দেশের কোভিড পরিসংখ্যান। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
টানা ৪ দিন ১৬ হাজারের বেশি থাকার পর সোমবার দেশের দৈনিক সংক্রমণ ১৫ হাজারে নামল। কিন্তু মহারাষ্ট্রে সোমবারও দৈনিক আক্রান্ত ৮ হাজারের বেশি। এ নিয়ে টানা ৫ দিন মহারাষ্ট্রে দিনে ৮ হাজারের বেশি লোক আক্রান্ত হলেন। কোভিড ছড়িয়ে পড়া রুখতে মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন জেলায় জারি হয়েছে লকডাউন। সেই পথে হেঁটে তামিলনাড়ুতেও ৩১ মার্চ অবধি লকডাউন সংক্রান্ত বিধি-নিষেধের মেয়াদ বাড়িয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ১১ লক্ষ ১২ হাজার ২৪১ জন। এর মধ্যে ১৫ হাজার ৫১০ জন আক্রান্ত হয়েছেন গত ২৪ ঘণ্টায়। এই ১৫ হাজারের মধ্যে ৮ হাজার ২৯৩ জন মহারাষ্ট্রের। কেরলে তা ৩ হাজার ২৫৪ জন। পঞ্জাব, তামিলনাড়ু, কর্নাটকে ৫০০-র আশপাশে। রবিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছিল, দেশের দৈনিক আক্রান্তের ৮৬.৩৭ শতাংশই মহারাষ্ট্র, কেরল, পঞ্জাব, কর্নাটক, তামিলনাড়ু এবং গুজরাত— এই ৬টি রাজ্য থেকে।
দৈনিক সংক্রমণ বৃদ্ধির পাশাপাশি দৈনিক মৃত্যুও গত ৬ দিন ধরে একটানা ১০০ ছাড়াচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় তা ১০৬। এই মৃত্যুর অধিকাংশ মহারাষ্ট্র এবং কেরল থেকে। এ নিয়ে করোনা দেশে মোট ১ লক্ষ ৫৭ হাজার ১৫৭ জনের প্রাণ কাড়ল। দেশে মৃত্যুর হার ১.৪১ শতাংশ। এ বছরের শুরু থেকেই দৈনিক আক্রান্তের থেকে রোজ সুস্থ বেশি হওয়ায় দেশে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা নিয়মিত কমছিল। কিন্তু গত কয়েকদিনে তা পাল্টে গিয়েছে। দৈনিক আক্রান্ত বৃদ্ধির সঙ্গে সক্রিয় রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। এখন দেশে সক্রিয় রোগী রয়েছেন ১ লক্ষ ৬৮ হাজার ৬২৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সক্রিয় রোগী বেড়েছে ৪ হাজার ১১৬ জন।
মহারাষ্ট্রের হিঙ্গোলি জেলায় গত কয়েকদিনে লাফ দিয়ে বেড়েছে নতুন আক্রান্ত। যার জেরে ওই জেলায় ৭ মার্চ অবধি লকডাউন জারি করা হয়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় এবং জরুরিকালীন পরিষেবার সঙ্গে যুক্তদের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। লকডাউনের নিয়ম ভাঙলে কড়া শাস্তির হুশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে। বিধানসভা ভোটের আগে একই রকম কড়াকড়ি জারি রয়েছে তামিলনাড়ুতেও।
প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির মুখেই সোমবার থেকে দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে দ্বিতীয় দফার করোনা টিকাকরণ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও দিল্লির এমসে কোভ্যাক্সিনের প্রথম ডোজ নিয়েছেন।
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)