ফাইল চিত্র।
ভারতে করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যা কেন এত বাড়ছে? এর পিছনে কী কী কারণ দায়ী? শুধুই কি ভাইরাসের চরিত্র বদল? না কি অন্য কোনও কারণও রয়েছে। সব প্রশ্নের জবাব দিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন।
সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে সৌম্যা বলেন, ‘‘ভারতে করোনার যে প্রজাতি সক্রিয় সেটি হল বি.১.৬১৭। এই প্রজাতিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনও ‘উদ্বেগজনক প্রজাতি’ আখ্যা না দিলেও আমেরিকা, ব্রিটেনের মতো দেশ সেই আখ্যা দিয়েছে। আমার মনে হয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থারও উচিত এই প্রজাতিকে ‘উদ্বেগজনক প্রজাতি’ হিসেবে চিহ্নিত করা।’’
সৌম্যা আরও বলেন, ‘‘বি.১.৬১৭ প্রজাতি ক্রমাগত চরিত্র বদল করছে। তার ফলে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতা আরও বাড়ছে। শুধু তাই নয়, আগামী দিনে অ্যান্টিবডি রোধক হয়ে উঠতে পারে এই ভাইরাস। অর্থাৎ টিকা বা অন্যান্য কারণে শরীরে প্রতিরোধক ক্ষমতা তৈরি হলেও এই ভাইরাসকে রোখা মুশকিল হতে পারে। তাই এখনই সতর্ক হতে হবে।’’
তবে শুধুমাত্র ভাইরাসের ক্ষমতার জন্য নয়, মানুষের সচেতনতার অভাবও ভারতে এই ব্যাপক সংক্রমণের অন্যতম কারণ বলেই মনে করেন সৌম্যা। তিনি বলেন, ‘‘ভারতে জমায়েত বেড়ে গিয়েছিল। মানুষের মাস্ক পরার ও অন্যান্য কোভিড বিধি মেনে চলার প্রবণতাও কমে গিয়েছিল। তার ফলে প্রথমে নীচের স্তরে অনেক দিন ধরে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। ধীরে ধীরে সেই সংক্রমণ উল্লম্ব ভাবে বাড়তে শুরু করেছে।’’ এ ভাবে বাড়তে থাকলে একটা সময় পরে তা হাতের বাইরে চলে যেতে পরে বলেও সতর্ক করেছেন এই ভারতীয় বিজ্ঞানী।
পাশাপাশি দেশের টিকাকরণের ধীর গতিকেও দায়ী করেছেন সৌম্যা। তাঁর মতে, ‘‘ভারতে এখনও পর্যন্ত মোট জনসংখ্যার ২ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এ ভাবে চলতে থাকলে বছর গড়িয়ে যাবে সবাইকে টিকা দিতে। তত দিনে ভাইরাস হয়তো নিজের চরিত্র বদল করে ফেলবে। তখন আর বর্তমান টিকার কার্যকারিতা থাকবে না।’’
ভাইরাস যত ছড়াবে তত তার চরিত্র বদলের আশঙ্কা বাড়বে বলেও সতর্ক করেছেন সৌম্যা। তিনি বলেন, ‘‘যত ভাইরাস ছড়াবে তত তার মধ্যে পরিবর্তন হবে। চরিত্র বদল করে নতুন নতুন প্রজাতি দেখা দেবে। তখন হয়তো বর্তমানে ব্যবহার করা টিকা কোনও কাজেই দেবে না। এটাই আগামী দুনিয়ার কাছে সমস্যার হতে চলেছে। তাই আগে থেকে সতর্ক হয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে।’’