দেশের করোনা পরিসংখ্যান। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
দেশে মোট কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ছাড়িয়েছে। কিন্তু দৈনিক সংক্রমণ গত এক সপ্তাহ ধরেই ২৫ হাজারের আশপাশে। পাশাপাশি দৈনিক মৃত্যু ৩৫০-র নীচে যাওয়াও যথেষ্ট স্বস্তিদায়ক। দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যাও রোজ কমছে। কমতে কমতে তা ৩ লক্ষের একটু বেশি। চুম্বকে এটাই দেশের করোনা-চিত্র।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ হাজার ৩৩৭ জন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন ১ কোটি ৫৫ হাজার ৫৬০ জন। এই সংখ্যক আক্রান্ত নিয়ে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থান ভারতের। প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকার মোট আক্রান্ত দেড় কোটি পেরিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। প্রতি দিন প্রায় ২ লক্ষ মানুষ নতুন করে সংক্রমিত হচ্ছেন সেখানে। এ ভাবে বাড়তে আমেরিকারতে মোট আক্রান্ত ১ কোটি ৭৮ লক্ষ ছাড়িয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে এখনও পর্যন্ত ৭২ লক্ষ ৩৮ হাজার জন কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )
করোনাভাইরাস এখনও অবধি ভারতে ১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৮১০ জনের প্রাণ কেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মারা গিয়েছেন ৩৩৩ জন। দেশের মোট মৃত্যুর প্রায় এক তৃতীয়াংশই মহারাষ্ট্রে। সেখানে প্রাণ গিয়েছে ৪৮ হাজার ৭৪৬ জনের। দেশের মৃত্যু তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা কর্নাটকে তা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে তা ১২ হাজারের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে দিল্লি (১০,২৭৭), পশ্চিমবঙ্গ (৯,৩৬০), উত্তরপ্রদেশ (৮,১৯৬), অন্ধ্রপ্রদেশ (৭,০৭৬)। পঞ্জাব, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ় এবং রাজস্থানেও মোট মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আক্রান্ত এবং মৃত্যু বৃদ্ধির মধ্যেই স্বস্তিদায়ক দেশের সুস্থতার হার। ভারতে কোভিড আক্রান্তদের সুস্থ হওয়া শুরু থেকেই আমেরিকা, ইউরোপের বিভিন্ন দেশের থেকে বেশি। এখনও পর্যন্ত দেশে মোট ৯৬ লক্ষ ৬ হাজার ১১১ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। যা গোটা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশের মোট আক্রান্তের ৯৫.৫৩ শতাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সুস্থ হয়েছেন ২৫ হাজার ৭০৯ জন। নতুন আক্রান্তের থেকে সুস্থ বেশি হওয়ায় অক্টোবরের শুরু থেকেই দেশে কমছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় তা কমেছে ১ হাজার ৭০৫। এই মুহূর্তে দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৩ লক্ষ ৩ হাজার ৬৩৯ জন।
প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের করোনা পরীক্ষা হচ্ছে তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। গত ২৪ ঘণ্টায় তা ২.৭ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ৯ লক্ষ ১৩৪ জনের। যা গত সপ্তাহের দিনগুলির তুলনায় লক্ষাধিক কম।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )
দেশের ১ কোটি আক্রান্তের মধ্য প্রায় ১৯ লক্ষ মহারাষ্ট্র থেকে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা কর্নাটকে তা ৯ লক্ষ পেরিয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা অন্ধ্রপ্রদেশে ৮ লক্ষ ৭৮ হাজার। দৈনিক সংক্রমণ সেখানে ৫০০-র নীচে নেমেছে। তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত ৮ লক্ষ ৬ হাজার, কেরলে ৭ লক্ষ ৫ হাজার, দিল্লিতে ৬ লক্ষ ১৭ হাজার, উত্তরপ্রদেশে ৫ লক্ষ ৭৪ হাজার এবং পশ্চিমবঙ্গে ৫ লক্ষ ৩৬ হাজার। বাকি রাজ্যেগুলিতে মোট আক্রান্ত ৪ লক্ষের নীচে রয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৯৭৮ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ৫ লক্ষ ৩৬ হাজার ৮২৮ জন। যদিও তার মধ্যে ৫ লক্ষ ৯ হাজার ৬৯৭ জন রোগী সুস্থও হয়েছেন। রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৪০ জনের। এ নিয়ে রাজ্যে মোট মৃত্যু হল ৯ হাজার ৩৬০ জনের।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)