ত্রিপুরায় কালোবাজারিদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে অধিকাংশ জ্বালানি। করিমগঞ্জের জাতীয় সড়কের বেহাল অবস্থার অজুহাতে কালোবাজারিরা মজুত রাখছে তেল। আজ এই চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেন করিমগঞ্জের জেলাশাসক মনোজ কুমার ডেকা।
গত কাল লোয়াইরপোয়া-চুরাইবাড়ি এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন জেলাশাসক। জাতীয় সড়কে কোন গাড়ি আটকে থাকবে না বলে ফরমান জারি করেছিলেন তিনি। দীর্ঘ দিন ধরে আটকে থাকা ত্রিপুরামুখী গাড়িগুলি আশ্চর্যজনক ভাবে খালি হয়ে যায় আজ। আজ দুপুরেই এনএইচ ডিভিশনের ইঞ্জিনিয়ার মলয় দেব করিমগঞ্জের জেলাশাসককে ফোনে জানান, ৮ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি গাড়িও দাঁড়িয়ে নেই। তিনমাস পরে প্রসাসন তৎপর হতেই সম্ভবত আজই প্রথম বৈঠাখাল থেকে চুরাইবাড়ি পর্যন্ত কোন ট্রাক-ট্যাঙ্কার-গাড়িকে জাতীয় সড়কে আটকে পড়ে থাকতে দেখা যায়নি।
জেলাশাসক বলেন, গত কাল তিনি লোয়াইরপোয়া এলাকায় ১৭০টি গাড়ি ত্রিপুরায় রওয়ানা করিয়ে দেন। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ১৫-২০টি তেলের ট্যাঙ্কারও ত্রিপুরায় চলে যায়। রাস্তায় প্রচুর পরিমাণে তেলের ট্যাঙ্কার আটকে না থাকলেও ত্রিপুরার পেট্রোল পাম্পগুলিতে ব্যাপক মাত্রায়
তেলের সঙ্কট দেখা দিয়েছিল। জেলাশাসকের মতে, ত্রিপুরায় তেলের সংকট ছিল কৃত্রিম। তাঁর ধারণা, কালোবাজারিদের একাংশ অধিক মুনাফা লোভে তেল অন্যত্র মজুত করছে। তা না হলে ত্রিপুরায় তেলের সংকট হতেই পারে না।
তাঁর মতে, তবে বিগত দু’দিন অসমের তেলের ডিপো বন্ধ ছিল। সে জন্য ত্রিপুরায় কিছুটা জ্বালানির সঙ্কট দেখা দিতে পারে। তাই বলে একেবারে হাহাকার পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার কথা নয়। কারণ করিমগঞ্জের ৮ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি ট্যাঙ্কারও আটকে নেই। তিনি এ নিয়ে ধর্মনগরের জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বলে জানান।
ধর্মনগরের জেলাশাসককে মলয়বাবু জানিয়েছেন, করিমগঞ্জের রাস্তায় কোন গাড়ি দাঁড়িয়ে না থাকলেও ত্রিপুরার সেল ট্যাক্স গেটে অসংখ্য গাড়ি আটকে আছে বলে তাঁর কাছে খবর রয়েছে।
তাই সেগুলি চটজলদি ছাড়ানোর ব্যবস্থা করলে সমস্যা আর অনেক কমে যাবে। পরে ধর্মনগরের জেলাশাসক কাঁঠালতলি রাস্তায় ১৪৪ ধারা জারি করতে করিমগঞ্জের জেলাশাসক মনোজ কুমার ডেকার কাছে অনুরোধ করেছিলেন। সেই পথে শুধুমাত্র জ্বালানি নিয়ে যাওয়া গাড়িগুলির ছাড়পত্র দিতে বলেছিলেন। কিন্তু সেই অনুরোধ রাখতে গেলে অসম-ত্রিপুরার উভয় রাজ্যের যাত্রীদের বেজায় অসুবিধে হবে বলে মনে করেন করিমগঞ্জের জেলাশাসক।
মনোজবাবুর মতে, করিমগঞ্জ-চুরাইবাড়ি রাস্তায় আজকের দিনে যদিও একটি গাড়ি আটকে নেই, কিন্তু অধিক বৃষ্টিপাত হলে রাস্তায় কাদার সৃষ্টি হতে পারে। এতে যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। সে সময় কাঁঠালতলির রাস্তাই ছোট গাড়ি চলাচলের একমাত্র ভরসা। অসম-ত্রিপুরার অনেক লোক প্রতিদিন আসা-যাওয়া করেন। কাঁঠালতলি রাস্তা যদি ছোট গাড়ি চলাচলে ১৪৪ ধারা বলবৎ করে বন্ধ করা হয় তাহলে ছোট গাড়ি নিয়ে মানুষ বিপাকে পড়বে। ফলে সেই প্রস্তাব আপাতত রাখতে পারছেন না বলে করিমগঞ্জের জেলাশাসক সংবাদ মাধ্যমকেও জানিয়ে দেন।