CPM

CPM: সিপিএম সংগঠন দুর্বল নানা রাজ্যেই, কেরলের জন্য পাল্টা প্রচার

কেন্দ্রীয় কমিটির আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এ বার অবশ্য অনেকটা জায়গা পেয়েছে বাংলা। বীরভূমের ডেউচা-পাঁচামিতে বেসরকারি খনি প্রকল্প বাতিল, আনিস খানের মৃত্যুর বিচারের দাবি এবং রামপুরহাটের ‘গণহত্যা’র কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছেন সীতারাম ইয়েচুরি, কারাটেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২২ ০৬:৫১
Share:

দিল্লিতে হরকিষেণ সিংহ সুরজিৎ ভবনে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক।

বাংলায় সংগঠনের হাল উদ্বেগজনক, আগেই মেনে নিয়েছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। এ বার ত্রিপুরা, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা-সহ দলের নিরিখে অন্য বেশ কিছু বড় রাজ্যেও সংগঠনের চেহারা নিয়ে চিন্তায় সিপিএম। বিভিন্ন রাজ্যেই সাম্প্রতিক কালে দলের সদস্য-সংখ্যা কমেছে। ব্যতিক্রম তার মধ্যে কেরল। দক্ষিণী যে রাজ্যে প্রথা ভেঙে বামেরা টানা দু’বার ক্ষমতায় ফিরেছে, সেই রাজ্যে সংগঠন এখনও তুলনায় টানটান। কেরলের বাম সরকারকে ‘বিড়ম্বনা’র হাত থেকে রক্ষা করতে ‘সিলভার লাইন’ প্রকল্প নিয়ে জাতীয় স্তরে প্রচারে নামার সিদ্ধান্তও নিয়েছে সিপিএম।

Advertisement

কেরলের কান্নুরে সিপিএমের ২৩তম পার্টি কংগ্রেস হবে আগামী ৬ থেকে ১০ এপ্রিল। পার্টি কংগ্রেসে পেশ করার জন্য দলের পলিটবুরোর তরফে সাংগঠনিক রিপোর্ট তৈরি করেছেন সিপিএমের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট। পলিটবুরোয় পাশ হওয়ার পরে দিল্লিতে দু'দিনের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে ওই সাংগঠনিক খসড়া রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কেন্দ্রে বিজেপির ‘আগ্রাসী জমানা’য় কী ভাবে বাম সংগঠন নানা স্তরে প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে পড়েছে, বৈঠকে তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিভিন্ন রাজ্যের নেতারা। ত্রিপুরার নেতারা জানিয়েছেন, উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে দলীয় কার্যালয় ভেঙে দেওয়া-সহ নানা ‘ফ্যাসিবাদী কায়দা’য় বামেদের উপরে আক্রমণ চালাচ্ছে শাসক বিজেপি। বাংলার শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, মৃদুল দে, রবীন দেব, রেখা গোস্বামী, সুজন চক্রবর্তীরাও বলেছেন, এই রাজ্যে গণতান্ত্রিক পরিবেশই নেই। তবে প্রতিকূল পরিস্থিতি এবং ভাঙা সংগঠন নিয়েও জনস্বার্থে রাস্তায় নেমে আন্দোলনের চেষ্টা জারি আছে। কলকাতায় সদ্যসমাপ্ত রাজ্য সম্মেলনে সিপিএমের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক প্রতিবেদনেই বলা হয়েছিল, গত চার বছরে এ রাজ্যে দলের সদস্য কমেছে প্রায় ২৪ হাজার। যাঁরা সদস্যপদ পুননর্বীকরণ করেছেন, তাঁদেরও অনেকে কার্যক্ষেত্রে ‘নিষ্ক্রিয়’।

যে রাজ্যে পার্টি কংগ্রেসের আয়োজন হচ্ছে, সেই কেরলে সংগঠনের অবস্থা অবশ্য তুলনায় ভাল। তবে সেখানেও দল পরিচালনা নিয়ে সংগঠনের অভ্যন্তরে বেশ কিছু অভিযোগ আছে। কেরলের রাজ্য নেতৃত্ব কেন্দ্রীয় কমিটিতে জানিয়েছেন, সরকারের পাশাপাশি দলের নেতৃত্বেও তাঁরা বেশি করে নতুন মুখ সামনে নিয়ে এসেছেন। সংগঠন চাঙ্গা থাকলেও দ্রুতগামী রেল প্রকল্প ‘সিলভার লাইন’ ঘিরে কেরলে এখন বিতর্ক বড় আকার নিচ্ছে। প্রকল্পের প্রবল বিরোধিতা করছে দুই বিরোধী দল কংগ্রেস এবং বিজেপি। প্রকল্পের জন্য জমি সমীক্ষার কাজও একাধিক জেলায় বাধার মুখে পড়ছে প্রতিবাদের জেরে। কেরল সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, দেশের একমাত্র বাম-শাসিত রাজ্যের সরকারের ভাবমূর্তিতে আঘাত করার লক্ষ্যেই পরিকল্পনামাফিক বিরোধিতা করছে কংগ্রেস এবং বিজেপি। উন্নয়নের যুক্তি মাথায় রাখা হচ্ছে না। এই প্রতিবাদের পাল্টা যুক্তি তুলে ধরতেই পার্টি কংগ্রেসের পরে জাতীয় স্তরে প্রচার শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম। সেই কর্মসূচিতে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদেরও অংশগ্রহণের আর্জি জানিয়েছেন কেরল সিপিএমের নেতারা।

Advertisement

দলের এক পলিটবুরো সদস্যের বক্তব্য, ‘‘উন্নয়নের পথে এগোনো ছাড়া কোনও বিকল্প নেই। কিন্তু সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের অভিজ্ঞতা মনে রেখে নেতিবাচক প্রচারের যুক্তিসঙ্গত জবাব দেওয়াও জরুরি।’’

কেন্দ্রীয় কমিটির আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এ বার অবশ্য অনেকটা জায়গা পেয়েছে বাংলা। বীরভূমের ডেউচা-পাঁচামিতে বেসরকারি খনি প্রকল্প বাতিল, আনিস খানের মৃত্যুর বিচারের দাবি এবং রামপুরহাটের ‘গণহত্যা’র কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছেন সীতারাম ইয়েচুরি, কারাটেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement