—প্রতীকী চিত্র
থমকে থাকা কোভিশিল্ড প্রতিষেধকের মানবশরীরে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ নতুন করে শুরু করার জন্য সিরাম ইনস্টিটিউটকে অনুমতি দিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। এর ফলে দেশের ১৪টি গবেষণা কেন্দ্রে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা সংস্থার তৈরি চ্যাডক্স১ বা কোভিশিল্ড প্রতিষেধকের তৃতীয় দফার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করতে আর কোনও বাধা রইল না সিরামের সামনে। পাশাপাশি, রাশিয়ায় তৈরি স্পুটনিক-ভি প্রতিষেধক ভারতের বাজারে ছাড়ার জন্য দেশীয় ওষুধ সংস্থা রেড্ডি’জ় ল্যাবরেটরির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার কথা জানিয়েছে মস্কো। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কর্তাদের আশা, এ বছরের শেষে ওই দুই বিদেশি টিকা ভারতের বাজারে চলে আসবে।
কোভিশিল্ডের টিকা নেওয়ায় ব্রিটেনে এক স্বেচ্ছাসেবক অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই ভারতে পরীক্ষার সময়ে সিরামকে বাড়তি সতর্কতা রাখার নির্দেশ দিয়েছে ছাড়পত্র প্রদানকারী ‘দ্য ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া’ (ডিসিজিআই)। স্বেচ্ছাসেবকদের শারীরিক অবস্থা ভাল করে জেনে নিতে বলা হয়েছে। প্রয়োগ চলাকালীন কোনও স্বেচ্ছাসেবকের সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত তা ডিসিজিআইকে জানাতে হবে। এ ছাড়া, জরুরি পরিস্থিতিতে কী ধরনের ওষুধ ব্যবহার করার কথা সিরাম ভেবে রেখেছে, তা-ও জানাতে বলা হয়েছে।
গত কালই স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়েছিলেন, রাশিয়ায় তৈরি স্পুটনিক-ভি প্রতিষেধক ভারতে ব্যবহার করার প্রশ্নে চূড়ান্ত পর্যায়ের আলোচনা চলছে। আজ ‘রাশিয়ান ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড’ (আরডিআইএফ) বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, তারা ভারতের রেড্ডি’জ় ল্যাব-এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রায় ৩০ কোটি প্রতিষেধক উৎপাদন করবে। যার মধ্যে ভারতের বাজারে ছাড়ার জন্য ১০ কোটি প্রতিষেধক রেড্ডি’জ় ল্যাবকে দেওয়া হবে। তবে টিকার দাম কত হবে, তা জানানো হয়নি। স্পুটনিক-ভি টিকা তৈরি করেছে রাশিয়ার গ্যামেলিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট। গবেষণায় অর্থ জুগিয়েছে আরডিআইএফ।
আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্ত নিতিন গডকড়ী, টুইট করে জানালেন নিজেই
আরও পড়ুন: দিল্লি হিংসায় চার্জশিট পুলিশের, ১৫ জন অভিযুক্তের মধ্যে নেই উমর, শরজিলের নাম
রাশিয়ার প্রতিষেধক ভারতের বাজারে ছাড়ার আগে এ দেশে মানবশরীরে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হবে। ইতিমধ্যেই ওই টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষায় সাফল্যের মুখ দেখেছেন বলে দাবি করেছেন রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা। ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ’ (আইসিএমআর)-এর ডিজি বলরাম ভার্গবের কথায়, ‘‘স্পুটনিক-ভি প্রতিষেধকের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফলাফল মেডিক্যাল জার্নাল ল্যানসেটে প্রকাশিত হয়েছে। ওই টিকা ব্যবহারে মানবদেহে কোনও ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে— এমন প্রমাণ মেলেনি। বরং শরীরে ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকরী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠেছে।’’ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বক্তব্য, এ দেশে ওই প্রতিষেধকের তৃতীয় পর্বের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করবে রেড্ডি’জ় ল্যাব। ফলাফল আশাজনক হলে টিকা ভারতে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হবে। চলতি মাসেই ওই টিকার বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাশিয়া। সূত্রের মতে, সব কিছু ঠিক থাকলে নভেম্বর-ডিসেম্বরের মধ্যেই ভারতের বাজারে ঢুকে পড়বে রাশিয়ার টিকা। প্রায় একই সময়ে অক্সফোর্ডের টিকা কোভিশিল্ড দেশীয় বাজারে পাওয়া যাবে বলে মনে করছে কেন্দ্র।