রাজরোষেই তাদের দলের দৈনিক মুখপত্রের প্রকাশনা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ত্রিপুরা সিপিএমের। এই অভিযোগ নিয়েই আদালতের দ্বারস্থ হতে চলেছে তারা। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে এমন ঘটনা ঘটেছে কি না, তার তদন্ত চেয়ে অবিলম্বে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি করেছে এ়়ডিটর্স গিল্ডও।
ত্রিপুরায় গত ৪০ বছর ধরে চালু সিপিএমের মুখপত্রের স্বীকৃতি বাতিল করে দিয়েছে আরএনআই। দু’দিন আগে ওই কাগজ পরিচালনার নতুন ট্রাস্টকে প্রকাশনার শংসাপত্র দিয়েও রাতে আরএনআই তা প্রত্যাহার করে নেয়। তাদের নোটিসে কারণ দেখানো হয়েছে, পশ্চিম ত্রিপুরার জেলাশাসক আরএনআই-কে জানিয়েছেন, এসডিএমের দেওয়া ছা়ড়পত্র ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সিপিএম নেতাদের অভিযোগ, রাজ্য ও কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি চাপসৃষ্টি করে জেলাশাসককে ‘বাধ্য’ করেছে ছাড়পত্র প্রত্যাহার করতে। আরএনআই-এর দফতর কেন ও কী ভাবে রাত সাড়ে ১০টার সময়ে স্বীকৃতি বাতিল করার নোটিস জারি করল, উঠেছে সেই প্রশ্নও। এই প্রেক্ষিতেই সুপ্রিম কোর্টে দরবার করার বিষয়ে আইনজ্ঞদের পরামর্শ নিচ্ছেন সিপিএম নেতৃত্ব। হাইকোর্ট ঘুরেই সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া হবে নাকি সরাসরি সর্বোচ্চ আদালতে যাওয়ার কোনও পথ আছে, আলোচনা চলছে তা নিয়েই।
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ত্রিপুরায় ওই মুখপত্রের প্রাক্তন সম্পাদক গৌতম দাশ বুধবার দিল্লি পৌঁছেছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার জন্য। তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের পথেই এখন যেতে হবে মনে হচ্ছে।’’ গৌতমবাবুরা পরামর্শ নিচ্ছেন রাজ্যের প্রাক্তন অ্যা়ডভোকেট জেনারেল বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যেরও। কলকাতায় বিপিএমও-র সমাবেশের ফাঁকে এ দিন বিকাশবাবু বলেন, ‘‘রাজ্যের হাইকোর্টে আবেদন করে ফল হবে না বলে ত্রিপুরার নেতারা আশঙ্কা করছেন। সে ক্ষেত্রে বিকল্প পথের প্রস্তুতি নিতে হবে।’’
মালিকানা এবং প্রকাশক সংক্রান্ত কোনও তথ্যের ‘গরমিলে’র অভিযোগে কাগজ বন্ধ করে দেওয়া শুধু অতি-সক্রিয়তাই নয়, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হত্যায় একটি নির্মম পদক্ষেপ বলেই বর্ণনা করেছে এ়়ডিটর্স গিল্ড। তাদের দাবি, গরমিলের অভিযোগ থাকলে তদন্ত হোক। কিন্তু বাতিলের নোটিস তুলে নেওয়া হোক। ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ কোনও সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না, তা-ও সরকারি স্তরে তদন্ত করে দেখার দাবি করেছে তারা।