প্রতীকী ছবি।
দু’টি করোনা টিকা ইতিমধ্যেই দেশে অনুমোদন পেয়েছে। অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে জার্মানির তৈরি ফাইজারের টিকাও। যে টিকা প্রয়োগের অনুমোদন ইতিমধ্যেই দিয়েছে আমেরিকা ও ব্রিটেন। কিন্তু ভারতে অনুমোদন পেতে গেলে এ দেশে মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করতেই হবে এই টিকার, এমনটাই জানিয়ে দিল দেশের টিকা সংক্রান্ত টাস্ক ফোর্স।
ভারতে জরুরি ভিত্তিতে গণপ্রয়োগের অনুমোদন পেয়েছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ভারতীয় সংস্থা সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি ‘কোভিশিল্ড’ এবং ভারতীয় সংস্থা ভারত বায়োটেকের তৈরি ‘কোভ্যাক্সিন’। টিকা সংক্রান্ত টাস্ক ফোর্সের প্রধান তথা নীতি আয়োগের সদস্য ভি কে পল জানিয়েছেন, জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছে আরও দু’টি টিকা— ফাইজার এবং রাশিয়ার স্পুটনিক ভি।
ঘটনাচক্রে ভারতে ব্যবহারের জন্য সবচেয়ে আগে অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছিলেন ফাইজার কর্তৃপক্ষই। কিন্তু তাঁরা অনুমতি চেয়েছিলেন ভারতে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ ছাড়াই দেশে টিকা আমদানি ও বণ্টন করার। কিন্তু তাতে অনুমতি দেয়নি ভারতের সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন। এমনকি, পরবর্তী কালে ফাইজার কর্তৃপক্ষকে কেন্দ্র বৈঠকে ডাকলেও সেই বৈঠকে গরহাজির ছিলেন তাঁরা। ভি কে পল বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত সরকারের যা অবস্থান, তাতে টিকার অন্যতম পূর্বশর্ত হল, দেশে টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ বা ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করতেই হবে।’’ ফাইজারের ক্ষেত্রেও সেটা প্রযোজ্য, বলেছেন ভি কে পল।
আরও পড়ুন: ‘আশা করি নষ্ট করবেন না ২৬ জানুয়ারির অনুষ্ঠান’, ট্র্যাক্টর র্যালি নিয়ে রাজনাথ
আরও পড়ুন: ইমপিচমেন্ট: ট্রাম্পের মেয়াদ শেষের ১ দিন আগে বসছে সেনেট, কী হবে
কেন? কেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য, পাশ্চাত্যের সঙ্গে ভারতীয়দের জীবনশৈলি, শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া অনেকটাই আলাদা। ফলে পশ্চিমের দেশে তৈরি হওয়া টিকা এ দেশে কতটা কার্যকর হবে, কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে কি না, সে সব দেখে নেওয়ার আগে কোনও ভাবেই কোনও টিকাকে ছাড়পত্র দেওয়া যাবে না। যদিও ‘নিউ ড্রাগ অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল রুল ২০১৯’ অনুযায়ী সেই সব বিধিনিষেধে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে কিছু ছাড় দেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু কোভিড টিকার ক্ষেত্রে সরকার কোনও রকম ঝুঁকি নিতে রাজি নয়। তাই ফাইজারের ক্ষেত্রেও দেশে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ছাড়া প্রয়োগের অনুমোদন দেওয়া সম্ভব নয়।
কোভিশিল্ড যেমন সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে যৌথ ভাবে দেশে প্রায় ১৫০০ মানুষের উপর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করেছে। প্রথম দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে কয়েক হাজার মানুষের উপর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করেছে ভারত বায়োটেকও। তার পরেই অনুমোদন পেয়েছে দুই সংস্থা। তবে ভারতে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাশিয়ার ‘স্পুটনিক ভি’। চলছে তৃতীয় তথা শেষ ধাপের ট্রায়াল।
কিন্তু কোনও টিকার ফল খারাপ হলে? টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থা কি ক্ষতিপূরণ দেবে বা কোনও শাস্তি পাবে? ভি কে পল বলেছেন, ‘‘এমন পরিস্থিতিতে কাউকেই হাত ধুয়ে ফেলতে দেওয়া হবে না। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবেই। কোভিশিল্ডের ক্ষেত্রে এমন আবেদনও জমা পড়েছিল। অর্থাৎ টিকার ফল খারাপ হলেও কর্তৃপক্ষকে দায়বদ্ধ করা যাবে না। কিন্তু সেই আর্জি পত্রপাঠ খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।’’