প্রতীকী ছবি।
বৈবাহিক সম্পর্কে ধর্ষণই মেয়েদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের সবচেয়ে বড় উদাহরণ বলে দিল্লি হাই কোর্টে সওয়াল করলেন এক আবেদনকারী।
বৈবাহিক ধর্ষণকে ফৌজদারি অপরাধের তকমা দেওয়ার নির্দেশ চেয়ে একগুচ্ছ আর্জি পেশ হয়েছে হাই কোর্টে। সেগুলিরই শুনানির সময়েই এই মন্তব্য করেন এক আবেদনকারীর আইনজীবী কলিন গনসালভেস।
আবেদনকারী খুশবু সৈফির আইনজীবী কলিন বলেন, ‘‘এটি সম্ভবত মহিলাদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় যৌন নির্যাতন। এই ঘটনা বাড়ির মধ্যে ঘটে। তা নিয়ে এফআইআর হয় না। কেউ জানতেও পারেন না। যদি বিবাহিত নারী-পুরুষের সং খ্যা হিসেব করা যায় তবে এমন ঘটনার সংখ্যা বিপুল। এই সংখ্যা কেউ খতিয়ে দেখেন না।’’
আবেদনকারী খুশবুর ঘটনার কথা উল্লেখ করেন কলিন। তিনি জানান, বছর সাতাশের খুশবুকে ধর্ষণ করেন তাঁর স্বামী। তাতে গুরুতর জখম হন খুশবু। কলিনের বক্তব্য, ‘‘অনেক ক্ষেত্রেই বৈবাহিক সম্পর্কে ধর্ষণের ক্ষেত্রে মহিলাদের পুলিশ বা তাঁদের পরিবার, কেউই সাহায্য করেন না। পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে গেলে তাঁরা হেসে উড়িয়ে দেন। বলেন, স্বামীর বিরুদ্ধে কী করে এফআইআর করবেন আপনি?’’
সওয়ালের সময়ে বৈবাহিক সম্পর্কে ধর্ষণের বিরুদ্ধে নানা আন্তর্জাতিক রায়ের কথা উল্লেখ করেন কলিন। তিনি জানান, ব্রিটেনে হাউস অব লর্ডসের রায়ে পুরনো আইন বদলেছিল। হাউস অব লর্ডসের রায়ে জানানো হয়েছিল, বৈবাহিক সম্পর্ক থাকলেই যৌন সম্পর্কে কোনও মহিলা সম্মতি দিয়েছেন এমনটা ধরা যাবে না। মহিলার সম্মতি না থাকলে স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করা
যাবে। নেপালের সুপ্রিম কোর্ট বৈবাহিক সম্পর্কে ধর্ষণের আইনি সমাধান পেতে আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধন করার নির্দেশ দিয়েছিল সে দেশের পার্লামেন্টকে। কলিনের বক্তব্য, ‘‘নেপালে আদালত যদি মনে করে কোনও আইন ভুল তবে তারা উপযুক্ত আইন তৈরি করতে পার্লামেন্টকে নির্দেশ দেয়। ভারতে মনে করা হয় আদালত উপযুক্ত আইন তৈরির নির্দেশ দিতে পারে না।’’ সোমবার ফের এই মামলার শুনানি হবে।
বৈবাহিক সম্পর্ককে ফৌজদারি অপরাধের তকমা দেওয়ার দাবি আগেই উঠেছে। ২০১৬ সালে তৎকালীন মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রী মেনকা গাঁধী জানান, আর্থ-সামাজিক কারণে বৈবাহিক ধর্ষণের ধারণা ভারতে প্রয়োগ করা সম্ভব নয়।