গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
দেশের দৈনিক করোনা সংক্রমণ মঙ্গলবারও ৪০ হাজার ছাড়াল। যদিও সোমবারের তুলনায় তা প্রায় ৬ হাজার কম। সংক্রমণের নিরিখে শীর্ষে মহারাষ্ট্র। এ ভাবে সংক্রমণ বাড়তে থাকলে ফের সেখানে লকডাউন জারি করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন সে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এই পরিস্থিতির মধ্যেই দেশজুড়ে জোরকদমে চলছে টিকাকরণ।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশে এখনও অবধি কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ১৬ লক্ষ ৮৬ হাজার ৭৯৬ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৪০ হাজার ৭১৫ জন। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস প্রাণ কেড়েছে ১৯৯ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ১ লক্ষ ৬০ হাজার ১৬৬ জন প্রাণ হারালেন। দেশে মৃত্যুর হার ১.৩৭ শতাংশ।
দেশের মধ্যে সবথেকে বেশি সংক্রমণ হচ্ছে মহারাষ্ট্রে। গত বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের পরিস্থিতি ফের দেখা যাচ্ছে সেখানে। গত ২৪ ঘণ্টায় সে রাজ্যে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ২৪ হাজার ৬৪৫ জন। যদিও কেরলে লাগামছাড়া পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। সেখানে দৈনিক সংক্রমণ দেড় হাজারে নীচে নেমে গিয়েছে। কর্নাটক, তামিলনাড়ু, ছত্তীসগঢ়, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশে দৈনিক আক্রান্ত দেড় হাজারের আশপাশে। যত দিন যাচ্ছে পঞ্জাবের পরিস্থিতি তত খারাপ হচ্ছে। দৈনিক সংক্রমণ সেখানে গত কয়েক দিন ধরেই দু’হাজারের উপরে। হরিয়ানা এবং দিল্লিতেও ৯০০-র কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে দৈনিক সংক্রমণ।
দৈনিক সংক্রমণের বৃদ্ধির জেরে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বাড়তে বাড়তে তা ৩ লক্ষ ৪৫ হাজার ছাড়িয়েছে। যদিও এ বছরের শুরু থেকে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা কমছিল। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বদলে দিয়েছে পরিস্থিতি। রাস্তাঘাটে জনসাধারণেরও মধ্যেও কোভিড সতর্কতাবিধি পালনে শিথিলতা চোখে পড়ছে। ভিড় ট্রেনে বা বাসে অনেকের মুখেই দেখা যাচ্ছে না মাস্ক। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা করোনার দ্বিতীয় ঢেউ রুখতে টিকাকরণের পাশাপাশি কোভিড সতর্কতাবিধি পালনেও জোর দিচ্ছেন। কিন্তু তবুও ভিড়ের গাদাগাদি কমছে না। যেমন কর্নাটকে গত কয়েকদিনে আক্রান্ত বাড়লেও, সেখানকার চিত্রদুর্গ জেলাতে একটি ছবির প্রচার ঘিরে যে ভিড়ের চিত্র দেখা গিয়েছে সোমবার তা কপালে ভাঁজ ফেলতে যথেষ্ট। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়েও অফলাইন ক্লাস বাতিল করা হয়েছে।
যদিও গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার টিকা দেওয়া হয়েছে ৩৪ লক্ষেরও বেশি জনকে। এ নিয়ে দেশে মোট ৪ কোটি ৮৪ লক্ষ ৯৪ হাজার ৫৯৪ টিকার ডো়জ দেওয়া হয়েছে। এমসের ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়া দেশের মানুষের কাছে কোভিড টিকা আরও সহজলভ্য করার পক্ষে সওয়াল করেছেন। তবে বয়স্কদের আগে কমবয়সীদের টিকা দেওয়া ভুল বলে মনে করেন তিনি। কারণ, সংক্রমিত হওয়ার পর মৃত্যুর আশঙ্কা যাঁদের বেশি, তাঁদের টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।