সাফল্যের দিনেও তর্কে ব্যস্ত সিপিএম

মহারাষ্ট্রে কৃষক সভার আন্দোলনের সাফল্যের পরে সিপিএমের মধ্যে রাজনৈতিক লাইন নিয়ে বিতর্ক ফের তুঙ্গে। সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি কংগ্রেস ও অন্যান্য বিরোধী দলের সঙ্গে জোট বেঁধে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে চাইলেও তাতে নারাজ প্রকাশ কারাট।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৮ ০২:৪৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

মহারাষ্ট্রে যদি কংগ্রেসের সাহায্য ছাড়াই বিজেপি সরকারকে চাপে ফেলে দেওয়া যায়, তা হলে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের নেতাদের কেন উঠতে-বসতে কংগ্রেসের হাত ধরার কথা মনে হয়!

Advertisement

মরাঠা-ভূমে কৃষক আন্দোলনের সাফল্যে উজ্জীবিত এ কে গোপালন ভবনের এক সিপিএম নেতা প্রশ্নটা ছুড়ে দিলেন।

যা শুনে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের এক নেতার কটাক্ষ, ‘‘কৃষক সংগঠনের আন্দোলনের সাফল্যে পার্টি ওখানে কতগুলো বিধানসভা আসনে জিতবে? জিতলে কি একার শক্তিতেই জিতবে? অন্য কোনও দলের সাহায্য ছাড়াই?’’ একের পর এক ভোটে হেরে ঘরে-বাইরে সঙ্কটে পড়ে যাওয়া সিপিএমে এ বার একটা সফল আন্দোলন ঘিরেও বিবাদ! মহারাষ্ট্রে কৃষক সভার আন্দোলনের সাফল্যের পরে সিপিএমের মধ্যে রাজনৈতিক লাইন নিয়ে বিতর্ক ফের তুঙ্গে। সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি কংগ্রেস ও অন্যান্য বিরোধী দলের সঙ্গে জোট বেঁধে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে চাইলেও তাতে নারাজ প্রকাশ কারাট। কারাট-শিবিরের যুক্তি, কৃষক-শ্রমিকের সমস্যা নিয়ে আন্দোলনে এমনিতেই বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলা সম্ভব। মহারাষ্ট্রে চাষিদের ‘লং মার্চ’-ই তার প্রমাণ।

Advertisement

২০১৯-এ লোকসভা ভোটের পরেই মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোট। একটা সময় মহারাষ্ট্রে কমিউনিস্ট পার্টির ভাল সংগঠন ছিল। কৃষক সভার আন্দোলনে সাফল্য মেলার পরে প্রশ্ন উঠেছে, এ বার কি সেখানে সুবিধে করতে পারবে দল? কৃষক নেতারা বলছেন, আসন জেতার নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু বিজেপি সরকার যে কৃষক বিরোধী, তা প্রমাণ করা গিয়েছে। আমজনতার সমস্যা নিয়ে রাস্তায় নামলে বিজেপির গড়ে ঢুকেও লড়াই করা যায়, তা-ও প্রমাণিত। এর পর কৃষকদের বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দিতে বললে, তাঁরা তা শুনবেন বলেও আশাবাদী অনেক নেতা।

আরও পড়ুন: দাবির সঙ্গে মনও জিতল লাল মিছিল

এখানেই ইয়েচুরি-শিবিরের নেতারা ভিন্নমত। তাঁরা বলছেন, জোট বা আসন সমঝোতা না হলে ফায়দা কুড়োবে বিজেপি-বিরোধী অন্য দলগুলি। তখন এই কৃষকদেরই বলতে হবে অন্য দলকে ভোট দিন! আসন সমঝোতা হলে বরং অন্যান্য আসনে বাকি বিরোধীদের সমর্থনের বিনিময়ে কয়েকটি আসনে সিপিএমের প্রার্থীরা বাকি বিরোধীদের সমর্থন পেতে পারেন।

সিপিএমের কৃষক আন্দোলনের ফায়দা নিতে ইতিমধ্যেই আসরে নেমেছে কংগ্রেস, এনসিপি, শিবসেনা। অতীতে মহারাষ্ট্রে সিপিআইয়ের জমি দখল করে বেড়ে উঠেছিল বাল ঠাকরের শিবসেনা। এখন শিবসেনার নতুন প্রজন্ম, আদিত্য ঠাকরে কৃষক নেতা, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করছেন। আদিত্যের মন্তব্য, ‘‘ঝান্ডার রঙ যা-ই হোক, সবার রক্ত লাল। যে ঝান্ডাই হাতে থাকুক, দাবিই আসল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement