প্রতীকী ছবি।
দেশের নামজাদা শিল্পপতি থেকে বিজয় মাল্য, মেহুল চোকসী, নীরব মোদীরা ব্যাঙ্কের কোটি কোটি টাকা ঋণ শোধ করছেন না। তার উপরে লকডাউনের ধাক্কা কাটাতে কেন্দ্র ফের ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ বিলির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিরোধীদের প্রশ্ন, ফের কি মোদী সরকারের বন্ধুরাই ঋণ পাবেন? তাঁরা ঋণ শোধ করবেন তো?
করোনা-সঙ্কট শুরুর আগেই জানুয়ারিতে ইন্ডিয়া রেটিংস অ্যান্ড রিসার্চ সংস্থা জানিয়েছিল, দেশের প্রথম সারির ৫০০টি সংস্থার মোট বকেয়া ঋণের পরিমাণ ৩৯.২৮ লক্ষ কোটি টাকা। যার মধ্যে ৭.৩৫ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ ঠিক সময়ে শোধ হয়নি। অর্থনীতির শ্লথগতির ফলে আগামী তিন বছরে অনাদায়ী ব্যাঙ্ক ঋণের পরিমাণ আরও ২.৫৪ লক্ষ কোটি টাকা বাড়বে।
লকডাউনের ধাক্কা সামলাতে মোদী সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ছোট-মাঝারি শিল্পকে ৩ লক্ষ কোটি টাকার বন্ধক-হীন ঋণ বিলি করা হবে। কংগ্রেসের প্রশ্ন, অর্থ মন্ত্রক ছোট-মাঝারি শিল্পের সংজ্ঞা পাল্টে ১০০ কোটি টাকার ব্যবসা করা সংস্থাকেও এর আওতায় নিয়ে এসেছে। ফলে বড় সংস্থাই বন্ধক ছাড়া ঋণ পাবে। কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের বক্তব্য, “আমার মতে, ছোট-মাঝারি শিল্পের তালিকায় থাকা অপেক্ষাকৃত বড় সংস্থাগুলিই এর ফায়দা পাবে। ৬.৩ কোটি ছোট-মাঝারি শিল্পের মধ্যে সিংহভাগের কিছুই জুটবে না।” লকডাউন পর্বের মধ্যেই ব্যাঙ্কগুলি ৬৮ হাজার কোটি টাকার ঋণ ‘রাইট-অফ’ করে দিয়েছে বা অনুৎপাদক সম্পদের তালিকা থেকে সরিয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে মাল্য, চোকসী, যতীন মেহতার মতো দেশ থেকে পলাতকদেরও হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলার দিকে এগোচ্ছে আমপান, সতর্ক ওড়িশাও, চলছে উদ্ধারকাজ
আরও পড়ুন: কোভিড নয়, লকডাউনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের, শিক্ষার
সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, “এ বারও অসাধু শিল্পপতিরাই মুনাফা লুটবেন। ব্যাঙ্ক-কর্তাদের সরকার এক দিকে এনপিএ কমাতে বলছে, অন্য দিকে আরও ঋণ বিলি করতে বলছে। খুব সন্দেহ, ব্যাঙ্ক এই চাপ মানবে কি না।” অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের দফতর আজ জানিয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি ৯ মে থেকে ১৫ মে, এই এক সপ্তাহে ৫০ হাজার কোটি টাকার ঋণ ও নগদ পুঁজির অভাব মেটাতে ৩৭ হাজার কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুর হয়েছে। তবে তার কত বিলি হয়েছে, তার হিসেব মেলেনি।