CPM

কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর, কংগ্রেস-দ্বিধায় সিপিএম

ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএমের আসন সমঝোতার আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে! যা ছিল ওই রাজ্যে অল্প কিছু দিন আগে দু’দলের কাছেই অভাবনীয়!

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:২৫
Share:

কেরলে সিপিএম ও কংগ্রেসের পারস্পরিক সম্পর্ক অহি-নকুল। প্রতীকী ছবি।

আসমুদ্র হিমাচলে একই কৌশল নিয়ে চলার দল বিজেপি ছাড়া প্রায় কেউই নেই। তবু তার মধ্যেও কংগ্রেস-প্রশ্নে দ্বিধার জেরে সাগর, পাহাড় ও সমতলে কার্যত আলাদা অবস্থান নিয়ে চলতে হচ্ছে সিপিএমকে!

Advertisement

কেরলে সিপিএম ও কংগ্রেসের পারস্পরিক সম্পর্ক অহি-নকুল। কন্যাকুমারী থেকে রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় সেই কারণেই প্রতিনিধি পাঠানোর প্রশ্ন ছিল না সিপিএমের। ওই যাত্রার শেষ পর্বে কাশ্মীরে সিপিএম-সহ বিভিন্ন বিরোধী দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন রাহুলেরা। কিন্তু সিপিএমের পলিটবুরো এখনও পর্যন্ত ওই যাত্রায় অংশগ্রহণে সম্মতি দেয়নি। অনেকটা সেই কারণেই বাংলার কংগ্রেসের আমন্ত্রণ পেয়েও কার্সিয়াঙে অধীর চৌধুরীদের সাগর থেকে পাহাড় পদযাত্রার সমাপ্তি-পর্বে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধায় ভুগছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। আবার ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএমের আসন সমঝোতার আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে! যা ছিল ওই রাজ্যে অল্প কিছু দিন আগে দু’দলের কাছেই অভাবনীয়!

সিপিএম সূত্রের খবর, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা এবং জম্মু ও কাশ্মীরের পুরনো বিধানসভার প্রাক্তন সদস্য মহম্মদ ইউসুফ তারিগামি ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র শেষ পর্বে অংশগ্রহণের পক্ষপাতী। দলের কাছে সেই মনোভাব জানিয়ে রেখেছেন তিনি। তারিগামির যুক্তি, যে ভাবে কাশ্মীর নিয়ে বিজেপি রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ভাবে যে সব কাণ্ড করেছে, তার প্রেক্ষিতে কংগ্রেসের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় বিজেপি-বিরোধী দলগুলির অংশগ্রহণ করা উচিত। সিপিএমের পলিটবুরো অবশ্য আলোচনা করে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সম্মতি দেয়নি। কন্যাকুমারীতে রাহুলের থেকে তারা দূরে ছিল, কাশ্মীরেও দূরে থাকার অবস্থান এখনও পর্যন্ত বহাল।

Advertisement

এর মধ্যেই বাংলায় সাগর থেকে পাহাড় ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র সমাপ্তি-পর্বে কার্সিয়াঙে অংশগ্রহণ করার আমন্ত্রণ জানিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমকে চিঠি দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরবাবু। আমন্ত্রণের চিঠি গিয়েছে বামফ্রন্টের অন্যান্য শরিক দলের কাছেও। কলকাতায় ২৩ জানুয়ারি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন উপলক্ষে নানা কর্মসূচি থাকায় কার্সিয়াঙে না যেতে পারার কথা কংগ্রেসকে জানাচ্ছেন শরিক নেতৃত্ব। সিপিএমের অন্দরে অবশ্য পক্ষে-বিপক্ষে দু’রকম মতই আছে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘কংগ্রেসের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র বক্তব্য ও বার্তাকে আমরা সমর্থন করেছি। এ রাজ্যের কংগ্রেসের পদযাত্রায় বামপন্থী বিশিষ্ট জনেরাও শামিল হয়েছেন। বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সব শক্তিকে একজোট করার আমাদের অবস্থান থেকে দেখলে ওই পদযাত্রায় প্রতিনিধি পাঠাতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে দরজাটা খুলে গেলে সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হতো!’’

দীর্ঘ দিনের আপত্তি এবং সংশয় ঝেড়ে ফেলে ত্রিপুরার সিপিএম অবশ্য কংগ্রেসের সঙ্গে আসন-রফার কথা শুরু করেছে। সে রাজ্যে এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক অজয় কুমার সিপিএমের রাজ্য দফতরে গিয়ে আসন বণ্টন নিয়ে কথা বলে এসেছেন। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের মতে, ‘‘রাজ্যভিত্তিক পরিস্থিতি আলাদা হয়, সে ভাবেই অবস্থান ঠিক হয়। তবে ত্রিপুরায় কংগ্রেস এবং তিপ্রা মথা’র সঙ্গে সমঝোতা করে বিজেপিকে রুখে দিতে পারলে লোকসভা নির্বাচনের আগে অন্যান্য জায়গাতেও তার প্রভাব পড়বে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement