ছবি: রয়টার্স।
শ্রমিকদের ঘরে ফেরার খরচের ৮৫% কেন্দ্র বহন করছে বলে সোমবার মোদী সরকার ও বিজেপি নেতৃত্ব দাবি করেছিল। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট সরকারের কাছে জানতে চাইল, সরকার কি শ্রমিকদের যাতায়াতের ৮৫% খরচ বহন করছে? সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার কিন্তু জবাব, তাঁর কাছে সরকারের তরফে এমন তথ্য নেই।
লকডাউনের জেরে কাজ হারানো পরিযায়ী শ্রমিকদের থেকে রেল কেন ট্রেনের ভাড়া আদায় করছে— তা নিয়ে সোমবার অস্বস্তির মুখে পড়ে কেন্দ্র। কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী ঘোষণা করেন, কংগ্রেস শ্রমিকদের টিকিটের খরচ দেবে। সনিয়ার এই ‘গাঁধীগিরি’তে বিব্রত কেন্দ্রের তরফে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব ও পরে বিজেপি নেতারা দাবি করেন, কেন্দ্র যাতায়াত খরচের ৮৫% বহন করছে। বাকি ১৫% দায় রাজ্য নিতে পারে। তা হলে শ্রমিকদের ভাড়া গুনতে হয় না।
বিজেপি নেতাদের দাবি ছিল, রেল মন্ত্রক এই বিষয়টি স্পষ্ট করে বিবৃতি জারি করবে। দু’দিন কেটে গেলেও রেল মন্ত্রক বিবৃতি জারি করেনি। আজ সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি সঞ্জয় কিষেণ কউল এ নিয়ে কেন্দ্রকে প্রশ্ন করেন। সলিসিটর জেনারেল জানান, তাঁকে সরকার এমন তথ্য দেয়নি।
আরও পড়ুন: বেশি দামেও পরোয়া নেই মদ্যপায়ীদের
মামলাকারী জগদীপ চোকারের হয়ে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বলেন, “ট্রেনে ওঠার আগে হাসপাতাল থেকে শ্রমিকদের করোনা-আক্রান্ত নয় বলে শংসাপত্র আনতে বলা হচ্ছে। লকডাউনের মধ্যে হাতে পয়সা না থাকলে তা কী ভাবে সম্ভব?” কেন্দ্র প্রথমে শ্রমিকদের ঘরে ফেরার ছাড়পত্র দিলেও পরে স্পষ্ট করে, যারা মোটামুটি দীর্ঘ সময় অন্য রাজ্যে রয়েছেন, তাদের ফেরানো হবে না।
গুজরাতে হিরে, বস্ত্রশিল্পে কাজ শুরুর চেষ্টা হচ্ছে। ফলে শ্রমিকদের যেতে না দেওয়ায় সুরতে সোমবারই বিক্ষোভ হয়। আজ কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা জানান, সেখানেও শ্রমিকদের গতিবিধিতে বিধিনিষেধ জারি হচ্ছে। কারণ শিল্প, নির্মাণ ক্ষেত্রে কাজ শুরু হবে। প্রশান্ত ভূষণ বলেন, “এর ফলে বহু শ্রমিক হেঁটেই বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন।” সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে জানায়, কেন্দ্র ও রাজ্যই এতে প্রয়োজন মতো পদক্ষেপ করছে।
আরও পড়ুন: এবার বিহারের গ্রাম থেকে এভারেস্ট দর্শন, দেখুন কী বলছেন গ্রামবাসীরা
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের যুগ্মসচিব পুণ্যসলিলা শ্রীবাস্তব আজ বলেন, এখনও পর্যন্ত ৬২টি স্পেশাল ট্রেন চালানো হয়েছে। প্রায় ৭০ হাজার শ্রমিক নিজের রাজ্যে ফিরেছেন। আজ আরও ১৩টি ট্রেন চলবে। রেল মন্ত্রকের যুক্তি, দূরত্বের হিসেবে ভাড়া ঠিক হয়েছে। তবে তা ট্রেন চালানোর প্রকৃত খরচের থেকে অনেক কম। কারণ সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি মাথায় রেখে ট্রেনগুলি গড়ে ২৫ % খালি রেখে চালানো হচ্ছে। এমনিতেই স্লিপার ক্লাসে প্রতি টিকিটে ৪৩% ভর্তুকি দেয় রেল।
বুধবার সনিয়া কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে লকডাউনের তৃতীয় দফার পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করবেন। আজ কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ সুপ্রিম কোর্টে সকলের জন্য রেশন কার্ড ও খাদ্য সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার আর্জি জানান। আদালত তাঁকে সরকারের কাছে দাবি তুলতে বলেছে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)