কথায়, খুব তাড়াতাড়ি হলে এ বছর ডিসেম্বরে ট্রায়াল পর্ব পেরিয়ে মানবদেহে দেওয়ার ছাড়পত্র পেতে পারে এই টিকা। তার পরে ভারতে তা তৈরি করে মানুষের কাছে পৌঁছতে আগামী বছরের দ্বিতীয় বা তৃতীয় ত্রৈমাসিক লেগে যেতে পারে। পুনাওয়ালা জানিয়েছেন, প্রথমে ১০ কোটি টিকা তৈরি করবেন তাঁরা। তার পরে ধাপে ধাপে আরও।
এ দিকে, গত কয়েক দিন ধরেই সংক্রমণের মাত্রা চড়চড়িয়ে বাড়ছে রাজধানী ও তার আশপাশের এলাকায়। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে দিল্লিতে একটু একটু করে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বায়ুদূষণ। শীতের মরসুমের কুয়াশা ঢাকা রাজধানীর চেনা ছবিটা ফিরলে কি করোনা সংক্রমণ আরও বাড়বে? প্রশ্নটা উঠছিলই। আজ আইসিএমআরের তরফে সেই ইঙ্গিতই দেওয়া হয়েছে। দূষণ বাড়লে কোভিড-১৯ সংক্রমণ তো বটেই, মৃত্যুর সম্ভাবনাও এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে যায় বলে জানিয়েছেন সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল বলরাম ভার্গব।
আজ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন ভার্গব। সেখানেই তিনি জানিয়েছেন, ইউরোপ এবং আমেরিকার বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বায়ুদূষণের সঙ্গে কোভিডে মৃত্যুর সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। ওই সব দেশে লকডাউনের কড়াকড়ির আগে ও পরে করা কয়েকটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, দূষিত এলাকায় মৃত্যুর হার অনেকটাই বেশি। ভারতে শীতে বিভিন্ন শহরে দূষণের মাত্রা বাড়লে মৃত্যুহার বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দিল্লি ইতিমধ্যেই ফল ভুগতে শুরু করেছে। গত কয়েক দিন রাজধানীর ‘এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স’ ছিল খুব খারাপের দিকে। আগামী দু’দিনে দিল্লিতে দূষণের মাত্রা আরও বাড়বে বলে জানিয়ে রেখেছেন আবহবিদেরা।
আরও পড়ুন: আরোগ্য অ্যাপ নিয়ে কিছু ‘জানে না’ মন্ত্রক
এই পরিস্থিতিতে মাস্ক পরাই একমাত্র পরিত্রাণের পথ বলে জানিয়েছেন ভার্গব। তাঁর বক্তব্য, সস্তায় সহজলভ্য এই বস্তুটিই পারে দূষণ এবং মৃত্যুর হাত থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করতে। মাস্ক না পরে বাড়ির বাইরে পা রাখা রাখলে বিপদ আরও বাড়বে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন ভার্গব।
দিল্লিতে সংক্রমণ মাত্রা বাড়লেও গত কয়েক দিনের মতো গোটা দেশে গত চব্বিশ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণের হার নিম্নমুখী। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, এক দিনে ৪৩,৮৯৩ জন নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তবে সব মিলিয়ে সংক্রমিতের মোট সংখ্যাটা প্রায় ৮০ লক্ষ ছুঁইছুঁই। যদিও গত চব্বিশ ঘণ্টায় মৃত্যুর সংখ্যাও নিম্নমুখী। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় গোটা দেশে ৫০৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার একটা বড় অংশ মহারাষ্ট্রের। বাকি রাজ্যগুলির মধ্যে উপরের দিকে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি এবং কর্নাটকের নাম। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানাচ্ছে, গোটা দেশে মৃত্যুর ৭০ শতাংশ কারণই কোমর্বিডিটি।। সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার হার যেখানে ৯০.৮৫ শতাংশ, মৃত্যুর হার সেখানে ১.৫০ শতাংশ।
আরও পড়ুন: দেশে করোনা আবহে প্রথম ভোটে উঠল স্বাস্থ্যবিধি ভাঙার অভিযোগ
আরও পড়ুন: ফেসবুকে কি ফের এক ‘বিজেপিপন্থী’