ছবি: সংগৃহীত।
পুরসভায় আয় বাড়াতে রাজ্যকে সম্পত্তি কর, জলকর ও নিকাশির চার্জ বাড়াতে হবে বলে শর্ত বেঁধে দিচ্ছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমজনতার উপরে কর বসাতে নারাজ হলেও, কেন্দ্রের যুক্তি, সম্পত্তি কর বৃদ্ধি ও বাজারদরের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই পুরসভাগুলিকে জল কর, নিকাশি ও পয়ঃপ্রণালী ব্যবহারের চার্জ ঠিক করতে হবে।
করোনা-সঙ্কট সামাল দিতে রাজ্য সরকারগুলিকে রাজ্যের জিডিপি-র ৩ শতাংশের বদলে ৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু তার পুরো ফায়দা তুলতে হলে এক দেশ-এক রেশন কার্ড, পুরসভার আয় বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার সংস্কার ও ব্যবসার সহজ পরিবেশ— এই চারটি ক্ষেত্রে কোন সময়ের মধ্যে কী কী শর্ত পূরণ করতে হবে, অর্থ মন্ত্রক আজ তা ঠিক করে দিয়েছে।
কেন্দ্রের অবস্থান হল, বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার সংস্কারের জন্য চাষিদের বিনা মূল্যে বিদ্যুৎ না দিয়ে তাঁদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি নগদ ভর্তুকি জমা করে দিতে হবে। চাষিরা সেই টাকায় বিদ্যুতের বিল মিটিয়ে দেবেন। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আয়ের সঙ্গে খরচের ফারাকও কমিয়ে আনতে হবে। শিল্পের জন্য প্রতি বছর নতুন করে লাইসেন্সের শর্ত তুলে দিতে হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে এক দেশ-এক রেশন কার্ড চালু করার জন্য আধারের সঙ্গে রেশন কার্ডের সংযুক্তিকরণ করার শর্ত মেনে নিতে হবে। কেন্দ্রের এই শর্ত শোনার পরে নবান্নের শীর্ষমহলের যুক্তি, এক দেশ-এক রেশন কার্ডের জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এখনও তৈরি হয়নি। অথচ কেন্দ্র রাজ্যের উপরে শর্ত চাপাচ্ছে। পুরসভার কর বাড়ানো হবে কি না, তা কি দিল্লি ঠিক করবে?
আরও পড়ুন: পরশু বিরোধী-বৈঠকে সনিয়া, মমতা
আরও পড়ুন: শ্রমিক স্পেশালের জন্য বান্দ্রায় শ্রমিকদের ভিড়
কোন পথে ঋণ
কখন, কোন সংস্কারের শর্ত পূরণে কত ছাড়
এক দেশ-এক রেশন কার্ড
• ডিসেম্বরের মধ্যে আধার-রেশন কার্ড সংযুক্তিকরণ, রেশন দোকানে ডিজিটাল প্রযুক্তি (০.২৫%)
পুরসভার আয় বাড়ানো
• সম্পত্তি কর বৃদ্ধি, জলকর, নিকাশি, পয়ঃপ্রণালী ব্যবহারের চার্জ বৃদ্ধি (০.২৫%)
বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার সংস্কার
• বিদ্যুৎ সরবরাহ ও সংবহনের ক্ষতি কমানো (০.০৫%)
• বিদ্যুৎ সরবরাহের খরচ ও রাজস্ব আয়ের মধ্যে ফারাক কমানো (০.০৫%)
• অন্তত একটি জেলায় ডিসেম্বরের মধ্যে বিনা মূল্যে বিদ্যুৎ না দিয়ে চাষিদের ব্যাঙ্কে নগদ ভর্তুকি (০.১৫%)
ব্যবসার সহজ পরিবেশ
• ২০২১-এর জানুয়ারির মধ্যে অন্তত একটি ক্ষেত্রে শিল্পের লাইসেন্স নবীকরণ, শংসাপত্র, ছাড়পত্রের শর্ত হটানো (০.২৫%)
বাড়তি ২% ঋণের অনুমতি দিলেও কেন্দ্র প্রথমে ০.৫% ঋণ বিনা শর্তে নিতে দিচ্ছে। তার পরে চারটি সংস্কারের শর্ত পূরণ করতে হবে। এক একটি সংস্কার করলে ০.২৫% করে বাড়তি ঋণ নেওয়া যাবে। চারটির মধ্যে অন্তত তিনটি শর্ত পূরণ করলে আরও ০.৫% ঋণ নেওয়া যাবে। খাদ্য-গণবণ্টন, নগরোন্নয়ন, বিদ্যুৎ ও শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রক রাজ্যের সংস্কারের কাজ দেখে সন্তুষ্ট হলে তবেই রাজ্যকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে।