Mamata Banerjee

পরশু বিরোধী-বৈঠকে সনিয়া, মমতা

রাজনৈতিক সূত্রের খবর, করোনা-সঙ্কটে কেন্দ্র কী ভাবে রাজ্যগুলিকে বিপদে ফেলে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে খর্ব করছে— সেটাই ওই বৈঠকের মূল বিষয় হয়ে উঠতে চলেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২০ ০২:৫৮
Share:

—ফাইল চিত্র।

করোনা-সঙ্কট একজোট করল দেশের বিজেপি-বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে। দীর্ঘদিন পরে প্রথম বার একই বৈঠকে (ভিডিয়ো) থাকতে চলেছেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গাঁধী এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী শুক্রবার পনেরো-ষোলোটি বিরোধী দলের নেতাদের বৈঠকে ওই দুই নেত্রী ছাড়াও থাকবেন ঝাড়খণ্ড এবং মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী। থাকার কথা এনসিপি-র শরদ পওয়ার, সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি, সিপিআই-এর ডি রাজা, ডিএমকে-র স্টালিনেরও।

Advertisement

রাজনৈতিক সূত্রের খবর, করোনা-সঙ্কটে কেন্দ্র কী ভাবে রাজ্যগুলিকে বিপদে ফেলে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে খর্ব করছে— সেটাই ওই বৈঠকের মূল বিষয় হয়ে উঠতে চলেছে। পাশাপাশি করোনার সঙ্গে লড়াইয়ের অভিজ্ঞতাও একে ভাগ করে নেবেন অন্যের সঙ্গে।

রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, করোনা-সঙ্কট শুরুর পরেই পওয়ার ও মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে কথা বলেন মমতা। মাসখানেক আগের ওই আলাপচারিতায় বিরোধী দলের নেতা বা মুখ্যমন্ত্রীদের কোনও বৈঠক ডাকা সম্ভব কি না, তা নিয়ে কথা বলেছিলেন মমতা। পওয়ারকে এ নিয়ে উদ্যোগী হতেও অনুরোধ করেন তিনি। পাশাপাশি তৃণমূল সূত্রে আজ বলা হয়, শুক্রবারের বৈঠক সনিয়া ডাকলেও মমতা কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন দলের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই যোগাযোগ রাখছিলেন। গত ২৬ মার্চ তিনি পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যা নিয়ে ১৮ জন মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও লেখেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: শ্রমিক স্পেশালের জন্য বান্দ্রায় শ্রমিকদের ভিড়

আরও পড়ুন: দুর্ঘটনায় শ্রমিক-মৃত্যু বেড়ে চলেছে রোজই

সূত্রের খবর, এ দিন মমতাকে বৈঠকে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মেসেজ করেন সনিয়া। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, মমতাই প্রথম থেকে বিরোধী দলগুলির বৈঠকে বসার প্রয়োজনীয়তার কথা বলছিলেন। মমতাকে প্রতিদিন কেন্দ্রের সঙ্গে যে ‘কঠিন লড়াই’ লড়তে হচ্ছে, সে-কথাও লিখেছেন। সীতারাম ইয়েচুরিও জানিয়ে দিয়েছেন, বর্তমানে সরকারের বিরুদ্ধে নিজেদের কৌশল স্থির করতে আলোচনার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে প্রস্তাব দিয়েছেন তাঁরা।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বৈঠকের অন্যতম দিক হল, এই সঙ্কটকালীন সময়ে সনিয়া এবং মমতার ফের এক মঞ্চে আসা। ১৩ জানুয়ারি সংসদ ভবনে শেষ বার বিরোধী দলগুলির বৈঠক হয়। কিন্তু আমন্ত্রিত হওয়া সত্ত্বেও যোগ দেননি মমতা। সংসদেও কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখেই নিজেদের মতো করে কেন্দ্র-বিরোধিতার কৌশল নিয়ে চলেছেন তৃণমূলের সাংসদেরা।

কিন্তু সূত্রের খবর, গত এক মাসে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মোদী-বিরোধী পরিসরে ক্রমশ সংযোগ বেড়েছে কংগ্রেস এবং তৃণমূল নেতৃত্বের। গত কাল কেন্দ্রের আর্থিক ঘোষণার বাস্তব দিকটিকে অশ্বডিম্বের সঙ্গে তুলনা করেন মমতা। রাজ্য মনে করছে, কেন্দ্রের স্থির করে দেওয়া চার দফা শর্ত মানলে কার্যত ভেঙে পড়বে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো। শুক্রবার বিরোধীদের বৈঠকে উপস্থিত অন্য মুখ্যমন্ত্রী এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের কাছে নিজের বক্তব্য মমতা ব্যাখ্যা করবেন বলে আজ জানিয়েছে তৃণমূল সূত্র।

এই বৈঠক নিয়ে পাল্টা সরব পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর কথায়, “মোদীজি যে-কাজ করেছেন, তাকে বিশ্ব স্বীকৃতি দিয়েছে। ভাল হত, যদি লড়াই কেন্দ্রের বদলে করোনার বিরুদ্ধে হত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement