এখনও পর্যন্ত মোট ২৮ লক্ষ ৩৯ হাজার ৮৮২ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
দিন পাঁচেক ৭৫-৭৮ হাজারের গণ্ডিতে ঘোরাফেরা করে মঙ্গলবার ৭০ হাজারের নীচে নামল ভারতে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। দৈনিক মৃত্যুও বেশ কিছুদিন পর ৮০০ ঘরে সীমাবদ্ধ থাকল। গত কালের তুলনায় দেশে করোনা পরীক্ষা হয়েছে এক লক্ষের বেশি। সংক্রমণ হারও কমে সাত শতাংশে নেমেছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৬৯ হাজার ৯২১ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। যার জেরে দেশের মোট আক্রান্ত হলেন ৩৬ লক্ষ ৯১ হাজার ১৬৬ জন। ওই সময়ের মধ্যে আমেরিকা ও ব্রাজিলে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৩৪ হাজার ২৭ ও ৪৫ হাজার ৯৬১ জন। অর্থাৎ আমেরিকা ও ব্রাজিলের তুলনায় ভারতে রোজ বেশি লোক নতুন করে করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। এই ধারা গত ১৫ দিন ধরেই অব্যাহত। আক্রান্তের নিরিখে বিশ্বে প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকাতে মোট আক্রান্ত ৬০ লক্ষ ২৯ হাজার ও দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে ৩৯ লক্ষ ৮ হাজার।
প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে সেটাকেই বলা হচ্ছে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমণ হার ৭.৩৭ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা হয়েছে ৯ লক্ষ ৪৮ হাজার ৪৬০ জনের। যা গত কালের থেকে এক লক্ষ বেশি।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আক্রান্তের সংখ্যা যেমন রোজ বাড়ছে, তেমনই প্রচুর মানুষ সুস্থও হয়ে উঠছেন। দেশে কোভিড রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যান শুরু থেকেই আশাব্যাঞ্জক। এখনও পর্যন্ত মোট ২৮ লক্ষ ৩৯ হাজার ৮৮২ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। অর্থাৎ দেশে মোট আক্রান্তের তিন চতুর্থাংশেরও বেশি সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৬৫ হাজার ৮১ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
স্পেন, ফ্রান্স, ইটালি, ব্রিটে
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
কোভিডে আক্রান্ত ও মৃত্যু দু’টি তালিকাতেই শুরু থেকেই শীর্ষে মহারাষ্ট্র। সেখানে মোট আক্রান্ত ৭ লক্ষ ৯২ হাজার ৫৪১ জন। তামিলনাড়ুকে পিছনে ফেলে সংক্রমণ তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে অন্ধ্রপ্রদেশ। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সেখানে দৈনিক আক্রান্ত হচ্ছে ১০ হাজার। সেখানে মোট আক্রান্ত চার লক্ষ ৩৪ হাজার ৭৭১ জন। তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত চার লক্ষ ২৮ হাজার। তামিলনাড়ুতে দৈনিক সংক্রমণ বৃদ্ধি আগের থেকে একটু কম হচ্ছে। চতুর্থ স্থানে থাকা কর্নাটকে মোট সংক্রমিত হয়েছেন তিন লক্ষ ৪২ হাজার। উত্তরপ্রদেশেও মোট আক্রান্ত দু’লক্ষ ৩০ হাজার। দিল্লি (১,৭৪,৭৪৮) ও পশ্চিমবঙ্গ (১,৬২,৭৭৮), বিহার (১,৩৬,৪৫৭) ও তেলঙ্গানাতে (১,২৭,৬৯৭) মোট আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। অসম ও ওড়িশাতে মোট আক্রান্ত এক লক্ষ ছাড়িয়েছে।
গুজরাতে মোট আক্রান্ত এখন ৯৬ হাজার ৩০০। রাজস্থানে সংখ্যাটা ৮০ হাজার ছাড়িয়েছে। কেরল ৭৫ হাজার পার করেছে। হরিয়ানা ও মধ্যপ্রদেশে মোট আক্রান্ত ৬০ হাজারের বেশি। পঞ্জাবে ৫৩ হাজার, জম্ম ও কাশ্মীরে ৩৭ হাজার ও ঝাড়খণ্ডে মোট আক্রান্ত ৪১ হাজার। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে, ছত্তীসগঢ়, উত্তরাখণ্ড, গোয়া, ত্রিপুরা। মণিপুর, হিমাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল প্রদেশের মতো রাজ্যে মোট আক্রান্ত ১০ হাজারের কম।
পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণ তিন হাজারের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। সোমবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুসারে, নতুন করে দু’হাজার ৯৯৩ জনের দেহে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ১ লক্ষ ৬২ হাজার ৭৭৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫২ জনের। করোনার কবলে এ রাজ্যে এখনও অবধি প্রাণ হারিয়েছেন ৩ হাজার ২২৮ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)