Coromavirus Lockdown

হোটেল-রেস্তরাঁ খোলা, চলছে যানবাহন, লকডাউন শিথিল করায় কেরলকে ভর্ৎসনা কেন্দ্রের

প্রায় একমাস লকডাউনের পর বেশ কিছু ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র ও বিভিন্ন রাজ্যের সরকার।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

তিরুঅনন্তপুরম শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২০ ১৪:৫৬
Share:

কোঝিকোড়ে দোকানে ভিড় মানুষের। ছবি: পিটিআই।

করোনা মোকাবিলায় তাদের ভূমিকা প্রশংসা কুড়োলেও, লকডাউন শিথিল করা নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ল কেরল সরকার। হেটোল-রেস্তরাঁ খোলা এবং রাস্তায় গাড়ি-বাস চালু করা নিয়ে এ বার তাদের ভর্ৎসনা করল কেন্দ্রীয় সরকারও। তাদের অভিযোগ, নিয়ন্ত্রণ শিথিল করে কেন্দ্র নির্ধারিত লকডাউনের শর্তাবলী লঙ্ঘন করেছে কেরল সরকার।

Advertisement

প্রায় একমাস যাবৎ লকডাউনের পর সোমবার থেকে বেশ কিছু ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র এবং বিভিন্ন রাজ্যের সরকার। তার আওতায় যে সমস্ত জায়গায় করোনার প্রকোপ বেশি, সেগুলিকে সিল করে রেখে, বাকি জায়গায় আংশিক ভাবে আর্থিক কাজকর্ম শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেরল সরকারও একাধিক ছাড় ঘোষণা করেছে। যে এলাকাগুলিতে করোনার প্রকোপ অপেক্ষাকৃত কম, সেখানে হোটেল-রেস্তরাঁ, বইয়ের দোকান, ছোট কারখানা এবং সেলুন খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। জোড়-বিজোড় বিধি মেনে রাস্তায় প্রাইভেট গাড়ি এবং দু’চাকার যান চলাচলের অনুমতিও মিলেছে। এমনকি কম দূরত্বে পাড়ি দিতে বাস পরিষেবাও শুরু করা হয়েছে নতুন করে। রাত ৮টা পর্যন্ত হোটেল-রেস্তরাঁগুলির টেকআউট কাউন্টারগুলিও খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাতে নৈশভোজও সারা যাবে সেখানে।

এ নিয়েই অসন্তোষ প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বিষয়টি নিয়ে রবিবার আলাদা করে কেরল সরকারকে চিঠি দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তাতেই কেরল সরকারের সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করা হয়েছে। সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে লেখা চিঠিতেও তা ফুটে উঠেছে। কেরলকে নিশানা করে বলা হয়েছে, কিছু রাজ্য নিজেদের মতো করে অত্যাবশ্যকীয় কাজকর্মের তালিকা তৈরি করেছে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে ছাড় ঘোষণা করা হয়েছে। এটা কোনও ভাবেই হতে পারে না। নিয়ন্ত্রণ শিথিল না করে, কেড়া ভাবে কেন্দ্রীয় বিধিনিষেধ কী ভাবে প্রয়োগ করা যায়, তাতেই গুরুত্ব দিতে হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্তদের ৮০ শতাংশই উপসর্গহীন, দুশ্চিন্তায় আইসিএমআর​

কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের এই অভিযোগ খারিজ করেছেন কেরলের মন্ত্রী কদাকমপল্লী সুরেন্দ্রন। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রের নির্দেশ মেনেই লকডাউনে ছাড় দিয়েছি আমরা। কোথাও একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। তার জন্যই কৈফিয়ত চেয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। আমারা এ ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করব। তাতে আশাকরি সমস্যা মিটে যাবে। এতদিন কেন্দ্রের শর্তাবলীই মেনে এসেছি আমরা।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের চিঠি পেয়েছি। কী করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। দরকার পড়লে প্রয়োজনীয় সংশোধন ঘটানো হবে। ’’

রাজ্যের কোথায় করোনার প্রকোপ কেমন, তা বিচার করে রাজ্যের ১৪টি জেলাকে মোট চারটি ভাগে ভাগ করেছে কেরল সরকার—রেড জোন, অরেঞ্জ-এ ও অরেঞ্জ-বি জোন এবং গ্রিন জোন। কাসারাগোড, কান্নুর, কোঝিকোড় এবং মলপ্পুরম, যেখানে করোনার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি, সেগুলিকে রেড জোনের আওতায় রাখা হয়েছে। আগামী ৩ মে পর্যন্ত লকডাউন চলবে সেখানে।

এর্নাকুলাম, পাঠানমথিট্টা, কোল্লাম রয়েছে অরেঞ্জ-এ জোনের আওতায়। ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন চলবে সেখানে। আলাপ্পুঝা, তিরুঅনন্তপুরম, ত্রিশূর, পলক্কড় এবং ওয়েনাড রয়েছে অরেঞ্জ-বি জোনের আওতায়। সোমবার থেকে সেখানে লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। গ্রিন জোনের আওতায় থাকা কোট্টায়ম, ইডুক্কিতে আগামী দিনে নিয়ন্ত্রণ আরও শিথিল করা হবে।

বিজয়নের টুইট।

আরও পড়ুন: শুরুতেই বেলগাছিয়া বস্তি, আজ র‌্যাপিড টেস্ট শুরু হল রাজ্যে​

এ নিয়ে এ দিন সকালে টুইটও করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তিনি লেখেন, ‘‘ফের স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে কেরল। আজ থেকে কিছু জায়গায় নিয়ন্ত্রণ শিথিল হচ্ছে। তবে বিপদ এখনও কাটেনি। তাই সতর্ক থাকতে হবে। লকডাউন আমাদের দৈনন্দিন কাজকর্মে প্রভাব ফেলেছে। তাই আরও সতর্ক হতে হবে। মাথায় রাখতে হবে হাত ধোওয়া, মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা।’’

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement