গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
দেশে রোজ ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১০ হাজার ৬৬৭ জনের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন তিন লক্ষ ৪৩ হাজার ৯১ জন। মহারাষ্ট্রে আক্রান্ত লাখের ঘরে ঢুকে পড়েছে আগেই। তামিলনাড়ু ও দিল্লি পাল্লা দিয়ে ছুটছে পঞ্চাশ হাজারের দিকে।
আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যু সংখ্যাও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। মোট মৃত্যুর নিরিখে বেলজিয়ামকে টপকে বিশ্বের অষ্টম স্থানে ভারত। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার থাবায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ৩৮০ জনের। দেশে মোট মৃত্যু হল ন’হাজার ৯০০ জনের। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মৃত্যু হয়েছে চার হাজার ১২৮ জনের। গুজরাতে এক হাজার ৫০৫ জনের। রাজধানী দিল্লিতেও মৃত্যু সংখ্যা ধারাবাহিক ভাবে বাড়ছে। সেখানে এক হাজার ৪০০ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা। পাঁচশোর গণ্ডি না পেরিয়েও মৃত্যুতে দেশের চতুর্থ স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এ রাজ্যে মোট মৃত ৪৮৫ জন। এর পর তালিকায় রয়েছে তামিলনাড়ু (৪৭৯), মধ্যপ্রদেশ (৪৬৫), উত্তরপ্রদেশ (৩৯৯), রাজস্থান (৩০১), তেলঙ্গানা (১৮৭) ও হরিয়ানা (১০০)।
আক্রান্তের শীর্ষে থাকা মহারাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় দু’হাজার ৭৮৬ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন এক লক্ষ ১০ হাজার ৭৪৪ জন। এর পরই তামিলনাড়ু। সেখানে মোট আক্রান্ত ৪৬ হাজার ৫০৪ জন। রাজধানী দিল্লিতে মোট ৪২ হাজার ৮২৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। গুজরাতে মোট আক্রান্ত ২৪ হাজার ৫৫ জন।
উত্তরপ্রদেশ ১৩, রাজস্থান ১২, পশ্চিমবঙ্গ ১১ ও মধ্যপ্রদেশ ১০ হাজারের গণ্ডি পার করে এগোচ্ছে। পাঁচ হাজার সংক্রমণ গণ্ডি পেরিয়েছে হরিয়ানা (৭,৭২২), কর্নাটক (৭,১২৩), বিহার (৬,৬৫০), অন্ধ্রপ্রদেশ (৬,৪৫৬), জম্মু ও কাশ্মীর (৫,২২০) ও তেলঙ্গানা (৫,১৯৩)। এর পর রয়েছে, অসম (৪,১৫৮), ওড়িশা (৪,০৫৫) পঞ্জাব (৩,২৬৭), কেরল (২,৫৪৩), উত্তরাখণ্ড (১,৮৪৫), ঝাড়খণ্ড (১,৭৬৩) , ছত্তীসগঢ় (১,৭৫৬) ও ত্রিপুরা (১,০৮৬)-র মতো রাজ্যগুলি।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
কলকাতা ও দুই ২৪ পরগনা ছাড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলিতেও বাড়ছে সংক্রমণ। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪০৭ জন। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ১১ হাজার ৪৯৪ জন। এ রাজ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ৪৮৫ জনের।
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা রোজদিন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়লেও, আক্রান্তদের সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাটাও বাড়ছে। অ্যক্টিভ রোগীর সংখ্যার থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাটা এখন বেশি। কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর এখনও অবধি এক লক্ষ ৮০ হাজার ১৩ জন সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন দশ হাজার ২১৫ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)