প্রতীকী ছবি।
রক্তের টান। বাধা মানেনি বয়স কিংবা কোভিড অতিমারির মতো বিশ্বজোড়া সঙ্কটের। ৬৫ বছরের ভাগনি জেদ ধরেছিলেন একশো ছুঁইছুঁই মামাকে দেখবেন। ভাগনি সাধনা পাল থাকেন ত্রিপুরার দক্ষিণ জেলার বিলোনিয়া মহকুমায়। মামা রাসমোহন পালের বাড়ি বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলায়। গত মার্চ মাসে খবর আসে মামা অসুস্থ। সাধনাদেবী ছেলে তাপসকে বলেন নিয়ে যেতে। নয়তো তিনি একাই চলে যাবেন। গেলেনও তাই। ছেলে চেকপোস্ট দিয়ে মাকে পাঠিয়ে দেন।
তাপসবাবুর কথায়, “মায়ের বয়স হয়েছে। মামাও প্রায় একশো ছুঁইছুঁই। দেখা না-হলে যদি অঘটন কিছু ঘটে যায় তো আপশোসের সীমা থাকবে না। এই ভেবেই মাকে পাঠিয়েছিলাম। ও-পারে মায়ের মামার বাড়ির লোকজন এসেছিলেন নিয়ে যেতে।” কিছুদিন পরেই দাদু সুস্থ হয়ে ওঠার খবর পান তাপসবাবুরা। কিন্তু মায়ের ফেরা অনিশ্চিচিত হয়ে পড়ে। করোনার কারণে সীমান্ত পারাপার বন্ধ। এ দিকে মা-ও বাড়িতে ফেরার জন্যে ব্যাকুল। তাপসবাবু প্রশাসনের দারস্থ হন মাকে ফিরিয়ে আনতে। জেলা প্রশাসন থেকে আবেদন যায় দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে। খবর পৌঁছোয় ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে। অবশেষে মেলে বিশেষ অনুমতি। দেশে ফেরেন সাধনাদেবী। তবে এখনও বাড়ি ফেরা হয়নি।
তাপসবাবু জানাচ্ছেন, মা এতই খুশি হয়েছেন যে ১৪ দিন সরকারি কোয়রান্টিনে থাকা নিয়ে ভাবছেনই না। খাবার পাঠাচ্ছি বাড়ি থেকে। মা অধীর অপেক্ষায় আছেন, বাড়িতে ফিরে তার বৃদ্ধ মামাকে দেখে আসার গল্প বলার জন্যে। তৃপ্তির হাসি দিয়ে তাপসবাবু, “ভালবাসার টান।”