দেশের কোভিড পরিসংখ্যান। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
বৃহস্পতিবারের মতো শুক্রবারও দেশের দৈনিক সংক্রমণ হল সাড়ে ১৬ হাজারের বেশি। এই নতুন আক্রান্তের অর্ধেকেরও বেশি মহারাষ্ট্রে। কেরলেও তা সাড়ে ৩ হাজারের বেশি। এ মাসের শুরুতে দেশের দৈনিক সংক্রমণ ১০-১২ হাজারে নেমেছিল। কিন্তু মহারাষ্ট্রে গত কয়েকদিনে সংক্রমণ বৃদ্ধি বদলে দিয়েছে সেই ছবি। পাশাপাশি দৈনিক মৃত্যুও এখন আবার ১০০-র ছাড়াচ্ছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর্মী এবং প্রথম সারির করোনা যোদ্ধাদের টিকাকরণও চলছে পুরোদমে। ইতিমধ্যেই ১ কোটি ৩০ লক্ষের বেশি মানুষকে করোনা টিকা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ হাজার ৫৭৭ জন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ কোটি ১০ লক্ষ ৬৩ হাজার ৪৯১ জন। এর মধ্যে ২১ লক্ষ ২৯ হাজার ৮২১ জনই মহারাষ্ট্রের। কেরলেও তা প্রায় সাড়ে ১০ লক্ষ। মহারাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৭০২ জন। কেরলে ৩ হাজার ৬৭৭ জন। পঞ্জাবেও গত কয়েকদিনে দৈনিক সংক্রমণ ৫০০ ছাড়াচ্ছে। গুজরাত, মধ্যপ্রদেশে ৫০০ না ছাড়ালেও তা বেড়েছে গত কয়েক দিনে। কেন্দ্রের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের নতুন সংক্রমণের ৮৯ শতাংশই হয়েছে মাত্র ৭টি রাজ্য থেকে। কয়েকটি রাজ্যের পরিস্থিতি খারাপ হলেও অধিকাংশ রাজ্যে কিন্তু কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সংক্রমণ।
দৈনিক মৃত্যু শুক্রবার হয়েছে ১২০ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যু হল ১ লক্ষ ৫৬ হাজার ৮২৫ জনের। দেশে মোট মৃত্যুর হার ১.৪২ শতাংশ। সুস্থতার হার সেখানে ৯৭.১৭ শতাংশ। করোনার জেরে দেশে মৃত্যুর হার অনেক কম। প্রচুর মানুষ সুস্থও হয়েছেন।
কেরল এবং মহারাষ্ট্র থেকে আসা ব্যক্তিদের করোনা পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক করেছে রাজস্থান। সেই পরীক্ষার ফল নেগেটিভ দেখালে তবেই ঢোকা যাবে রাজস্থানে। কয়েকটি রাজ্যের ক্ষেত্রে এই বিধি আরোপ করেছে পশ্চিমবঙ্গও।
পাশাপাশি দেশে টিকাকরণও চলছে জোরকদমে। ১ কোটি ৩৪ লক্ষ টিকা ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে। প্রথম দফার টিকা যারা নিয়েছিলেন তাঁদের একাংশ দ্বিতীয় দফার টিকাও নিয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে প্রথম এবং দ্বিতীয় দফা মিলিয়ে মোট ৮ লক্ষ ১ হাজার ৮৪০ জন টিকা পেয়েছেন। এ নিয়ে মোট টিকা পেলেন ১ কোটি ৩৪ লক্ষ ৭২ হাজার ৬৪৩ জন। এর মধ্যে প্রথম দফার টিকা দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ১৪ লক্ষ ৩৯ হাজার ৬৪৯ জনকে। দ্বিতীয় দফার টিকা দেওয়া হয়েছে ২০ লক্ষ ৩২ হাজার ৯৯৪ জনকে।
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)