ছবি: রয়টার্স
জামিন পেলেন না টুইটারে ‘টুলকিট’ শেয়ার করার জন্য গ্রেফতার হওয়া পরিবেশকর্মী দিশা রবি। পাশাপাশি এই মামলার শুনানিতে একগুচ্ছ প্রশ্ন তুলে আনল আদালত। সরাসরি দিল্লি পুলিশকে প্রশ্ন করল, ‘‘এই টুলকিট শেয়ার করার মাধ্যমে কী ভাবে দেশদ্রোহিতার মতো গুরুতর অপরাধ করলেন দিশা? এর স্পষ্ট কোনও যুক্তি আছে, নাকি পুরোটাই সন্দেহের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে?’’
দিশা শনিবার স্পষ্টই আদালতে জানিয়েছেন, ‘‘আমি কর্নাটকের বাসিন্দা ২১ বছরের দিশা রবি। আমার সঙ্গে কোনও ভারত বিরোধী শক্তির যোগাযোগ নেই। পুলিশ একটিও চ্যাট দেখাতে পারবে না, যেখানে আমি সরাসরি খলিস্তানপন্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেছি।’’
শনিবার দিশার আইনজীবী জামিনের আবেদন করে বলেন, এই টুলকিট একটি সামান্য তথ্যপত্র মাত্র, এর দ্বারা কিছু প্রমাণিত হয় না। পাল্টা দিল্লি পুলিশ তখন অভিযোগ করে, টুলকিটে দেওয়া ছিল একটি বিশেষ ওয়েবসাইটের লিঙ্ক, যেটির মাধ্যমে খালিস্তানপন্থীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হত। সেই কারণেই এটিকে দেশদ্রোহিতার অংশ বলা হচ্ছে।
দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে আরও অভিযোগ করা হয়েছিল, তদন্তে সাহায্য করছেন না দিশা রবি। দিশার থেকে প্রাপ্ত কম্পিউটার হার্ডডিস্ক পরীক্ষা করার জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, সেখান থেকে বেশ কিছু জিনিস ডিলিট করা হয়েছে। একে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা হিসাবে চিহ্নিত করা যেতে পারে।
এ সব শুনেই বিচারপতি ধর্মেন্দ্র রাও প্রশ্ন করেন, কী করে দুই অপরিচিত ব্যক্তির মধ্যে দেশদ্রোহিতার ষড়যন্ত্র চালানোর মতো যোগসূত্র তৈরি হতে পারে? পুলিশ পাল্টা বলে, খালিস্তানপন্থী নেতা এমও ধালিওয়ালকে সবাই চেনে। বিচারপতি বলেন, "না, আমরা চিনি না।" পাশাপাশি আদালত প্রশ্ন তোলে, ২৬ জানুয়ারিতে ঘটা দিল্লির গোলযোগের সঙ্গে দিশা রবির পোস্ট করা টুলকিটটির যোগ কোথায়? পুলিশ বলে, এই প্রকার ঘটনায় সকলের একই ভূমিকা থাকে না। হতে পারে, টুলকিটটির জন্য কেউ না কেউ হামলায় ইন্ধন পেয়েছে।
তখনই আদালত বলে, এ ভাবে সম্ভাবনার ভিত্তিতে কোনও কিছু বলা যায় না। পুলিশের কাছে এই বিষযে স্পষ্ট কোনও প্রমাণ আছে, নাকি সবটাই সম্ভাবনার উপর ভিত্তি করে বলা হচ্ছে? পাশাপাশি শনিবার আদালত ‘টুলকিট’ বিষয়টি ঠিক কী, সেই বিষয়েও বিস্তারিত জানতে চায়। সরকারি আইনজীবী জানান, এই প্রচার পুস্তিকার মতো তৈরি টুলকিটটির মাধ্যমে ভারতের বিরুদ্ধে প্রচার চালানো হচ্ছে। কৃষক আন্দোলনের অছিলায় ভারত বিদ্বেষী মতামত তৈরির করার জন্যই এটি ব্যবহার করা হচ্ছে। এই গোটা বিষয়টির জন্যই দিশা রবিকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে পুলিশ। শেষ পর্যন্ত দিশার জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়।