এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন সাত লক্ষ ৯৩ হাজার ৮০২ জন। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
নতুন করে সংক্রমণে বড় লাফ দিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছে গেল আট লক্ষের দোরগোড়ায়। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৬ হাজার ৫০৬ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের নিরিখে যা এখনও অবধি সর্বোচ্চ। এক দিনে এত সংখ্যক মানুষ এর আগে আক্রান্ত হননি। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন সাত লক্ষ ৯৩ হাজার ৮০২ জন।
আক্রান্ত বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশে করোনার জেরে মৃত্যুও ধারাবাহিক ভাবে বেড়ে চলেছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৪৭৫ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যু হল ২১ হাজার ৬০৪ জনের। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মৃত্যু হয়েছে ন’হাজার ৬৬৭ জনের। রাজধানী দিল্লিতে ধারাবাহিক ভাবে বেড়ে মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ২৫৮-তে। গুজরাতেও মৃত্যুর সংখ্যা দু’হাজার পার করল। সেখানে মোট দু’হাজার ৮ জন মারা গিয়েছেন। ধারাবাহিক ভাবে বাড়তে বাড়তে তামিলনাড়ুতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল এক হাজার ৭৬৫ জন। উত্তরপ্রদেশ (৮৬২), পশ্চিমবঙ্গ (৮৫৪) ও মধ্যপ্রদেশে (৬৩৪) মৃত্যুর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে রাজস্থান (৪৯১), কর্নাটক (৪৮৬), তেলঙ্গানা (৩৩১), হরিয়ানা (২৮৭), অন্ধ্রপ্রদেশ (২৭৭), পঞ্জাব (১৮৩), জম্মু ও কাশ্মীর (১৫৪) ও বিহার (১১৫)।
আক্রান্ত দ্রুত হারে বাড়লেও, ভারতে করোনা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যানটাও বেশ স্বস্তিদায়ক। আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাটা পাঁচ লক্ষ ছুঁইছুঁই। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ হাজার ১৩৫ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে মোট চার লক্ষ ৯৫ হাজার ৫১২ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হলেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি রুখে দিয়েছিল কেরল। কিন্তু মহারাষ্ট্রে তা বল্গাহীন ভাবেই বেড়েছে। গোড়া থেকেই এই রাজ্য কার্যত সংক্রমণের শীর্ষে ছিল। তার পর সময় যত গড়িয়েছে, এই রাজ্য নিয়ে সারা দেশের শঙ্কা বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় সাত হাজার নতুন সংক্রমণের জেরে সেখানে মোট আক্রান্ত হলেন দু’লক্ষ ৩০ হাজার ৫৯৯ জন। তামিলনাড়ু ও দিল্লির মোট সংক্রমণ এক লাখ পার করে ছুটছে। তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত এক লক্ষ ২৬ হাজার ৫৮১ জন। রাজধানী দিল্লিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লক্ষ সাত হাজার ৫১ জন।
লকডাউন উঠে যাওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গেও নতুন করে অনেক বেশি সংক্রমণ হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৮৮ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন এ রাজ্যে। যা ২৪ ঘণ্টার নিরিখে সর্বোচ্চ। এই প্রথম এক দিনে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছাড়াল বাংলায়। এই বৃদ্ধির জেরে মোট আক্রান্ত হলেন ২৫ হাজার ৯১১ জন। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মোট ৮৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে রাজ্যে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ২৭ জনের।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)