লকডাউন বৃদ্ধির ইঙ্গিত, শ্রমিকদের নিয়ে চিন্তা
Coronavirus Lockdown

লকডাউন নিয়ে মত জানতে অমিত শাহের ফোন মুখ্যমন্ত্রীদের

লকডাউনের মেয়াদ নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে এর আগে আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২০ ০৪:১৯
Share:

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।—ছবি পিটিআই।

লকডাউন প্রশ্নে রাজ্যগুলির মতামত জানতে চেয়ে সব মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ

Advertisement

আগামী রবিবার শেষ হচ্ছে চতুর্থ দফা লকডাউন। তাই দেশের কোভিড পরিস্থিতি বুঝতে আজ সকালে সব রাজ্যের মুখ্যসচিব ও স্বাস্থ্যসচিব ছাড়াও ১৩টি সব চেয়ে সংক্রমিত শহরের পুরকর্তা ও জেলাশাসকদের সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠক করেন ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা। সরকারি সূত্রের মতে, বৈঠকে শনিবারের মধ্যে লকডাউন প্রশ্নে রাজ্যগুলির পরামর্শ চাওয়া হয়। যদিও লকডাউন বাড়ানোর ইঙ্গিত আগেই দিয়েছে কেন্দ্র। রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের এক টুইটে রাতে জানানো হয়, বৈঠকে লকডাউন বৃদ্ধি বা নিষেধাজ্ঞার প্রশ্নে তাদের তরফে নতুন কোনও প্রস্তাব দেওয়া হয়নি।

লকডাউনের মেয়াদ নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে এর আগে আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু অভিযোগ উঠছিল, লকডাউনের সময়ে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের দোহাই দিয়ে রাজ্যের এক্তিয়ারে হস্তক্ষেপ করছে কেন্দ্র। তাই সহযোগিতামূলক মনোভাবের বার্তা দিতে সকালে বৈঠকের পরে রাতে শাহের ওই ফোন বলেই মত অনেকের। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, রাজ্যগুলি মেয়াদ বৃদ্ধির পক্ষে না কি লকডাউন প্রত্যাহার করে নেওয়ার পক্ষে, তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীদের মতামত জানতে চান শাহ। যার ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

Advertisement

গত কয়েক দিন ধরে যে গতিতে দেশে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে লকডাউন তুলে দিলে ঘরে ঘরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাই আপাতত জুন মাসের প্রথম দু’সপ্তাহ লকডাউন জারি রাখার পক্ষেই মত স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। একই মত একাধিক রাজ্যেরও। সূত্রের খবর, তাই পঞ্চম দফা লকডাউনে কী খোলা আর কী বন্ধ রাখা উচিত, সেই সুপারিশ রাজ্যগুলিকে জানাতে বলেছে কেন্দ্র।

আরও পড়ুন: ১ জুন থেকে রাজ্যে লোকাল ট্রেন ও মেট্রোতে নারাজ নবান্ন, জানাল কেন্দ্রকে

পঞ্চম দফা লকডাউনের সম্ভাবনা নিয়ে নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বি কে পল আজ বলেন, ‘‘অতিমারি নিয়ন্ত্রণ ও জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করার মধ্যে ভারসাম্য আনা সরকারের লক্ষ্য। লকডাউন উঠে গেলে সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়বে। ফলে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় যাতে চাপ না-পড়ে, তা-ও মাথায় রাখতে হবে।’’ সরকারি সূত্রের বক্তব্য, বেশ কিছু রাজ্যে ও শহরে দ্রুত হারে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। তাই দেশে এক বারে লকডাউন তুলে দেওয়া সম্ভব নয়।

বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে শ্রমিকদের প্রত্যাবর্তনের কারণে সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ছে। সূত্রের মতে, বৈঠকে গৌবা জানান, পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজ রাজ্যে ফেরা অব্যাহত থাকবে। তাই পরিযায়ীদের পরীক্ষা ও উপসর্গহীন শ্রমিকদের স্বাস্থ্যের খোঁজ রাখায় গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ঘেঁষাঘেঁষি ট্রেনে, মাঝপথে নামা শ্রমিকদের নিয়ে ভয়

পরিসংখ্যান বলছে, মুম্বই, চেন্নাই, দিল্লি, পুণে, কলকাতা, হাওড়া, হায়দরাবাদ, জয়পুরের মতো ১৩টি শহরে দেশের ৭০% সংক্রমিতের বসবাস। বৈঠকে ওই ১৩টি শহরের সংক্রমিতদের দ্রুত পরীক্ষা ও প্রয়োজনভিত্তিক নিভৃতবাসে জোর দিয়েছেন গৌবা। মহারাষ্ট্র, গুজরাত, দিল্লি, তামিলনাড়ু-সহ ডজন খানেক রাজ্যের পরিস্থিতিও উদ্বেগে রেখেছে কেন্দ্রকে। শ্রমিকদের মাধ্যমে সংক্রমণ রুখতে আজ মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত ও তামিলনাড়ু থেকে আসা ট্রেনের ঢোকা ও বিমান যোগাযোগ বন্ধ করেছে কর্নাটক। বৈঠকে কিছু রাজ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, সেলুন, শপিং মল খোলার আবেদন জানিয়েছে। মেট্রো চালানোর পক্ষে সওয়াল করেছে দিল্লি-সহ কিছু রাজ্য।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement