দিল্লিতে গণচিতা। ছবি—পিটিআই।
সারিবদ্ধভাবে সৎকার করা হচ্ছে কোভিডে মৃত রোগীদের দেহ। গত কয়েক দিন ধরে এমন ছবি দেখা গিয়েছে দিল্লির বিভিন্ন স্থানে। কিন্তু শ্মশান এবং কবরস্থানে যত রোগীর দেহ সৎকার হয়েছে, তার সঙ্গে দিল্লির সরকারের দেওয়া কোভিডে মৃত্যুর হিসাবে দেখা গেল বিস্তর ফারাক। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম দিল্লির পুরসভা কর্পোরেশনের অধীনস্ত শ্মশান এবং কবরস্থান থেকে সৎকার হওয়া কোভিডে মৃতদের তথ্য জোগাড় করেছে। ১৮ থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত নেওয়া সেই তথ্যের সঙ্গে সরকারি বুলেটিনে প্রকাশিত তথ্যের ফারাক প্রায় ১ হাজার ১৫৮ জনের!
দিল্লি সরকারের দেওয়া তথ্য অনুসারে, ১৮ থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত কোভিডে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৯৩৮ জনের। কিন্তু ওই সময়কালে দিল্লি পুরসভার ২৬টি শ্মশান এবং কবরস্থানে সৎকার করা হয়েছে ৩ হাজার ৯৬ জন কোভিডে আক্রান্ত মৃতের দেহ। এই তথ্য দেখাচ্ছে দিল্লি সরকারের প্রকাশিত তথ্যে ১ হাজার ১৫৮ জন মৃতের কোনও উল্লেখই নেই। যদিও এই গরমিলের কারণ এখনও জানা যায়নি। দিল্লি সরকারও এখনও এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
৩ হাজার ৯৬ জনের যে হিসাব পাওয়া গিয়েছে তাঁদের সকলের করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে। দিল্লির পুর কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল থেকে আসা কোভিড মৃতদের হিসাবই রেখেছে। এ ছাড়াও প্রচুর করোনা আক্রান্ত রয়েছেন দিল্লিতে, যাঁরা হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে ভর্তি হতে পারেননি এবং তাঁদের মৃত্যু হয়েছে বাড়িতে। তাঁরা রয়েছেন এই হিসাবের বাইরে। গাজিপুর শ্মশানের কর্মী অনুজ বনসল বলেছেন, ‘‘সৎকারের আগে কোভিডের জন্য মৃত্যু না অন্য কারণে মৃত্যু, তা আমাদের লিখে রাখতে হচ্ছে। মৃতরা হাসপাতাল থেকে বা অ্যাম্বুল্যান্সে এলে আমরা জানতে পারছি। কিন্তু বাড়ি থেকে মৃতদেহ এলে কোভিডের কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে কি না, তা নিশ্চিতভাবে জানতে পারছি না। সে ক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণ হিসাবে আমাদের খাতায় কোভিডের উল্লেখ থাকছে না।’’ বাড়িতে কোভিডের কারণের মৃত্যুর হিসাবে ধরলে সরকারি হিসাবের সঙ্গে মৃত্যু সংখ্যার ফারাক আরও বাড়বে। দিল্লির শ্মশান, কবরস্থানে দৈনিক গড়ে যে সংখ্যক দেহ সৎকার করা হয়, গত এক সপ্তাহে তা ৩-৪ গুণ বেড়েছে বলেও জানা গিয়েছে।