আক্রান্তের নিরিখে রাজ্যগুলির মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, দিল্লি ও গুজরাত।
দেশে রোজই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। সেই বৃদ্ধির ধারা বুধবারও অব্যাহত। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ন’হাজার ৯৮৫ জন। এই বৃদ্ধির জেরে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল দু’লক্ষ ৭৬ হাজার ৫৮৩ জন। আক্রান্তের নিরিখে রাজ্যগুলির মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, দিল্লি ও গুজরাত।
আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যু সংখ্যা বৃদ্ধিতেও উদ্বেগ বাড়ছে দেশে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার থাবায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ২৭৯ জনের। কোভিড-১৯-এর কারণে দেশে মোট মৃত্যু হল সাত হাজার ৭৪৫ জনের। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মৃত্যু হয়েছে তিন হাজার ২৮৯ জনের। গুজরাতে এক হাজার ৩১৩ জনের। এর পর রয়েছে রাজধানী দিল্লি। সেখানে মোট ৯০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে মধ্যপ্রদেশ (৪২০), পশ্চিমবঙ্গ (৪১৫), তামিলনাড়ু (৩০৭), উত্তরপ্রদেশ (৩০১), রাজস্থান (২৫৫) ও তেলঙ্গানা (১৪৮)।
দেশে আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি মহারাষ্ট্রে। চিনের মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যাকে আগেই ছাপিয়ে গিয়েছিল সে রাজ্যের মোট আক্রান্তের সংখ্যা। এ বার চিনের উহান প্রদেশের মোট আক্রান্তের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেল মুম্বইয়ের মোট আক্রান্তের সংখ্যা। চিনা সরকারের তথ্য অনুসারে, উহানে আক্রান্ত হয়েছেন ৫০ হাজার ৩৩৩ জন। মুম্বইয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে ৫১ হাজার। গত ২৪ ঘণ্টায় দু’হাজার ২৫৯ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। এ নিয়ে সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ৯০ হাজার ৭৮৭ জন। এর পরই তামিলনাড়ু। সেখানে মোট আক্রান্ত ৩৪ হাজার ৯১৪ জন। রাজধানী দিল্লিতে মোট ৩১ হাজার ৩০৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। গুজরাতে মোট আক্রান্ত ২১ হাজার ১৪ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
রাজস্থান ও উত্তরপ্রদেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দশ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। কোভিডে উত্তরপ্রদেশে ১১ হাজার ৩৩৫ জন ও রাজস্থানে ১১ হাজার ২৪৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ (৯,৮৪৯), পশ্চিমবঙ্গ (৮,৯৮৫), কর্নাটক (৫,৯২১), বিহার (৫,৪৫৯), হরিয়ানা (৫,২০৯), অন্ধ্রপ্রদেশ (৫,০৭০), জম্মু ও কাশ্মীর (৪,৩৪৬), তেলঙ্গানা (৩,৯২০), ওড়িশা (৩,১৪০), অসম (২,৯৩৭), পঞ্জাব (২,৭১৯), কেরল (২,০৯৬), উত্তরাখণ্ড (১,৫৩৭), ঝাড়খণ্ড (১,৪১১) ও ছত্তীসগঢ় (১,২৪০)-র মতো রাজ্যগুলি।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে সংক্রমণ বাড়ছে, ভোগান্তিও
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭২ জন। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন আট হাজার ৯৮৫ জন। শেষ ক’দিনে কলকাতা, হাওড়া, দুই পরগনা ছাড়িয়ে রাজ্যের অন্য জেলাগুলিতেও করোনার পজিটিভের সংখ্যা বেড়েছে। এ রাজ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ৪১৫ জনের। এদের মধ্যে ২৭৫ জনের শরীরে কোমর্বিডিটির লক্ষণ ছিল। করোনার কারণে গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা রোজ বাড়লেও, আক্রান্তদের সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাটাও কম নয়। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এটাই কিছুটা আশার আলো। কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর এখনও অবধি এক লক্ষ ৩৫ হাজার ২০৬ জন সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন পাঁচ হাজার ৯৯১ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)