দেশের করোনা পরিসংখ্যান। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
দেশের দৈনিক সংক্রমণ সোমবার এবং মঙ্গলবার কমে ছিল ৩০ হাজারের আশপাশে। বুধবার তা একটু হলেও বেড়েছে। হয়েছে সাড়ে ৩৮ হাজারের বেশি। তবে, দৈনিক মৃত্যু ৫০০-র কমই রয়েছে। সংক্রমণের হার গত দু’দিনের থেকে বেড়ে ৪ শতাংশ ছাড়িয়েছে। চুম্বকে দেশের এটাই করোনা চিত্র।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮ হাজার ৬১৭ জন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন ৮৯ লক্ষ ১২ হাজার ৯০৭ জন। এই সংখ্যক আক্রান্ত নিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় স্থান ভারতের। প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকার মোট আক্রান্ত ১ কোটি ছাড়িয়েছে। অক্টোবরের শেষ থেকেই আমেরিকাতে বাড়ছিল দৈনিক সংক্রমণ। গত ২ সপ্তাহ ধরে তা রোজই ১ লক্ষ ছাড়াচ্ছে। তুলনায় তৃতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে দৈনিক সংক্রমণ কিছুটা হলেও কম। লাতিন আমেরিকার ওই দেশে এখন পর্যন্ত ৫৯ লক্ষ ১১ হাজার ৭৫৮ জন কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )
করোনা এখনও অবধি ভারতে ১ লক্ষ ৩০ হাজার ৯৯৩ জনের প্রাণ কেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গিয়েছেন ৪৭৪ জন। দেশের মৃত্যুর এক তৃতীয়াংশ আবার মহারাষ্ট্রে। সেখানে প্রাণ গিয়েছে ৪৬ হাজার জনের। দেশের মৃত্যু তালিকায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে থাকা কর্নাটক এবং তামিলনাড়ুতে তা সাড়ে ১১ হাজার। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
ভারতে কোভিড আক্রান্তদের সুস্থ হওয়ার হার শুরু থেকেই আমেরিকা, ইউরোপের বিভিন্ন দেশের থেকে বেশি। এখনও পর্যন্ত দেশে মোট ৮৩ লক্ষ ৩৫ হাজার ১০৯ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। যা গোটা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশের মোট আক্রান্তের সাড়ে ৯৩ শতাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সুস্থ হয়েছেন ৪৪ হাজার ৭৩৯ জন। গত কয়েক দিনে নতুন আক্রান্তের থেকে সুস্থ বেশি হওয়ায় কমছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় তা কমেছে ৬ হাজার ৫৯৬। এখন দেশে মোট সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৪ লক্ষ ৪৬ হাজার ৮০৫ জন।
দেশের অধিকাংশ রাজ্যেই দৈনিক সংক্রমণ গত এক মাসে কমেছে। দিল্লি এবং কেরলে আজও তা ঊর্ধ্বমুখী। অন্য দিকে রাজস্থান, হিমাচল প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাতের মতো রাজ্যগুলিতে শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে খুব ধীরে হলেও ধারাবাহিক ভাবে বাড়ছে আক্রান্ত।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )
মাসখানেক ধরে একই গণ্ডিতে থাকার পর গত ২৪ ঘণ্টায় এক লাফে অনেকটা কমেছে পশ্চিমবঙ্গের দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৬৫৪ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন এ রাজ্যে। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ৪ লক্ষ ৩৮ হাজার ২১৭ জন। যদিও তার মধ্যে ৪ লক্ষ ৩ হাজার রোগী সুস্থও হয়েছেন। রাজ্যে দৈনিক মৃত্যুও সেই ৫০-৬০ এর মধ্যেই ঘোরাফেরা করে। এ ভাবে বাড়তে বাড়তে মোট মৃত্যু পৌঁছেছে ৭ হাজার ৭৬৬-তে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)