টিকাকরমে জোর দিতে আর্জি দেবী শেট্টির। —ফাইল চিত্র।
টিকায় ঘাটতির অভিযোগে জেরবার কেন্দ্রীয় সরকার। এমন পরিস্থিতিতে অতিমারি রোখার উপায় বাতলে দিলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক দেবী শেট্টি। তাঁর মতে, জনসংখ্যার ৫১ কোটির টিকাকরণ সম্পূর্ণ হলেই অতিমারিকে ঠেকানো সম্ভব। তবে তার জন্যা পকেট হালকা করতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে।
কোভিডের জেরে উদ্ভুত অতিমারিতে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার করুণ চিত্র প্রকট ভাবে ধরা পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে আমেরিকার স্বাস্থ্য উপদেষ্টা অ্যান্টনি ফসি-সহ বিশ্বের তাবড় চিকিৎসকরা সার্বিক টিকাকরণেই জোর দিয়েছেন। এ নিয়ে ইন্ডিয়া টুডে-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের মতামত জানিয়েছেন দেবী শেট্টিও।
সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কোভিড টাস্কফোর্সের সদস্য দেবী শেট্টি। তিনি বলেন, ‘‘ভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখলেও অতিমারি রোখা অসাধ্য নয়। এখনও পর্যন্ত টিকাকরণই সেরা এবং সস্তার সমাধান। যত দ্রুত সম্ভব ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সকলের টিকাকরণ সম্পূর্ণ করে ফেলা দরকার।’’
তৃতীয় পর্যায়ে ১৮-র ঊর্ধ্বে সকলের টিকাকরণে ইতিমধ্যেই সায় দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু টিকার পর্যাপ্ত জোগান না থাকায় তা শুরুই হয়নি একাধিক রাজ্যে। তবে দেবী শেট্টির বক্তব্য, ‘‘বুঝতে হবে ভারত বিশাল জনসংখ্যার দেশ। কিন্তু প্রয়োজনীয় সম্পদ রয়েছে আমাদের কাছে। একদিন লকডাউন করলেই ১০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি সইতে হয় আমাদের। টিকাকরণে জোর দিলে ক্ষতির মুখে পড়তেই হবে না।’’
দেবী শেট্টির যুক্তি, “১৮-র কম বয়সিরা এখনও পর্যন্ত টিকাকরণের বাইরেই রয়েছে। তাই টিকাকরণের পরিকল্পনায় মোট জনসংখ্যা থেকে আপাতত তাদের বাদ রাখা যেতে পারে। একটি করে টিকা পেয়েছেন যাঁরা, তাঁদের ধরলেও, ইতিমধ্যে ১৩ কোটি মানুষ টিকা পেয়েছেন। সে ক্ষেত্রে আপাতত ৫১ কোটি মানুষের সম্পূর্ণ টিকাকরণের লক্ষ্য নিয়ে নামতে হবে।’’
দেশে মোট সংক্রমণ আড়াই কোটি ছুঁইছুঁই হলেও টিকা নিয়ে গবেষণা এবং টিকা উৎপাদনে কোনও টাকাই বরাদ্দ করা হয়নি বলে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু অতিমারি রুখতে হলে সরকারকে টাকা খরচ করতেই হবে বলে মত দেবী শেট্টির। তিনি বলেন, “৫১ কোটি মানুষকে দু’টি টিকা দিতে সবমিলিয়ে ৭০ হাজার কোটি টাকা খরচ পড়বে। অগ্রিম ১০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে টিকা উৎপাদনকারী কোনও সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করাই যায়। তা হলে টিকা উৎপাদনে আরও জোর দেবে তারা। ভারতের মতো দেশ, যার বার্ষিক গড় উৎপাদন ২০০ লক্ষ কোটি টাকা, সেখানে ৭০ হাজার কোটি টাকা কোনও ব্যাপারই নয়।’’
দেবী শেট্টির মতে, পরীক্ষায় সফল যে কোনও টিকা উৎপাদনকারী সংস্থার সঙ্গেই এই চুক্তি করা যায়। তাদের সঙ্গে দরদামও করতে পারে সরকার। সে ক্ষেত্রে ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে ৫১ কোটি মানুষের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হওয়া সম্ভব।