সদ্যোজাত মেয়ের ছবি হোয়াট্সঅ্যাপে দেখছেন রমাকান্ত। ছবি: সংগৃহীত।
৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের চড়া রোদে ঘুরে ঘুরে ডিউটি করতে হচ্ছে রাস্তায়। তারই ফাঁকে এক বার মোবাইলটা বার করার জন্য দাঁড়ালেন বছর পঁচিশের কনস্টেবল রমাকান্ত নাগার। হোয়াট্সঅ্যাপ খুলে মনোযোগ দিয়ে দেখতে থাকলেন তাঁর সদ্যোজাত মেয়ের ছবি। আপাতত এ ভাবেই মেয়ের কাছাকাছি যেতে পারছেন রমাকান্ত। কিন্তু, ১২ দিন আগে জন্মানো মেয়েকে দেখতে ডিউটি ছেড়ে গ্রামের বাড়িতেও যাননি তিনি। বলছেন, লকডাউন শেষ না হওয়া পর্যন্ত ছুটি নেবেন না। উত্তরপ্রদেশের ইটাবাতে ডিউটিরত রমাকান্তের কাছে কর্মই যেন ধর্ম!
নিজের প্রথম মেয়েকে দেখতে এখনই গ্রামের বাড়িতে যেতে চান না রমাকান্ত। তাঁর কথায়, “এক বার বাড়িতে যাওয়ার কথা ভেবেছিলাম। কিন্ত তার পর ভাবলাম, আমার কত সহকর্মীই তো এমন সময় একটানা কাজ করে চলেছেন। ঠিক করলাম, ডিউটি ছেড়ে যাব না। এখানেই থেকে যাব।”
রমাকান্ত একাই নন, ইটাবাতেও তাঁর মতো বহু পুলিশকর্মী, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী দিনরাত ডিউটি করে চলেছেন এই লকডাউনের সময়। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত লড়াই করে চলেছেন এঁরা। গোটা দেশে যে ভাইরাসের সংক্রমণে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৩৫৩ জনের। এই ভাইরাসকে হারাতে লকডাউনের সময় নিজের বাড়িতেও যেতে চান না রমাকান্ত। তিনি বলেন, “স্ত্রীর সঙ্গে রোজ মোবাইলে কথা হয়। কিন্তু, একেবারে মনস্থির করে নিয়েছি, যত দিন লকডাউন চলবে, তত দিন বাড়ি যাব না। যেমন ডিউটি পড়বে, করে যাব।”
আরও পড়ুন: বাড়ি ফিরতে চাই, বান্দ্রায় হাজারো পরিযায়ী শ্রমিকের বিক্ষোভে লাঠিচার্জ
আরও পড়ুন: ব্রেক দ্য চেন: হাই রিস্ক স্পটে একগুচ্ছ নতুন কৌশল স্বাস্থ্য দফতরের
দেশের অন্যান্য রাজ্যের করোনা-সংক্রমিতের তুলনায় সংখ্যার নিরিখে ছ’নম্বরে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশে এই মুহূর্তে ৬৫৭ জন করোনায় আক্রান্ত। ইতিমধ্যেই ওই রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫ জন সংক্রমিতের। তবে ইটাবাতে মাত্র এক জন করোনা-সংক্রমিতের সন্ধান মিলেছে। তা সত্ত্বেও করোনাকে হারাতে লকডাউনের বিধিনিষেধ যাতে সকলে পালন করেন, সে দিকে কড়া দৃষ্টি রয়েছে রমাকান্তের মতো অসংখ্য কর্মীর।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)