Coronavirus Update

সংক্রমণ বৃদ্ধির মধ্যেই আশার আলো, এক দিনে সুস্থ হলেন ৮৭ হাজার

দেশে ৫২ লক্ষ আক্রান্তের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৪১ লক্ষ। মোট ৮৪ হাজার ৩৭২ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনাভাইরাস।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১১:০০
Share:

দেশে মোট আক্রান্ত হলেন ৫২ লক্ষ ১৪ হাজার ৬৭৭ জন। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

দেশে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা গত কয়েক দিন ধরেই ৯০ হাজারের আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। আজ তা প্রায় সাড়ে ৯৬ হাজার। কোভিডের জেরে রোজ মৃত্যুও হচ্ছে ১,১০০-র বেশি। এ ভাবে বাড়তে বাড়তে মোট আক্রান্ত ৫২ লক্ষ ও মোট মৃত্যু ৮৪ হাজার ছাড়িয়েছে।

Advertisement

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৯৬ হাজার ৪২৪ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। ওই সময়ের মধ্যে আমেরিকা ও ব্রাজিলে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৪৪ হাজার ৫৩১ ও ৩৬ হাজার ৩০৩ জন। আমেরিকা ও ব্রাজিলের তুলনায় ভারতের দৈনিক সংক্রমণ অনেক বেশি। গত দেড় মাস ধরে এই ধারা অব্যাহত রয়েছে।

বৃহস্পতিবার ৯০ হাজার বৃদ্ধির জেরে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন ৫২ লক্ষ ১৪ হাজার ৬৭৭ জন। প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকায় মোট আক্রান্ত ৬৬ লক্ষ ৭৪ হাজার ও তৃতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে মোট আক্রান্ত ৪৪ লক্ষ ৫৫ হাজার।

Advertisement

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )

মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্নাটক— দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধিতে দেশের মধ্যে এগিয়ে এই তিনটি রাজ্য। মহারাষ্ট্রে দৈনিক সংক্রমণ আবারও ২৩-২৪ হাজার ছাড়িয়ে যাচ্ছে। অন্ধ্রপ্রদেশে অবশ্য ১০ হাজার থেকে নীচে নেমেছে দৈনিক সংক্রমণ। বিগত কয়েক দিন ধরে তা ন’হাজারের কম। কর্নাটকে সাড়ে ন’হাজারের বেশি লোক রোজ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। উত্তরপ্রদেশেও দৈনিক সংক্রমণ ধারাবাহিক ভাবে ৬ হাজারের বেশি। দিল্লিতেও সংখ্যাটা সাড়ে চার হাজারে কাছাকাছি। বিহার ও পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যাটা একই গণ্ডিতে আবদ্ধ আছে। কিন্তু ওড়িশা ও ছত্তীসগঢ়ে দৈনিক সংক্রমণ লাগামছাড়া ভাবে বাড়ছে। অসম, কেরল, পঞ্জাব, তেলঙ্গানা হরিয়ানা, রাজস্থান, গুজরাতের মতো রাজ্যগুলির দৈনিক সংক্রমণ নিয়ে চিন্তার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলির তুলনায় মৃত্যুর হার কম হলেও, ভারতে দিন দিন বাড়ছে মোট মৃত্যুর সংখ্যা। সেপ্টেম্বরের গোড়া থেকেই তা ধারাবাহিক ভাবে হাজারের উপরে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ১৭৪ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ৮৪ হাজার ৩৭২ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ৩১ হাজার ৩৫১ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট মৃত্যু হয়েছে সাড়ে আট হাজার ছাড়িয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা কর্নাটকে মৃতের সংখ্যা সাত হাজার ৬২৯। অন্ধ্রপ্রদেশেও মোট মৃত পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে বাড়ছে। দেশের রাজধানীতে সংখ্যাটা চার হাজার ৮৭৭। উত্তরপ্রদেশ (৪,৭৭১), পশ্চিমবঙ্গ (৪,১৮৩), গুজরাত (৩,২৭০) ও পঞ্জাব (২,৬৪৬) মৃত্যু তালিকায় উপরের দিকে রয়েছে। মধ্যপ্রদেশ (১,৮৭৭), রাজস্থান (১,২৯৩), হরিয়ানা (১,০৬৯), তেলঙ্গানা (১,০১৬) ও জম্মু ও কাশ্মীরে (৯৫১) মোট মৃত্যু বেড়ে চলেছে। এর পর তালিকায় রয়েছে বিহার, ওড়িশা, ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, অসম, কেরল, উত্তরাখণ্ড, পুদুচেরী, গোয়া, ত্রিপুরার মতো রাজ্যগুলি।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

আক্রান্ত ও মৃত্যু সংখ্যার মধ্যেই আশার আলো কোভিড রোগীদের সুস্থ হয়ে ওঠা। এখনও পর্যন্ত দেশে মোট ৪১ লক্ষ ১২ হাজার ৫৫১ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। অর্থাৎ দেশে মোট আক্রান্তের সাড়ে ৭৮.৮৬ শতাংশই সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সুস্থ হয়েছেন ৮৭ হাজার ৪৭২ জন। এই মুহূর্তে দেশে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ১০ লক্ষ ১৭ হাজার ৭৫৪ জন।

প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। গত দু’দিন ধরে দেশের সংক্রমণ হার ৮ শতাংশের নীচে। আজ তা কিছু বেড়ে হয়েছে ৯.৫৮ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে পরীক্ষা হয়েছে ১০ লক্ষ ৬ হাজার ৬১৫ জনের। যা গত তিন দিনের তুলনায় কম।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )

কোভিডে আক্রান্ত ও মৃত্যু— দু’টি তালিকাতেই শুরু থেকে শীর্ষে মহারাষ্ট্র। সেখানে মোট আক্রান্ত ১১ লক্ষ ৪৫ হাজার। দ্বিতীয় স্থানে থাকা অন্ধ্রপ্রদেশে মোট আক্রান্ত ছ’লক্ষ পেরলো। তামিলনাড়ুতে মোট পাঁচ লক্ষ ২৫ হাজার জন আক্রান্ত হয়েছেন। চতুর্থ স্থানে থাকা কর্নাটকে সংখ্যাটা চার লক্ষ ৯৪ হাজার। উত্তরপ্রদেশেও সংখ্যাটা তিন লক্ষ ৩৬ হাজারে পৌঁছেছে। দিল্লিতে দু’লক্ষ ৩৪ হাজার। পশ্চিমবঙ্গে তা দু’লক্ষ ১৫ হাজার। তেলঙ্গানা, ওড়িশাতে মোট আক্রান্ত এক লক্ষ ৬৭ হাজার ও বিহারে এক লক্ষ ৬৪ হাজার পার করেছে। অসমে আজ দেড় লক্ষ ছাড়াল। গুজরাত, কেরল, রাজস্থান ও হরিয়ানাতে এক লক্ষ ছাড়িয়েছে মোট আক্রান্তের সংখ্যা। মধ্যপ্রদেশে মোট আক্রান্ত এক লক্ষের দোরগোড়ার দাঁড়িয়ে। পঞ্জাব (৯০ হাজার), ছত্তীসগঢ় (৭৭ হাজার), ঝাড়খণ্ড (৬৭ হাজার), জম্মু ও কাশ্মীরে (৫৯ হাজার) মোট আক্রান্ত উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে।

পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণ বেশ কিছু দিন ধরে তিন হাজারের বেশি হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে তিন হাজার ১৯৭ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন দু’লক্ষ ১৫ হাজার ৫৮০ জন। যদিও এর মধ্যে এক লক্ষ ৮৭ হাজারেরও বেশি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৬০ জনের। করোনার কবলে এ রাজ্যে এখনও অবধি প্রাণ হারিয়েছেন চার হাজার ১৮৩ জন।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement