গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৪৭ হাজার ৬৩৮ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
দিন দশেক পর বৃহস্পতিবার ফের ৫০ হাজার ছাড়িয়েছিল দেশের দৈনিক করোনা সংক্রমণ। আজ তা কমে ৪৭ হাজারে নেমেছে। বাকি রাজ্যগুলিত কম থাকলেও কেরল ও দিল্লির দৈনিক সংক্রমণ আজও সাড়ে ৬ হাজারের বেশি।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৪৭ হাজার ৬৩৮ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত হলেন ৮৪ লক্ষ ১১ হাজার ৭২৪ জন। সেখানে প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকাতে মোট আক্রান্ত ৯৬ লক্ষ ৬ হাজার এবং তৃতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে ৫৬ লক্ষ ১ হাজার। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ব্রাজিলে দৈনিক সংক্রমণ উল্লেখযোগ্যভাবে কম। কিন্তু নির্বাচনী উত্তেজনার মধ্যেই আমেরিকা বাড়ছে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। গত কালের পর আজ আবারও দৈনিক সংক্রমণ ১ লক্ষের বেশি। গোটা করোনাকালে যা এখনও অবধি সর্বোচ্চ।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )
বেশ কয়েক দিন ধরে দেশের দৈনিক মৃত্যু ৫০০ নীচে থাকার পর গত দু’দিনে তা আবার একটু বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৬৭০ জনের। দেশে করোনা প্রাণ কেড়েছে ১ লক্ষ ২৪ হাজার ৯৮৫ জনের। এর প্রায় এক তৃতীয়াংশ মৃত্যুই মহারাষ্ট্রে। দ্বিতীয় ও তৃতীয়তে কর্নাটক এবং তামিলনাড়ু। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি। পঞ্জাব, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান, হরিয়ানাতেও মৃত্যু সংখ্যা উল্লেখযোগ্য।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
দেশে কোভিড আক্রান্তদের সুস্থ হওয়ার হার শুরু থেকেই আশাব্যঞ্জক। এখনও পর্যন্ত দেশে মোট ৭৭ লক্ষ ৬৫ হাজার ৯৬৬ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। যা গোটা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশের মোট আক্রান্তের প্রায় ৯২ শতাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সুস্থ হয়েছেন ৫৪ হাজার ১৫৭ জন। গত কয়েক দিনে নতুন আক্রান্তের থেকে সুস্থ বেশি হওয়ায় কমছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। এখন দেশে মোট সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৫ লক্ষ ২০ হাজার ৭৭৩ জন।
প্রতিদিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। আজ তা ৩.৯০ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ১২ লক্ষ ২০ হাজার ৭১১ জনের।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )
পশ্চিমবঙ্গ ৪ হাজারে সীমাবদ্ধ থাকলেও দিল্লি এবং কেরলে দৈনিক আক্রান্ত ঊর্ধ্বমুখী। দিল্লিতে ৬ হাজার ৭১৫ এবং কেরলে তা ৬ হাজার ৮২০। তবে কর্নাটক, তালিনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশে দৈনিক সংক্রমণ গত কয়েকদিনে অনেকটা কমেছে। মহারাষ্ট্রেও তা সাড়ে ৫ হাজারের আশপাশে। মোট আক্রান্তের নিরিখে যদিও শীর্ষে মহারাষ্ট্র। তার পর কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ, কেরল, দিল্লি এবং পশ্চিমবঙ্গ। ওড়িশার মোট আক্রান্ত ৩ লাখের কাছাকাছি। তেলঙ্গানা, বিহার, অসম, রাজস্থানেও মোট আক্রান্ত ২ লক্ষের বেশি।
পশ্চিমবঙ্গের মোট আক্রান্ত বাড়তে বাড়তে এখন ৩ লক্ষ ৯৩ হাজার ৫২৪। গত ২৪ ঘণ্টায় এখানে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৯৪৮ জন। করোনা এ রাজ্যে মোট প্রাণ কেড়েছে ৭ হাজার ১২২ জনের। তবে রাজ্যের সাড়ে ৩ লক্ষ কোভিড আক্রান্ত ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)