Coronavirus update

দৈনিক করোনা সংক্রমণ কমে ৭০ হাজার, কমল দৈনিক মৃত্যুও

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৭০ হাজার ৫৮৯ জন। প্রায় এক মাস পর দৈনিক সংক্রমণ এতটা কম হল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১০:৪৪
Share:

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ৭৭৬ জনের। এই মাসে এই প্রথম এক দিনে হাজার জনের কম মৃত্যু হল। গ্রাফিক-শৌভিক দেবনাথ।

দেশের দৈনিক করোনাভাইরাস সংক্রমণে বড়সড় পতন। ৮০-৯০ হাজারের গণ্ডিতে মাসখানেক ঘোরাঘুরির পর আজ তা নেমে এসেছে ৭০ হাজারে। দৈনিক মৃত্যুও কমেছে অনেকটাই। ৩ অগস্টের পর আজকের মৃত্যু সংখ্যা (৭৭৬) সবথেকে কম। পাশাপাশি সংক্রমণের হারও নেমে এসেছে ৬ শতাংশে।

Advertisement

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৭০ হাজার ৫৮৯ জন। গতকালের থেকে ১২ হাজার কম। প্রায় এক মাস পর দৈনিক সংক্রমণ এতটা কম হল। ওই সময়ের মধ্যে আমেরিকা ও ব্রাজিলে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৩৩ হাজার ৭৭৪ ও ১৩ হাজার ১৫৫। গত দেড় মাস ধরেই ওই দু’টি দেশের তুলনায় ভারতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি।

বাড়তে বাড়তে দেশের মোট আক্রান্ত ৬১ লক্ষ ছাড়াল। এখনও অবধি আক্রান্ত হয়েছেন ৬১ লক্ষ ৪৫ হাজার ২৯১ জন। সেখানে বিশ্বের আক্রান্তের তালিকায় প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকাতে মোট আক্রান্ত ৭১ লক্ষ ৪৮ হাজার ও তৃতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে ৪৭ লক্ষ ৪৫ হাজার।

Advertisement

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

কোভিড আক্রান্তদের সুস্থ হওয়ার হার ভারতে শুরু থেকেই আশাব্যাঞ্জক। এখনও পর্যন্ত দেশে মোট ৫১ লক্ষ ১ হাজার ৩৯৭ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। যা গোটা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশের মোট আক্রান্তের ৮২ শতাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সুস্থ হয়েছেন ৮৪ হাজার ৮৭৭ জন। দৈনিক আক্রান্তের থেকে সুস্থ বেশি হওয়ায় দেশে কমছে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা। এখন ভারতে অ্যাক্টিভ রোগী রয়েছেন ন’লক্ষ ৪৭ হাজার ৫৭৬ জন।

প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। গত কাল তা ১১ শতাংশে পৌঁছলেও আজ কমে হয়েছে ৬.১৮ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ১১ লক্ষ ৪২ হাজার ৮১১ জনের।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলির তুলনায় ভারতে মৃত্যুর হার কম হলেও, ইতিমধ্যেই ৯৫ হাজার ছাড়়িয়েছে এবং দিন দিন বেড়ে চলেছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ৭৭৬ জনের। এই মাসে এই প্রথম এক দিনে হাজার জনের কম মৃত্যু হল। এ নিয়ে দেশে মোট ৯৬ হাজার ৩১৮ জনের প্রাণহানি ঘটিয়েছে করোনা। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ৩৫ হাজার ৭৫১ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট মৃত্যু ন’হাজার ৩৮৩। তৃতীয় স্থানে থাকা কর্নাটকে মৃতের সংখ্যা আট হাজার ৬৪১। অন্ধ্রপ্রদেশে করোনা প্রাণ কেড়েছে পাঁচ হাজার ৭৪৫ জনের। উত্তরপ্রদেশ ও দিল্লিতে মোট মৃত্যু পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে বাড়ছে। পশ্চিমবঙ্গ (৪,৮৩৭), গুজরাত (৩,৪২৮), পঞ্জাব (৩,২৮৪) ও মধ্যপ্রদেশ (২,২৪২) মৃত্যু তালিকায় উপরের দিকে রয়েছে। রাজস্থান, হরিয়ানা, তেলঙ্গানা ও জম্মু ও কাশ্মীরের মোট মৃত্যুও এক হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। এর পর তালিকায় রয়েছে বিহার, ওড়িশা, ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, অসম, কেরল, উত্তরাখণ্ড, পুদুচেরী, গোয়া, ত্রিপুরার মতো রাজ্যগুলি।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

মোট আক্রান্তের তালিকায় শুরু থেকেই দেশের শীর্ষে মহারাষ্ট্র। দেশের মোট আক্রান্তের ২০ শতাংশেরও বেশি সেখানে। এখনও অবধি সাড়ে ১৩ লক্ষ জন আক্রান্ত হয়েছেন মহারাষ্ট্রে। ছ’লক্ষ ৮১ হাজার আক্রান্ত নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে অন্ধ্রপ্রদেশ। তামিলনাড়ু ও কর্নাটকে মোট আক্রান্ত যথাক্রমে পাঁচ লক্ষ ৮৬ হাজার ও পাঁচ লক্ষ ৮২ হাজার। উত্তরপ্রদেশে সংখ্যাটা তিন লক্ষ ৯০ হাজার। দিল্লিতেও দু’লক্ষ ৭৩ হাজার। পশ্চিমবঙ্গে এখনও অবধি দু’ লক্ষ ৫০ হাজার জন সংক্রমিত হয়েছেন। ওড়িশাতে গত কয়েক দিন ধরেই বল্গাহীনভাবে বেড়ে মোট আক্রান্ত হয়েছে দু’লক্ষ ১২ হাজার। তেলঙ্গানাতে তা এক লক্ষ ৮৯ হাজারে। গত কয়েক সপ্তাহে বিহারে (১.৭৯ লক্ষ) কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে করোনা সংক্রমণ। কিন্তু এ মাসে কেরলে দৈনিক সংক্রমণ বেশ লাগাম ছাড়া। যার জেরে সেখানে মোট আক্রান্ত হয়েছে এক লক্ষ ৭৯ হাজার। অসম (১.৭৩ লক্ষ), গুজরাত (১.৩৪ লক্ষ), রাজস্থান (১.৩০ লক্ষ), হরিয়ানা (১.২৫ লক্ষ), মধ্যপ্রদেশে (১.২২ লক্ষ), পঞ্জাব (১.১১ লক্ষ) আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তরাখন্ড, গোয়া, পুদুচেরি, ত্রিপুরা, হিমাচল প্রদেশের মতো রাজ্যগুলি।

পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণ সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই তিন হাজারের বেশি হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে তিন হাজার ১৫৫ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন দু’লক্ষ ৫০ হাজার ৫৮০ জন। যদিও এর মধ্যে দু’লক্ষ ১৯ হাজার রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৬ জনের। করোনার কবলে এ রাজ্যে এখনও অবধি প্রাণ হারিয়েছেন ৪ হাজার ৮৩৭ জন।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement