LDF

‘শিক্ষিত’ কেরলে বাড়ছে  নারী লাঞ্ছনা, পথে বাম

এরই মধ্যে আবার সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জোসেফিন জড়িয়ে পড়েছেন বিতর্কে।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২১ ০৬:২৪
Share:

ফাইল চিত্র।

বাংলায় মহিলাদের সমর্থন তেমন জোটেনি তাদের। মহিলাদের বড় অংশই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। দলের নির্বাচনী পর্য়ালোচনায় সেই বাস্তব স্বীকারও করে নিয়েছে বঙ্গ সিপিএম। বাংলায় আলাদা কোনও পরিকল্পনা তৈরি না হলেও মহিলাদের সঙ্গে সংযোগ বাড়াতে কেরলে বিশেষ অভিযান শুরু করতে চলেছে সিপিএম।

Advertisement

কেরল সিপিএমের এমন পদক্ষেপের পিছনে অবশ্য ভোটের কোনও যোগসূত্র নেই। রাজ্য জুড়ে মহিলাদের উপরে নির্যাতন ও হিংসার ঘটনা বেড়ে চলার প্রেক্ষিতেই আগামী ১ জুলাই থেকে ‘নারী-বান্ধব কেরল’ কর্মসূচির ডাক দিতে হয়েছে পিনারাই বিজয়নের দলকে। নারী নির্যাতনের একটি ঘটনা এবং তার জেরে তৈরি হওয়া জনরোষ সামাল দিতে কেরলে রাজ্য মহিলা কমমিশনের চেয়ারপার্সন এম সি জোসেফিনকে ইস্তফা দিতে বাধ্যে করেছে সিপিএম। শুধু ওই একটি ঘটনাতেই বিষয়টিকে সীমাবদ্ধ না রেখে সার্বিক ভাবে পরিস্থিতি বদলানোর লক্ষ্যে পৃথক কর্মসূচি নিচ্ছে শাসক দল। এই কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে এক দিকে যেমন রাজ্য জুড়ে নারী সুরক্ষা এবং মহিলাদের মর্যাদা সংক্রান্ত প্রচার চলবে, তেমনই এলাকা ভিত্তিতে বাড়ি বাড়ি জনসংযোগে যাবেন শাসক দলের কর্মীরা।

সাম্প্রতিক কালে কেরলে অল্প দিনের ব্যবধানে মহিলাদের উপরে নির্যাতনের বেশ কয়েকটি ঘটনা রাজ্যে আলোড়ন ফেলেছে। কোথাও পণের জন্য চাপের অভিযোগে আত্মহত্যা করেছেন তরুণী, কোথাও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষণের ঘটনার অভিযোগ আছে। কখনও সম্পত্তি, কখনও পুরনো সম্পর্ক— বিভিন্ন বয়সের মহিলাদের উপরে নানা ধরনের হয়রানির অভিযোগও সামনে এসেছে একগুচ্ছ। পরিস্থিতি এবং বিতর্ক সামাল দিতে মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন ঘোষণা করেছেন, মহিলাদের উপরে নির্যাতন সংক্রান্ত মামলার দ্রুত শুনানি ও নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ কিছু ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ আদালত তৈরি করা হচ্ছে। এই গোটা পরিস্থিতির প্রেক্ষিতেই ‘নারী-বান্ধব কেরল’ অভিযানের সিদ্ধান্ত।

Advertisement

এরই মধ্যে আবার সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জোসেফিন জড়িয়ে পড়েছেন বিতর্কে। একটি টিভি চ্যানেলে নারী নির্যাতন সংক্রান্ত ‘লাইভ শো’ চলাকালীন এক মহিলা তাঁর সমস্যার কথা জানালে মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন জোসেফিন জানতে চান, তিনি পুলিশে অভিযোগ করেছেন কি না? ওই মহিলা জানান, তিনি যে পরিস্থিতিতে আছেন, সেখান থেকে পুলিশের কাছে যাওয়া মুশকিল। জোসেফিন তার জেরে মন্তব্য করেন, ‘‘তা হলে তো ভুগতে হবে!’’ বিতর্কের ঝড় ওঠে নানা মহলে। মহিলাদের উপরে নির্যাতন সংক্রান্ত বিষয়ে মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন ‘অসংবেদনশীল’ মন্তব্য করেছেন, এই অভিযোগে তাঁর অপসারণের দাবি তোলে বিরোধীরাও। শেষ পর্যন্ত সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী আলোচনা করে জোসেফিনকে ওই পদ ছাড়তে বলেছে।

আপাতত ওই বিতর্ক সামাল দিলেও রাজ্যের পরিস্থিতি শাসক শিবিরকে চিন্তায় রাখছে। কেরল সিপিএমের ভারপ্রাপ্ত রাজ্য সম্পাদক এ বিজয়রাঘবনের কথায়, ‘‘যে রাজ্যে সাক্ষরতার হার সর্বাধিক, মানুষের সচেতনতার মাত্রা যথেষ্ট ভাল, সেখানে মহিলাদের উপরে নির্যাতন ঘটে চলবে কেন? একটা প্রগতিশীল রাজ্যে এমন ঘটনাকে একেবারেই হাল্কা করে দেখা উচিত নয়। আমরা চেষ্টা করছি মহিলাদের কাছে এবং সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষের কাছে প্রয়োজনীয় বার্তা পৌঁছে দেওয়ার।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement