—প্রতীকী ছবি।
করোনার টিকা নেওয়ার সঙ্গে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোনও যোগ নেই বলে জানিয়ে দিল ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)।
ঘটনাচক্রে, কোভিডের টিকা নিয়েছেন, এমন অনেকে আচমকা হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। যাঁদের অধিকাংশই কমবয়সি। করোনার টিকা নেওয়ার কারণে তাঁরা মারা যাচ্ছেন বলে অভিযোগ ওঠে বিভিন্ন মহলে। এর পিছনে কোনও সত্যতা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে আইসিএমআর-কে দায়িত্ব দেয় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। ২০২১ সালের ১ অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশের ৩৯টি বড় হাসপাতালে করোনা সংক্রমণের কারণে ভর্তি হয়েছিলেন এমন ১৮-৪৫ বছরের ব্যক্তিদের উপরে সমীক্ষা চালানো হয়। এই সময়ের মধ্যে মৃত ৭২৯ জন টিকাপ্রাপক ও টিকা নিয়ে সুস্থ ২,৯১৬ জন সুস্থ ব্যক্তির তথ্য খতিয়ে দেখা হয়।
রিপোর্টে আইসিএমআর জানিয়েছে, যাঁরা আচমকা মারা গিয়েছেন, তাঁদের কোভিড সংক্রমণের তীব্রতা সাধারণ কোভিড সংক্রমণের চেয়ে চার গুণ বেশি ছিল। গবেষণার সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক মনোজ মুরহেকরের দাবি, ‘‘প্রতিষেধক বর্ম হিসাবে কাজ করে। প্রতিষেধকের সঙ্গে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার কোনও সরাসরি সম্পর্ক পাওয়া যায়নি।’’
রিপোর্টে বলা হয়েছে, যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের সম্পর্কে তথ্য নিয়ে জানা গিয়েছে, দুর্বল হৃৎপিণ্ড, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, ধমনীতে রক্ত চলাচলে সমস্যার কারণে হৃৎপিণ্ডে যথেষ্ট রক্ত না পৌঁছনো, হৃৎপিণ্ডে পেশির দুর্বলতার কারণে সারাশরীরে রক্ত পৌঁছতে না পারা— টিকা নেওয়া বা টিকা না নেওয়া, দু’ধরনের রোগীরই মৃত্যুর কারণ। মূলত হৃৎপিণ্ডের নানা সমস্যাই মৃত্যুর অন্যতম কারণ।
আর যাঁদের হৃৎপিণ্ডে এ ধরনের সমস্যা ছিল, তাঁদের ধূমপান, অনিয়ন্ত্রিত মদ্যপান, বিশেষ করে সারা রাত জেগে অত্যধিক মদ্যপান আচমকা মৃত্যুর কারণ হিসেবে উঠে এসেছে। তেমনি দুর্বল হৃৎপিণ্ড যাঁদের, তাঁদের ক্ষেত্রে অজান্তেই অতিরিক্ত ব্যায়াম, নাচ, মানসিক উত্তেজনা হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম কারণ বলে জানানো হয়েছে রিপোর্টে। বলা হয়েছে, যাঁদের পারিবারিক ভাবে দুর্বল হৃৎপিণ্ডের সমস্যা রয়েছে, কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পরে তাঁদের আচমকা মৃত্যুর সম্ভাবনা তিন গুণ বেড়ে গিয়েছে। তেমনি যাঁরাধূমপান ও সারা রাত ধরে মদ্যপান করেন, তাঁদের আচমকা মৃত্যুর সম্ভাবনা বেড়ে গিয়েছে যথাক্রমে দুই এবং ছ’গুণ। তেমনি দুর্বল হৃৎপিণ্ড যাঁদের, তাঁদের অতিরিক্ত পরিশ্রম আচমকা মৃত্যুর সম্ভাবনা তিন গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।