Delhi

‘কী করে খাব এই রেশন ফুরোলে?’ উদ্বেগে অসীমরা

লকডাউনের ফলে বাড়ি ফেরার রাস্তাও বন্ধ! তাই টান পড়েছে রেশনে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২০ ০৩:৪৪
Share:

দিল্লিতে আটকে পড়া বাংলার শ্রমিকেরা। নিজস্ব চিত্র

বিয়েবাড়ি বন্ধ। শীত চলে যাওয়ার আগে দিল্লির ফার্ম হাউসে পার্টি, উৎসবও বন্ধ। ফলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে অসীম দোলে, আশিস দাসদের রোজগারও। কিন্তু লকডাউনের ফলে বাড়ি ফেরার রাস্তাও বন্ধ! তাই টান পড়েছে রেশনে।

Advertisement

সেই কালীপুজোর পরেই ট্রেন ধরে দিল্লি চলে এসেছিলেন। অক্টোবর থেকে মার্চ — এই ছয় মাসে দিল্লিতে বিয়েবাড়ি, পার্টি, অনুষ্ঠানের মেলা লেগে যায়। প্যান্ডেল তৈরির কাজে ডাক পড়ে পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরের সিদ্ধহস্ত কর্মীদের। কেউ শুধুই কাপড়ের নকশা করবেন, কেউ বাটামের কাজ, কেউ আবার শুধুই ফুলের সাজসজ্জা।

পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর থানার অমরপুর গ্রাম থেকে তাই অন্য বছরের মতোই দিল্লিতে চলে এসেছিলেন অসীম। ভেবেছিলেন, মাস ছয় কাজ করলে বাড়ির দেনাগুলো শোধ হয়ে যাবে। তার পর গ্রামে ফিরে চাষের কাজে নেমে পড়বেন। কিন্তু ভাবনা ভাবনাই থেকে গিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনের ২ নম্বর ব্লক থেকে আসা সব মিলিয়ে প্রায় ৪০ জন পুরনো দিল্লির ফতেহপুরীর ছোট ছোট ঘরে আটকে পড়েছেন। অসীমের কথায়, “কোনও মাসে ১২ থেকে ১৫ হাজার, কোনও মাসে ১০ হাজার, এই রকমই রোজগার হয়। ট্রেনে নগদ নিয়ে যেতে ভয় পাই। তাই তার থেকে ট্রেন ভাড়া, খাইখরচ রেখে পুরোটা টাকাটাই বাবাকে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। যাতে দেনা শোধ করে দিতে পারে। মার্চের শেষে টিকিট কাটা ছিল। কিন্তু লকডাউনের ফলে কবে ফিরতে পারব, এখন বুঝতে পারছি না। এ দিকে হাতের টাকাও শেষ হয়ে গিয়েছে।”

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘হটস্পট’ শাহিন বাগের আর্জি, আঙুল নয় ধর্মে

আরও পড়ুন: গোষ্ঠী সংক্রমণ রুখতে এগরাই মডেল, আরও বেশি কোয়রান্টিনে জোর মুখ্যমন্ত্রীর

রেশনে টান পড়ায় অসীম, আশিসরা কলকাতায় সিপিএম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সূর্যবাবুর কাছ থেকে সব শুনে বৃন্দা কারাট দিল্লিতে দলীয় ক্যাডারদের মাধ্যমে দিন দশেকের মতো রেশন পাঠিয়েছেন। অসীম বলেন, “এই রেশন শেষ হলে কী হবে জানি না। ট্রেন কবে থেকে চলবে, তা-ও বুঝতে পারছি না।” অসীমের পিসতুতো দাদা আশিসও একই ভাবে দিল্লিতে কাজ করতে এসে আটকে পড়েছেন। ওঁদের মতো অনেকে আবার গ্রিন পার্কে ঘর নিয়েছিলেন। সেখানেই রয়ে গিয়েছেন। যে ঠিকেদারের কাছে কাজ করতে এসেছিলেন, তিনিও সাহায্য করতে পারছেন না। অসীম বলেন, “ওঁর সঙ্গে তো চুক্তিই ছিল, কাজ করলে দিনমজুরি ৩০০ টাকা। কাজ না থাকলে এক পয়সাও মিলবে না।” এর পরেই আশিসের প্রশ্ন, “এই চাল-ডাল শেষ হয়ে গেলে কার থেকে সাহায্য মিলবে, বলতে পারেন?”

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement