প্রতীকী ছবি
বাড়ি ফিরতে দেওয়ার দাবিতে গত কাল রাতে শয়ে শয়ে প্রবাসী শ্রমিক সুরতের রাস্তায় নেমে আসেন। বেশির ভাগই ওড়িশার। লসকানায় পথ অবরোধ করেন তাঁরা। গত ৩০ মার্চও বাড়ি ফেরার দাবিতে লকডাউন অমান্য করে পথে নামায় ৯০ জন পরিযায়ী শ্রমিককে গ্রেফতার করেছিল সুরত পুলিশ। এ দিনও প্রশাসনের তরফে কোনও আশ্বাস দেওয়া তো দূর, পুলিশ কড়া হাতে শ্রমিকদের হটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।
ক্ষোভের আঁচ বাড়ে এতে। শ্রমিকেরা পাথর ছুড়তে শুরু করেন। হাতের কাছে যা মিলেছে, আনাজের ঠেলা হোক বা গাড়ি, তাতেই আগুন ধরিয়ে দেন। দমকল এসে কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় গোটা চত্বরের আগুন নেভাতে পারলেও জল পড়েনি শ্রমিকদের ক্ষোভের আঁচে। সুরতের ডিসিপি রাকেশ বরোট ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, ‘‘৭০ জনকে আটক করা হয়েছে। ওই শ্রমিকেরা নিজ রাজ্যে বাড়িতে ফিরতে দেওয়ার দাবি করছেন।’’
সুরতের লসকানা এলাকায় ভিন্ রাজ্যের প্রচুর শ্রমিক আটকে রয়েছেন। কেউ কাজ করেন কাপড়কলে। কেউ নির্মাণ সংস্থায়। বেতন পাচ্ছেন না এঁরা। কাজও খুইয়েছেন অনেকে। এখানে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি যে খাবার জোগাচ্ছে, তা ‘একেবারেই বিস্বাদ’। তার জন্যও রোজ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় অনেক ক্ষণ করে। তবু এত দিন ধৈর্য্য ধরে ছিলেন সকলে। আশায় ছিলেন, ১৪ এপ্রিল ২১ দিনের লকডাউন শেষ হলে নিশ্চয়ই ফিরতে পারবেন নিজের রাজ্যে, নিজের গ্রামে। কিন্তু ক্রমেই টিভির খবরে ও লোকমুখে এটা স্পষ্ট হতে থাকে যে, ১৪ তারিখের পরেও সম্ভবত গোটা দেশে লকডাউন তুলবে না মোদী সরকার। আর ওড়িশায় তো মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক নিজে থেকেই লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়ে দিয়েছেন। এতেই ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে তাঁদের।
শ্রমিকদের অশান্ত হয়ে ওঠার পিছনে গুজরাতের করোনা পরিস্থিতিও অনেকাংশে দায়ী। গত কালই রাজ্যে নতুন করোনা-সংক্রমিতের সংখ্যাটা এক দিনে এক লাফে ১১৬ বেড়ে হয় ৩৭৮। গুজরাতে আক্রান্তের সংখ্যা এ ভাবে লাফিয়ে বাড়ছে দেখে, বিপন্ন বোধ করছেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা। ক্ষোভের বিস্ফোরণ সে কারণেও।