গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ১০ লক্ষ ৭৩ হাজার ১৪ জনের। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
কমছে দেশের দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে চূড়ান্তে পৌঁছেছিল দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। অক্টোবরের শুরু থেকেই তা কমছে। গত কাল ৬৬ হাজারে নেমেছিল। আজ আরও কমে হয়েছে ৫৫ হাজার। সেই সঙ্গে গত এক সপ্তাহ ধরে দৈনিক মৃত্যু সংখ্যার কম হওয়া তৈরি করছে স্বস্তির আবহাওয়া।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৫৫ হাজার ৩৪২ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। যার জেরে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন ৭১ লক্ষ ৭৫ হাজার ৮৮০ জন। ওই সময়কালে আমেরিকা ও ব্রাজিলে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৪১ হাজার ৫৭১ ও ৮ হাজার ৪২৯। বিশ্বের প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকাতে এখনও অবধি আক্রান্ত হয়েছেন ৭৮ লক্ষ ৪ হাজার জন। তৃতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে ৫১ লক্ষ ৩ হাজার জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )
দেশে কোভিড আক্রান্তদের সুস্থ হওয়ার হার শুরু থেকেই আশাব্যাঞ্জক। এখনও পর্যন্ত দেশে মোট ৬২ লক্ষ ২৭ হাজার ২৯৫ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। যা গোটা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশের মোট আক্রান্তের ৮৬ শতাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সুস্থ হয়েছেন ৭৭ হাজার ৭৬০ জন। গত কয়েক দিনে নতুন আক্রান্তের থেকে সুস্থ বেশি হওয়ায় কমছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। কমতে কমতে তা এখন আট লক্ষ ৩৮ হাজার ৭২৯।
প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। বিক্ষিপ্ত কিছুদিন বাদ দিলে সেপ্টেম্বর থেকেই সংক্রমণের হার ৬-৮ শতাংশের মধ্যেই ঘোরাফেরা করছে। আজ তা কমে হয়েছে ৫.১৬ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ১০ লক্ষ ৭৩ হাজার ১৪ জনের।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )
করোনাভাইরাস ভারতে ইতিমধ্যেই ১ লক্ষের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়েছে। যদিও ইউরোপ-আমেরিকার দেশ গুলির তুলনায় ভারতে মৃত্যুহার অনেক কম। গত কয়েকদিনে দৈনিক মৃত্যুও কমে এক হাজারের নীচে নেমেছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৭০৬ জন মারা গিয়েছেন। এ নিয়ে ১ লক্ষ ৯ হাজার ৮৫৬ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা। তার মধ্যে ৪০ হাজার ৫০৪ জন মারা গিয়েছেন মহারাষ্ট্রে। তামিলনাড়ু ও কর্নাটকে মোট মৃত্যু ১০ হাজার পেরিয়েছে। উত্তরপ্রদেশ ও অন্ধ্রপ্রদেশে মৃত্যু সংখ্যা ছ’হাজার ছাড়িয়ে বাড়ছে। দিল্লি ও পশ্চিমবঙ্গে তা সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি। গুজরাত, পঞ্জাবে সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়ে বেড়ে চলেছে করোনা প্রাণহানি। মধ্যপ্রদেশেও আড়াই হাজার ছাড়িয়েছে। হরিয়ানা, জম্মু ও কাশ্মীর, ছত্তীসগঢ়, তেলঙ্গানা, কেরল, ওড়িশাতে মোট মৃত্যু এক হাজার ছাড়িয়ে রোজই বাড়ছে। দেশের বাকি রাজ্যেগুলিতে মোট মৃত্যু এক হাজারের কম।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
মৃত্যুর মতো সংক্রমণের নিরিখেও দেশের শীর্ষে মহারাষ্ট্র। এখনও অবধি ১৫ লক্ষ লোক আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। যদিও দৈনিক সংক্রমণ সেখানে আগের থেকে অনেক কম। অন্ধ্রপ্রদেশ ৭ লক্ষ ৫৮ হাজার ও কর্নাটকে ৭ লক্ষ ১৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তামিলনাড়ুতে সংখ্যাটা সাড়ে ৬ লক্ষ ছাড়িয়েছে। ৪ লক্ষ ৩৯ হাজার আক্রান্ত নিয়ে দেশের পঞ্চম স্থানে উত্তরপ্রদেশ। তার পরই রয়েছে দিল্লি। সেখানে মোট আক্রান্ত তিন লক্ষ ১১ হাজার। পশ্চিমবঙ্গে ২ লক্ষ ৯৮ হাজার। শুরুর ঝটকা সামলে নিলেও ওনামের পর থেকেই কেরলে দৈনিক আক্রান্ত লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে যার জেরে সেখানে মোট আক্রান্ত ২ লক্ষ ৯৫ হাজারে পৌঁছেছে। ওড়িশা ২ লক্ষ ৫৪ হাজার ও তেলঙ্গানাতে ২ লক্ষ ১৪ হাজার জন এখনও অবধি আক্রান্ত হয়েছেন। বিহার, অসম, রাজস্থান, গুজরাতে মোট আক্রান্ত দেড় লক্ষ ছাড়িয়েছে। মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, হরিয়ানা, পঞ্জাবে মোট আক্রান্ত দেড় লক্ষের কম। ঝাড়খণ্ড, জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তরাখণ্ড, গোয়াতে মোট আক্রান্ত এখনও এক লক্ষ পেরোয়নি।
পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক আক্রান্ত গত মাসের থেকে বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৫৮৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন রাজ্যে। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত ২ লক্ষ ৯৮ হাজারে পৌঁছল। যদিও এর মধ্যে ২ লক্ষ ৬২ হাজার জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। রাজ্যে ৫ হাজার ৬৮২ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)