পরিযায়ী শ্রমিকের ইস্যুতে বিরোধীদের প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। —ফাইল চিত্র।
পরিযায়ী শ্রমিকদের পুনর্বাসনের জন্য উদ্যোগী হল কেন্দ্রীয় সরকার। লকডাউনের সময় ভিন্ রাজ্যে কাজহারা পরিযায়ী শ্রমিকদের যাতে নিজের রাজ্যেই রুজিরোজগার জোটে, সে বন্দোবস্ত করতে একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করার কথা চিন্তা-ভাবনা শুরু করছে কেন্দ্র।
সূত্রের খবর, ওই পরিকল্পনার অঙ্গ হিসাবে দেশের যে সমস্ত জেলায় পরিযায়ী শ্রমিকদের সংখ্যা বেশি, এমন ১১৬টি জেলাকে চিহ্নিত করার কাজও শুরু করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। লকডাউনের মধ্যেই ভিন্ রাজ্য থেকে বহু পরিযায়ী শ্রমিক নিজের বাড়িতে ফিরে এসেছেন। ওই পরিযায়ীদের নিজের রাজ্যেই যাতে কর্মসংস্থান হয়, তার জন্য ওই জেলাগুলিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, কোন কোন ক্ষেত্রে পরিযায়ীদের রুজিরোজগারের বন্দোবস্ত করা যায়, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও এ বিষয়ে সরকারি ভাবে কোনও ঘোষণা করা হয়নি।
সূত্র মারফত আরও জানা গিয়েছে, এই পরিকল্পনার অঙ্গ হিসাবে পরিযায়ীদের এমজিএনআরইজিএ-এর আওতায় ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প-সহ সাম্প্রতিক কালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘোষিত ‘আত্মনির্ভর ভারত অভিযান’-এর মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্পে কাজের ব্যবস্থা করা হবে। সেই সঙ্গে জনধন যোজনা, কিষান কল্যাণ যোজনা, খাদ্য নিরাপত্তা আইনের মতো বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক পরিকল্পনাকেও সুনির্দিষ্ট ভাবে পরিযায়ীদের লক্ষ্য রেখে ব্যবহার করা হবে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মন্ত্রকের কাছ থেকে তথ্য, পরিসংখ্যান চেয়ে পাঠিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর অফিস।
আরও পড়ুন: কার্ডহীন ৮ কোটি পরিযায়ী শ্রমিকের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী পেয়েছেন মাত্র ২০ লক্ষ!
পরিযায়ীদের পুনর্বাসনে দেশের কোন রাজ্যের কোন জেলাগুলিকে ‘পাখির চোখ’ করা হবে? সূত্রের খবর, মোদী সরকার ইতিমধ্যেই তা স্থির করে ফেলেছে। সেই তালিকায় সবচেয়ে আগে রয়েছে বিহার ও উত্তরপ্রদেশের নাম। ওই দুই রাজ্যের যথাক্রমে ৩২ ও ৩১টি জেলাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি, মধ্যপ্রদেশের ২৪টি, রাজস্থানের ২২টি, ঝাড়খণ্ডের ৩টি এবং ওড়িশার ৪টি জেলাকে ওই তালিকায় রাখা হয়েছে। এ ছাড়া, সে সব পরিযায়ী শ্রমিকেরা ভিন্ রাজ্য থেকে নিজের রাজ্যে ফিরে এসেছেন, তাঁদেরও চিহ্নিতকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: জ্বর নিয়ে আইসোলেশনে কেজরীবাল, কোভিড টেস্ট মঙ্গলবার
পরিযায়ী শ্রমিকের ইস্যুতে ইতিমধ্যেই বিরোধীদের প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। লকডাউনের ফলে কাজ হারিয়েছেন দেশের লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক। তা নিয়ে রাজনৈতিক তথা নাগরিক সমাজের একাংশের তোপের মুখে পড়েছে কেন্দ্র। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অভাবেই যে পরিযায়ীদের দুর্দশায় পড়তে হয়েছে, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। বিরোধীদের আরও অভিযোগ, পর্যাপ্ত সময় না দিয়েই আচমকা লকডাউন ঘোষণা করায় দেশ জুড়়ে রাতারাতি কাজ হারান অগণিত পরিযায়ী শ্রমিক। সেই সঙ্গে সরকারের আ্রর্থিক প্যাকেজেও তাঁদের পুনর্বাসনের জন্যে কোনও বন্দোবস্তই ছিল না। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মতে, বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়ে অবশেষে এ বিষয়ে নড়েচড়ে বসেছে মোদী সরকার।