Covishield

অক্সফোর্ডের ৫ কোটি টিকার বেশির ভাগটাই প্রথমে পাবে ভারত: সিরামের শীর্ষকর্তা

সিরামের শীর্ষকর্তা আদর পুনাওয়ালার দাবি, চলতি মাসে অথবা জানুয়ারিতে ‘কোভিশিল্ড’-কে সবুজ সঙ্কেত দিতে পারে ভারত সরকার।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২০ ০০:০৪
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার তৈরি ভ্যাকসিন অনুমোদিত হলে তার প্রথম ৫ কোটি ডোজের বেশির ভাগই পাবে ভারত। সোমবার এ কথা জানিয়েছেন এ দেশে ওই ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী সংস্থা সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া-র চিফ এগ্‌জিকিউটিভ অফিসার (সিইও) আদর পুনাওয়ালা

Advertisement

সোমবার সংবাদমাধ্যমের কাছে পুনাওয়ালা বলেন, ‘‘অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকা কোভিশিল্ডের ৫ কোটি ডোজের বেশির ভাগটাই ভারতকে দেওয়া হবে, অন্তত প্রথম মাসের জন্য।’’ তাঁর দাবি, চলতি মাসে অথবা জানুয়ারিতে ‘কোভিশিল্ড’-কে সবুজ সঙ্কেত দিতে পারে ভারত সরকার। যে হেতু অন্যান্য দেশে এটি রফতানিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র অনুমোদন প্রয়োজন, সে হেতু ভারতই ওই ভ্যাকসিনের বেশির ভাগ ডোজ পাবে বলে জানিয়েছেন সিরামের শীর্ষকর্তা।

বিশ্বের ১৭২টি দেশ করোনার ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে মিলিত হয়ে ‘কোভ্যাক্স’ নামে একটি উদ্যোগ নিয়েছে। এই উদ্যোগের অঙ্গ হিসেবে টিকা সরবরাহ করার বিষয়টি আরও সহজেই হবে বলে মনে করা হচ্ছে। সিরামের শীর্ষকর্তা বলেন, ‘‘অন্যান্য কোভ্যাক্স দেশের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে আমাদের। তবে হু-র অনুমোদন এবং লাইসেন্স না পেলে অন্য দেশে ভ্যাকসিন রফতানি করা যাবে না। সুতরাং ভারতই প্রথম কোভিশিল্ড পাবে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: উহানে করোনা সংক্রমণের খবর প্রচারের ‘অপরাধে’ ৪ বছরের জেল

আরও পড়ুন: ইইউ-এর ২৭ দেশে শুরু হল টিকাকরণ

সিরামের শীর্ষকর্তার দাবি, ইতিমধ্যেই ৪ থেকে ৫ কোটি ‘কোভিশিল্ড’ প্রস্তুত করে ফেলেছে তাঁর সংস্থা। পাশাপাশি, আগামী মার্চের মধ্যে এই ভ্যাকসিনের উৎপাদন বাড়িয়ে ১০ কোটি করার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। এবং আগামী জুলাইয়ের মধ্যে আরও ৩০ কোটি ‘কোভিশিল্ড’ উৎপাদনে সক্ষম হবে তাঁর সংস্থা। পুনাওয়ালার কথায়, ‘‘আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ভারতে টিকার অনুমোদন পাওয়া যাবে বলে আশা করছি। তার পর ওই টিকা কত পরিমাণ প্রয়োজন এবং কত দ্রুত তা মানুষের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া যাবে, তা ভারত সরকারের উপরেই নির্ভর করছে।’’

‘কোভিশিল্ডে’র সমস্ত তথ্যই ব্রিটেনে এবং ভারতের সংশ্লিষ্ট অনুমোদনকারী সংস্থার কাছে জমা দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন পুনাওয়ালা। তাঁর কথায়, ‘‘নিয়ন্ত্রকরা টিকার ট্রায়ালের যাবতীয় তথ্য খতিয়ে দেখছেন। এ নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই।’’ তবে করোনার টিকা নিয়ে সতর্কবার্তাও দিয়েছেন পুনাওয়ালা। তাঁর মতে, ‘‘আগামী বছরের প্রথম ছ’মাস বিশ্ব জুড়েই কোভিড ভ্যাকসিন কম পড়বে। যদিও এ নিয়ে কিছু করার নেই। তবে ২০২১-এর অগস্ট-সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই পরিস্থিতিতে বদল ঘটতে পারে। কারণ সে সময়ের মধ্যে গোটা বিশ্বেই অসংখ্য ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক তা সরবরাহ করতে শুরু করে দেবে।’’

‘কোভিশিল্ড’ ছাড়াও ভারত বায়োটেক এবং ফাইজারের ভ্যাকসিন এই মুহূর্তে দেশের বাজারে আসার দৌড়ে রয়েছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকার সিইও-র পাস্কাল সরিওটের দাবি, মানবদেহে করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে ফাইজার এবং মর্ডানার মতো কার্যকরী ‘কোভিশিল্ড’। এটি ৯৫ শতাংশ কার্যকরী বলেও দাবি করেছেন সরিওট। যদিও এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও তথ্যপ্রমাণ দিতে পারেনি অ্যাস্ট্রাজেনেকা। উল্টে, গত মাসে এই ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্বের ট্রায়ালের যে অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে, ‘কোভিশিল্ড’-এর কার্যকারিতা ৭০ শতাংশ। আবার, একটি অর্ধেক ডোজের পর আর একটি পুরোমাত্রার ডোজে এর কার্যকারিতা বেড়ে হয়েছে ৯০ শতাংশ। অন্য দিকে, ফাইজারের ক্ষেত্রে তা ৯৫ শতাংশ এবং মডার্নার ডোজের ক্ষেত্রে তা ৯৪.৫ শতাশ। ভারত সরকার আগেই জানিয়েছিল, এ দেশে ‘কোভিশিল্ড’-এর প্রতি ডোজের জন্য আড়াইশো টাকা খরচ করতে হবে। ফলে উপযুক্ত মজুত পরিকাঠামো এবং সরবরাহ ব্যবস্থা থাকলে অন্য ভ্যাকসিনের তুলনায় কমদামি ‘কোভিশিল্ড’ ভারতের বাজারে প্রতিযোগিতার দৌ়ড়ে যে কয়েক যোজন এগিয়ে, তা মনে করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement