ধর্মঘট করে কী হয়, প্রশ্ন তুলেই জবাব

ধর্মঘট হয় ফি বছর। তার জন্য গলা ফাটিয়ে প্রচারও চলে প্রতি বার। কিন্তু এ বারই প্রথম ধর্মঘটকে ঘিরে চেনা প্রশ্নের জবাব জনতার কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টায় নামল সিপিএম। কৌশলে এটাও আসলে ধর্মঘটেরই প্রচার। তবু এমন উদ্যোগ অভিনব!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৪০
Share:

ধর্মঘট হয় ফি বছর। তার জন্য গলা ফাটিয়ে প্রচারও চলে প্রতি বার। কিন্তু এ বারই প্রথম ধর্মঘটকে ঘিরে চেনা প্রশ্নের জবাব জনতার কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টায় নামল সিপিএম। কৌশলে এটাও আসলে ধর্মঘটেরই প্রচার। তবু এমন উদ্যোগ অভিনব!

Advertisement

শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাড়ানো-সহ একগুচ্ছ দাবিতে আগামী ২ সেপ্টেম্বর দেশ জুড়ে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি। এ রাজ্যে বামফ্রন্ট-সহ ১৭টি দল শুক্রবারের ওই ধর্মঘটকে সমথর্ন করছে। ধর্মঘটের পক্ষে হাওয়া তোলার জন্য ‘স্ট্রাইকহার্ড’ ট্যাগ ব্যবহার করে সোশ্যাল মিডিয়ায় এ বার প্রচারে নেমেছে সিপিএম। তারই অঙ্গ হিসাবে বঙ্গ সিপিএম তাদের রাজ্য কমিটির ওয়েবসাইটে কিছু প্রশ্ন নিজেরাই বেছে নিয়েছে, যা ধর্মঘট এলে হামেশাই তোলা হয় খবরের কাগজের পাতায় বা টিভি চ্যানেলের পর্দায়! সেই সব প্রশ্নের জবাব দিয়েই ধর্মঘটের যৌক্তিকতা দেখানোর চেষ্টা হয়েছে।

এক দিন ধর্মঘট করলেই গরিব, মধ্যবিত্তের সব সমস্যার সমাধান হবে কি না, এই প্রশ্নের মুখে প্রতি বার পড়তে হয় আন্দোলনকারীদের। সেই প্রশ্ন তুলে সিপিএম নিজেরাই জানিয়েছে— ধর্মঘট কোনও জ্যোতিষীর তাবিজ-মাদুলি বা জাদুকরের মন্ত্র নয় যে, খেটে খাওয়া মানুষের যাবতীয় সমস্যার এক দিনে সমাধান করে ফেলার দাবি করবে! কিন্তু শ্রমজীবী মানুষের জন্য যতটুকু দাবি এত দিনে আদায় করা গিয়েছে, তার কোনওটাই শুধু আবেদন-নিবেদন করে পাওয়া যায়নি। ধর্মঘট তখনই করা হয়, যখন আর অন্য উপায় থাকে না।

Advertisement

ধর্মঘটে আর্থিক ক্ষতি? সিপিএম এই ক্ষতি অস্বীকার করছে না। কিন্তু তাদের যুক্তি, উৎপাদনের কিছু ক্ষতি হয় বলেই মালিক পক্ষকে বাধ্য করানো যায় শ্রমিকের দাবি-দাওয়া নিয়ে ভাবতে। এই পথেই এ দেশে শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি বেড়েছে, প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে প্রাপ্য পেনশনের অঙ্ক সামান্য বাড়ানো গিয়েছে। আর দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের দুরবস্থা নিয়ে বছরের অন্য দিন কেউ ভাবিতই হন না! এক দিন তাঁরা বাধ্য হয়ে কাজ বন্ধ করতে যান, যাতে তাঁদের কথা অন্যদের মাথায় ঢোকে!

এ বারের ধর্মঘট কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে দাবি আদায়ের জন্যই। কিন্তু ধর্মঘট রুখতে রাজ্যে প্রশাসনিক ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ধর্মঘটকারী ইউনিয়ন নেতারা পাল্টা বলেছেন, রাস্তায় দেখা হবে! সিটুর রাজ্য সভাপতি শ্যামল চক্রবর্তী এ দিন বলেন, ‘‘আগে ধর্মঘট ভাঙাতে মালিক পক্ষ দালাল নিয়োগ করত। এখন কেন্দ্রীয় সরকারের হয়ে দালালের কাজ করছে রাজ্য সরকার!’’

ইউটিইউসি-র রাজ্য সম্পাদক অশোক ঘোষ প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘ক্ষমতায় আসার আগে মমতার ডাকা ধর্মঘটে বাস-সহ কত ভাঙচুরই হয়েছে। তার জন্য তিনি কি ক্ষমা চেয়েছেন?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement