ফাইল ছবি
বড় মাত্রায় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা রফতানি সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখছে ভারত। দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পরেই মোদী সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা তৈরি হচ্ছে। এটিই পৃথিবীর বৃহত্তম টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থা। সারা বিশ্বে সেরামের টিকা রফতানি করা হচ্ছে। কিন্তু আপাতত দেশে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য টিকার চাহিদা তৈরি হওয়ায় বড় সংখ্যার রফতানি বন্ধ করল ভারত।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ন্ত্রণে চলা ‘কোভ্যাক্স’ টিকা সরবরাহ উদ্যোগেও এর প্রভাব পড়তে চলেছে। বিশ্বের ৬৪টি নিম্ন আয়ের দেশে টিকা পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সেরাম থেকে ১ কোটি ৭০ লক্ষ করোনা টিকার ডোজ ইতিমধ্যে কোভ্যাক্স সংগঠনের হাতে পৌঁছেছে। কিন্তু আপাতত সেই সরবরাহ বন্ধ হতে চলেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকে একটি ই মেল-এর মাধ্যমে বলা হয়েছে, ‘রফতানির অনুমতি না পাওয়ার কারণে নিম্ন আয়ের দেশগুলিতে করোনার টিকা পৌঁছে দিতে হয়তো সাময়িক দেরি হতে পারে। যে টিকা মার্চ ও এপ্রিল মাসে সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে রফতানি হওয়ার কথাছিল, সেগুলি সামান্য দেরি করে পৌঁছবে বলেই মনে করা হচ্ছে’।
সরকারি সূত্রে খবর, গত বৃহস্পতিবার থেকে ভারত থেকে কোনও টিকা রফতানি করা হয়নি। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকেও নাম না করে এক আধিকারিক সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, ‘‘সকলেই একধাপ করে পিছিয়ে গিয়েছেন। স্থায়ী ভাবে না হলেও সাময়িক ভাবে।’’ তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকে আশা করা হয়েছে, ভারত সরকার দ্রুত এই সমস্যা কাটিয়ে ফের রফতানি শুরু করবে।
ভারতে করোনা সংক্রমণ নতুন করে বাড়ছে। দ্বিতীয় ঢেউয়ের দাপটে বেশ কয়েকটি রাজ্য কাবু হয়ে পড়েছে। তার মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করেছেন, এ বার থেকে ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে সাধারণ মানুষ টিকা পাবেন। স্বাভাবিক কারণে টিকার চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। সেই কারণে আপাতত রফতানি বন্ধ করতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার, প্রশাসনিক মহল সূ্ত্রে এমনই খবর পাওয়া গিয়েছে। সংক্রমণের তালিকায় ভারতের আগে এখন শুধু ব্রাজিল ও আমেরিকা আছে, রোজ বিপুল আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি চিন্তা বাড়াচ্ছে প্রশাসনের। টিকা সেই চিন্তা সামান্য হলেও কমাতে পারে, তাই আপাতত রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত।
অন্যদিকে, অক্সফোর্ডের টিকার একটি বিশেষ রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে আমেরিকায়। সেখানে দেখা গিয়েছে, মানবশরীরে টিকাটি ৭৬ শতাংশ কার্যকর। এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে একটি পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ভিত্তিতে নির্মিত রিপোর্টে বলা হয়, করোনা রোধে টিকাটি ৭৯ শতাংশ কার্যকর। মার্চে সেই তথ্য প্রকাশ করে রিপোর্ট প্রকাশ করায় আমেরিকার ওষুধ নির্মাতারা প্রশাসনের তোপের মুখে পড়ে। সেই কারণেই নতুন পরীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ পেল। ৩২ হাজারের বেশি মানুষের মধ্যে এই টিকা প্রয়োগ করে এই নতুন রিপোর্ট হাতে এসেছে।