দেশে মোট আক্রান্ত হলেন ৫৩ লক্ষ ৮ হাজার ১৪ জন। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
৯০ হাজারের উপরেই থাকল দেশের দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। যদিও গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু চিন্তা বাড়িয়ে সংক্রমণের হার আজ ১০ শতাংশ ছাড়িয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৯৩ হাজার ৩৩৭ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। ওই সময়ের মধ্যে আমেরিকা ও ব্রাজিলে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৪৯ হাজার ২৯৯ ও ৩৯ হাজার ৭৯৭ জন। আমেরিকা ও ব্রাজিলের তুলনায় ভারতের দৈনিক সংক্রমণ অনেক বেশি। গত দেড় মাস ধরে এই ধারা অব্যাহত রয়েছে।
৯৩ হাজার বৃদ্ধির জেরে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন ৫৩ লক্ষ ৮ হাজার ১৪ জন। প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকায় মোট আক্রান্ত ৬৭ লক্ষ ২৩ হাজার ও তৃতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে মোট আক্রান্ত ৪৪ লক্ষ ৯৫ হাজার।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )
আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলির তুলনায় মৃত্যুর হার কম হলেও, ভারতে দিন দিন বাড়ছে মোট মৃত্যুর সংখ্যা। সেপ্টেম্বরের গোড়া থেকেই তা ধারাবাহিক ভাবে হাজারের উপরে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ২৪৭ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ৮৫ হাজার ৬১৯ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ৩১ হাজার ৭৯১ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট মৃত্যু সাড়ে আট হাজার ছাড়িয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা কর্নাটকে মৃতের সংখ্যা সাত হাজার ৮০৮। অন্ধ্রপ্রদেশেও মোট মৃত পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে বাড়ছে। দেশের রাজধানীতে সংখ্যাটা চার হাজার ৯০৭। উত্তরপ্রদেশ (৪,৮৬৯), পশ্চিমবঙ্গ (৪,২৪২), গুজরাত (৩,২৮৬) ও পঞ্জাব (২,৭০৮) মৃত্যু-তালিকার উপরের দিকে রয়েছে। মধ্যপ্রদেশ (১,৯০১), রাজস্থান (১,৩০৮), হরিয়ানা (১,০৯২), তেলঙ্গানা (১,০২৫) ও জম্মু ও কাশ্মীরে (৯৬৬) মোট মৃত্যু বেড়ে চলেছে। এর পর তালিকায় রয়েছে বিহার, ওড়িশা, ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, অসম, কেরল, উত্তরাখণ্ড, পুদুচেরী, গোয়া, ত্রিপুরার মতো রাজ্যগুলি।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আক্রান্ত ও মৃত্যু সংখ্যার মধ্যেই আশার আলো কোভিড রোগীদের সুস্থ হয়ে ওঠা। এখনও পর্যন্ত দেশে মোট ৪২ লক্ষ ৮ হাজার ৪৩১ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। অর্থাৎ দেশে মোট আক্রান্তের সাড়ে ৭৯ শতাংশই সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সুস্থ হয়েছেন ৯৫ হাজার ৮৮০ জন। এই মুহূর্তে দেশে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ১০ লক্ষ ১৩ হাজার ৯৬৪ জন।
প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। গত দু’দিন দেশের সংক্রমণ হার বেড়েছে। আজ তা ১০ শতাংশ। ১০.৫৮ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে পরীক্ষাও অনেক কম হয়েছে। ৮ লক্ষ ৮১ হাজার ৯১১ জনের।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )
কোভিডে আক্রান্ত ও মৃত্যু— দু’টি তালিকাতেই শুরু থেকে শীর্ষে মহারাষ্ট্র। সেখানে মোট আক্রান্ত ১১ লক্ষ ৬৭ হাজার। দ্বিতীয় স্থানে থাকা অন্ধ্রপ্রদেশে মোট আক্রান্ত ছ’লক্ষ পেরিয়েছে। তামিলনাড়ুতে মোট পাঁচ লক্ষ ৩০ হাজার জন আক্রান্ত হয়েছেন। চতুর্থ স্থানে থাকা কর্নাটকে মোট আক্রান্ত পাঁচ লক্ষ পেরলো। উত্তরপ্রদেশেও সংখ্যাটা তিন লক্ষ ৪২ হাজারে পৌঁছেছে। দিল্লিতে দু’লক্ষ ৩৮ হাজার। পশ্চিমবঙ্গে তা দু’লক্ষ ১৮ হাজার। তেলঙ্গানা, ওড়িশাতে মোট আক্রান্ত এক লক্ষ ৬৯ হাজার ও বিহারে এক লক্ষ ৬৫ হাজার পার করেছে। অসমে দেড় লক্ষ ছাড়িয়েছে মোট আক্রান্ত। গুজরাত, কেরল, রাজস্থান ও হরিয়ানাতে এক লক্ষ ছাড়িয়ে বাড়ছে। মধ্যপ্রদেশে মোট আক্রান্ত আজ এক লক্ষ ছাড়াল। পঞ্জাব (৯২ হাজার), ছত্তীসগঢ় (৮১ হাজার), ঝাড়খণ্ড (৬৮ হাজার), জম্মু ও কাশ্মীরে (৬১ হাজার) মোট আক্রান্ত উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে।
পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণ বেশ কিছু দিন ধরে তিন হাজারের বেশি হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে তিন হাজার ১৯২ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন দু’লক্ষ ১৮ হাজার ৭৭২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৯ জনের। করোনার কবলে এ রাজ্যে এখনও অবধি প্রাণ হারিয়েছেন চার হাজার ১৮৩ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)