দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২,৫৬,৬১১। গ্রাফিক-শৌভিক দেবনাথ।
দেশে রোজই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। সেই বৃদ্ধির ধারা আজও অব্যাহত। মোট আক্রান্তের নিরিখে ভারত আগেই ইটালি, স্পেনকে পিছনে ফেলেছিল। এ বার আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াল আড়াই লক্ষের গণ্ডি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ন’হাজার ৯৮৩ জন। এই বৃদ্ধির জেরে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল দু’লক্ষ ৫৬ হাজার ৬১১ জন। আক্রান্তের নিরিখে রাজ্যগুলির মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, দিল্লি ও গুজরাত। এর মধ্যে একা মহারাষ্ট্রই আক্রান্তের সংখ্যায় পিছনে ফেলল চিনকে।
আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধিতেও উদ্বেগ বাড়ছে দেশে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার থাবায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ২০৬ জনের। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, কোভিড-১৯-এর কারণে দেশে মোট মৃত্যু হল সাত হাজার ১৩৫ জনের। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মৃত্যু হয়েছে তিন হাজার ৬০ জনের। গুজরাতে এক হাজার ২৪৯ জনের। এর পর রয়েছে রাজধানী দিল্লি। সেখানে মোট ৭৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে মধ্যপ্রদেশ (৪১২), পশ্চিমবঙ্গ (৩৯৬), উত্তরপ্রদেশ (২৭৫), তামিলনাড়ু (২৬৯), রাজস্থান (২৪০) ও তেলঙ্গানা (১২৩)।
দেশে আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি মহারাষ্ট্রে। চিনের মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যাকে ছাপিয়ে গিয়েছে সে রাজ্যের মোট আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার সাত জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। এ নিয়ে সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ৮৫ হাজার ৯৭৫ জন। এর পরই তামিলনাড়ু। সেখানে মোট আক্রান্ত ৩১ হাজার ৬৬৭ জন। রাজধানী দিল্লিতে মোট ২৭ হাজার ৬৫৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। গুজরাতে মোট আক্রান্ত ২০ হাজার ৭০ জন।
চিনের মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যাকে ছাপিয়ে গিয়েছে মহারাষ্ট্রের আক্রান্তের সংখ্যা। গ্রাফিক-শৌভিক দেবনাথ।
রাজস্থান ও উত্তরপ্রদেশেও মোট আক্রান্তের সংখ্যা দশ হাজার ছাড়িয়ে গেল। কোভিডে রাজস্থানে ১০ হাজার ৫৯৯ জন ও উত্তরপ্রদেশে ১০ হাজার ৫৩৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ (৯,৪০১), পশ্চিমবঙ্গ (৮,১৮৭), কর্নাটক (৫,৪৫২), বিহার (৫,০৮৮), অন্ধ্রপ্রদেশ (৪,৭০৮), হরিয়ানা (৪,৪৪৮), জম্মু ও কাশ্মীর (৪,০৮৭), তেলঙ্গানা (৩,৫৮০), ওড়িশা (২,৮৫৬), পঞ্জাব (২,৬০৮), আসাম (২,৫৬৫), কেরল (১,৯১৪), উত্তরাখণ্ড (১,৩৫৫), ঝাড়খণ্ড (১,০৯৯) ও ছত্তীসগঢ় (১,০৭৩)-এর মতো রাজ্যগুলি।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪৯ জন। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন আট হাজার ১৮৭ জন। এ রাজ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ৩৯৬ জনের। যদিও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হিসাব অনুসারে, সরাসরি করোনার কারণে রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩২৪ জনের। ৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে কোমর্বিটিডিতে। করোনার কারণে গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ১৫ অগস্টের পরে খুলবে স্কুল-কলেজ বললেন পোখরিয়াল
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা রোজদিন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়লেও, আক্রান্তদের সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাটাও কম না। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এটাই কিছুটা আশার আলো। কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর এখনও অবধি এক লক্ষ ২৪ হাজার ৯৫ জন সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন চার হাজার ৮০২ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)