দেশের কোভিড পরিসংখ্যান। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
ব্রিটেন ফেরত ৬ ভারতীয়ের শরীরে করোনা ভাইরাসের নতুন স্ট্রেনের খোঁজ মেলার দিনই সরকারি তথ্য বলছে, আরও কমল দেশে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। মঙ্গলবার তা নেমে এসেছে ১৬ হাজারের ঘরে। জুন মাসের শেষ সপ্তাহে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা এই রকম ছিল। তার পর বেড়ে পৌঁছেছিল ১ লক্ষের দোরগোড়ায়। এখন আবার তা কমতে কমতে এখানে নেমেছে। সঙ্গে দৈনিক মৃত্যুও ২৫০-র আশপাশেই রয়েছে। সঙ্গে মোট আক্রান্তের প্রায় ৯৬ শতাংশই সুস্থ হয়েছেন। চুম্বকে এটাই দেশের করোনা চিত্র।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ হাজার ৪৩২ জন। এখনও অবধি দেশে মোট আক্রান্ত ১ কোটি ২ লক্ষ ২৪ হাজার ৩০৩ জন। মোট আক্রান্তে বিশ্বের প্রথম আমেরিকা। সেখানে মোট আক্রান্ত প্রায় ১ কোটি ৯৩ লক্ষ। গত ১ মাস ধরে প্রায় ২ লক্ষ মানুষ সেখানে রোজ আক্রান্ত হচ্ছেন। মঙ্গলবার তা একটু কমে ১ লক্ষ ৬৮ হাজারে নেমেছে। ভারতের পিছনে তৃতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলেও দৈনিক সংক্রমণ আমেরিকার তুলনায় নিয়ন্ত্রণে। সেখানে মোট আক্রান্ত ৭৫ লক্ষ ৪ হাজার।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )
করোনাভাইরাস দেশে এখনও অবধি ১ লক্ষ ৪৮ হাজার ১৫৩ জনের প্রাণ কেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত ২৫২ জন। দেশে মোট মৃত্যুর এক তৃতীয়াংশই মহারাষ্ট্রে (৪৯,৩০৫)। কর্নাটক এবং তামিলনাড়ুতে তা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে। দিল্লিতে ১০ হাজার পার করেছে। মৃত্যু তালিকার উপরের দিকে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ (৯,৬২৫), উত্তরপ্রদেশ (৮,৩২২), অন্ধ্রপ্রদেশও (৭,০৯৮)।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
এ সবের পাশাপাশি দেশে সুস্থতার হার শুরু থেকেই বেশি। মোট আক্রান্তের মধ্যে প্রায় ৯৮ লক্ষ ৭ হাজার ৫৬৯ জন সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ২৪ হাজার ৯০০ জন। এই সুস্থতার জেরে কমছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। কমতে কমতে তা হয়েছে ২ লক্ষ ৬৮ হাজার ৫৮১ জন। দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনা পরীক্ষা হয়েছে ৯ লক্ষ ৮৩ হাজার ৬৯৫ জনের। সংক্রমণের হার ১.৬৭ শতাংশ।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )
দেশের মোট আক্রান্তের মধ্যে ১৯ লক্ষ ২২ হাজার মহারাষ্ট্রের। দেশের মোট আক্রান্তের প্রায় ৫ ভাগের ১ ভাগ সেখানে। বাকি সব রাজ্যে মোট আক্রান্ত ১০ লক্ষের নীচে। কর্নাটকে ৯ লক্ষ ১৬ হাজার, অন্ধ্রে ৮ লক্ষ ৮১ হাজার, তামিলনাড়ুতে ৮ লক্ষ ১৫ হাজার। কেরলে ৭ লক্ষ ৪৩ হাজার, দিল্লিতে ৬ লক্ষ ২৩ হাজার। উত্তরপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে ৫ লক্ষের ঘরে মোট আক্রান্ত। বাকি রাজ্যগুলিতে ৩ লক্ষের গণ্ডিতে রয়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। দিল্লির দৈনিক আক্রান্ত গত ক’দিনে ৫০০-র আশপাশে নেমেছে। মহারাষ্ট্রেও তা ৩ হাজারের কম। কিন্তু কেরলে এখনও দৈনিক আক্রান্ত ৩-৫ হাজারের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে।
পশ্চিমবঙ্গে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ২৮ জন। এ রাজ্যে মোট আক্রান্ত ৫ লক্ষ ৪৮ হাজার ৪৭১ জন। যদিও এর মধ্যে ৫ লক্ষ ২৫ হাজার মানুষই সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)