১৩ হাজারেরও বেশি জন সুস্থ হলেন গত ২৪ ঘণ্টায়। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
ফি-দিন বাড়ছে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। এই সংক্রমণ বৃদ্ধি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে চিকিৎসক থেকে বিশেষজ্ঞদের। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬ হাজার ৯২২ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের নিরিখে যা সর্বাধিক। এক দিনে এত জন এর আগে সংক্রমিত হননি। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন চার লক্ষ ৭৩ হাজার ১০৫ জন। মহারাষ্ট্র, দিল্লি ও তামিলনাড়ু— দেশের মোট আক্রান্তের প্রায় ৬০ শতাংশই এই তিনটি রাজ্য থেকে।
করোনায় আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যুও বাড়াচ্ছে উদ্বেগ। করোনার থাবায় মৃত্যুর সংখ্যা ১৫ হাজার ছুঁইছুঁই। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত ১৪ হাজার ৮৯৪ জনের মৃত্যু হল করোনার কারণে। এর মধ্যে সাড়ে ছ’হাজারেরও বেশি মৃত্যু হয়েছে শুধু মহারাষ্ট্রেই। দিল্লিতেও বাড়তে বাড়তে সংখ্যাটা দু’হাজার তিনশোর পেরিয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা গুজরাতে মারা গিয়েছেন এক হাজার ৭৩৫ জন। তামিলনাড়ু (৮৬৬), উত্তরপ্রদেশ (৫৯৬), পশ্চিমবঙ্গ (৫৯১), মধ্যপ্রদেশ (৫৩৪)-এও মৃত্যুর সংখ্যা যথেষ্ট উদ্বেগের। এ ছাড়া শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে রাজস্থান (৩৭৫), তেলঙ্গানা (২২৫), হরিয়ানা (১৮৮), কর্নাটক (১৬৪), অন্ধ্রপ্রদেশ (১২৪) ও পঞ্জাব (১১৩)-র মতো রাজ্যগুলি।
আক্রান্ত ও মৃত্যু রোজদিন বাড়লেও সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাটাও স্বস্তি দিচ্ছে। এখন দেশে সুস্থ হয়ে ওঠা করোনা রোগীর সংখ্যা সক্রিয় করোনা আক্রান্তের চেয়ে বেশি। মোট আক্রান্তের অর্ধেকেরও বেশি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ১২ জন সুস্থ হয়েছেন। এক দিনে এত সংখ্যক রোগী এর আগে সুস্থ হননি। এ নিয়ে মোট দু’লক্ষ ৭১ হাজার ৬৯৭ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
গোড়া থেকেই দেশে করোনা সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র। সেখানে মোট আক্রান্ত এক লক্ষ ৪২ হাজার ৯০০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার ৮৯০ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন সে রাজ্যে। দিল্লিতেও রোজদিন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। আক্রান্তের নিরিখে সম্প্রতি তামিলনাড়ুকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে দেশের রাজধানী। সেখানে এখন মোট আক্রান্ত ৭০ হাজার ৩৯০ জন। তামিলনাড়ুতে ৬৭ হাজার ৪৬৮ জন। চতুর্থ স্থানে থাকা গুজরাতে মোট আক্রান্ত ২৮ হাজার ৯৪৩ জন।
করোনা সংক্রমণের হিসাবে এর পর রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা, অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্নাটক। এই সব রাজ্যগুলি ১০ হাজারের গণ্ডি পার করে এগিয়ে চলেছে। উত্তরপ্রদেশ (১৯,৫৫৭), রাজস্থান (১৬,০০৯), পশ্চিমবঙ্গ (১৫,১৭৩), মধ্যপ্রদেশ (১২,৪৪৮), হরিয়ানা (১২,০১০), তেলঙ্গানা (১০,৪৪৪), অন্ধ্রপ্রদেশ (১০,৩৩১) ও কর্নাটকে (১০,১১৮) জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে বিহার (৮,২০৯), জম্মু ও কাশ্মীর (৬,৪২২), অসম (৬,১৯৮), ওড়িশা (৫,৭৫২), পঞ্জাব (৪,৬২৭), কেরল (৩,৬০৩)-র মতো রাজ্যগুলি।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৪৫ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন এ রাজ্যে। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত হলেন ১৫ হাজার ১৭৩ জন। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মোট ৫৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে রাজ্যে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)